ঝিকিমিকি লেগুন, সাদা বালির সৈকত এবং প্রচুর প্রবাল— লক্ষদ্বীপ এবং মলদ্বীপের মধ্যে মিল প্রচুর। কিন্তু তবুও বিলাসবহুল ভ্রমণের উদ্দেশে ভারতীয়দের বেশি ভিড় জমে মলদ্বীপে। ২০২১ এবং ২০২২ সালে প্রায় আড়াই-তিন লক্ষ ভারতীয় মলদ্বীপ ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেই রীতিই পাল্টাতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। মলদ্বীপের বিকল্প হয়ে দাঁড়াতে চলেছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপ।
ভারতের ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে অবমাননাকর মন্তব্য করায় বিগত কয়েক দিনে যে ঝড় বয়ে গিয়েছে, তার জেরেই রোষের মুখে পড়েছে মলদ্বীপ সরকার। এর পরেই সমাজমাধ্যম জুড়ে ‘বয়কট মলদ্বীপ’-এর হিড়িক উঠেছে। মলদ্বীপকে বয়কট করার ডাক দিয়েছেন বলিউড ও ক্রিকেট মহলের নক্ষত্রেরাও। পাশাপাশি তাঁরা উৎসাহ জোগাচ্ছেন লক্ষদ্বীপ ঘুরে দেখার।
সমাজমাধ্যমে ‘বয়কট মলদ্বীপ’-এর ঠেলা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারত মহাসাগরের উপরে অবস্থিত ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র। আগে থেকেই মলদ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার বিমান-হোটেলে টিকিট বুক করে রাখার পরেও তা বাতিল করে চলেছেন একের পর এক ভারতীয় পর্যটক। ক্রমে সেই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যাঁরা বুকিং বাতিল করছেন, তাঁদের দাবি, টাকা যাচ্ছে যাক। আগে দেশ। দেশের অপমান কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যাবে না বলেও কেউ কেউ সমাজমাধ্যমে মতপ্রকাশ করেছেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী (বর্তমানে নিলম্বিত) ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার পর থেকে কমপক্ষে ১৪ হাজার হোটেল এবং প্রায় চার হাজার বিমানের টিকিট বাতিল করেছেন ভারতীয়েরা। যা, মলদ্বীপের পর্যটন এবং অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
ভারতের এক জনপ্রিয় ভ্রমণ সংস্থাও মলদ্বীপ যাওয়ার সমস্ত বিমানের টিকিট বুকিং বাতিল করে দিয়েছে ইতিমধ্যেই। ওই সংস্থার মালিক জানিয়েছেন, দেশের প্রতি আনুগত্য এবং সহানুভূতি থেকে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রবিবার রাতে ওই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নিশান্ত পিট্টি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘দেশের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা মলদ্বীপের সমস্ত বিমানের টিকিটের বুকিং বাতিল করে দিয়েছি।’’ অর্থাৎ, যাঁরা ওই সংস্থার মাধ্যমে মলদ্বীপে যাওয়ার বিমানের টিকিট কেটেছিলেন, তাঁদের টিকিট বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
দেশের পর্যটন ব্যবসাকে বিপদের মুখে পড়তে দেখে তড়িঘড়ি ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করতে নেমে পড়েছে মলদ্বীপ সরকার। ভারতীয়রা মলদ্বীপে ঢুঁ মারা বন্ধ করে দিলে দেশের অর্থনীতি বিপদের মুখে পড়তে পারে ভেবে ভুল শোধরানোর চেষ্টা শুরু করেছে মলদ্বীপের সরকার। কারণ মলদ্বীপের অর্থনীতি অনেকটাই পর্যটন নির্ভর। সারা বছর ভারতীয় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারত মহাসাগরের উপরে অবস্থিত ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রে।
মুইজ়ু ‘চিনপন্থী’ হিসাবে পরিচিত। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ সোলি ভারতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার যে নীতি নিয়ে চলতেন, সেই ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোটের ময়দানে নেমেছিলেন তিনি। জিতেও যান। তার পর থেকেই তিনি ভারতকে চাপে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। প্রথমে মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাদের সরিয়ে দেওয়ার সরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ ভারতের কাছে করেন মইজ়ু। পরে ভারতের সঙ্গে একটি জলচুক্তি বাতিলের পথেও হাঁটেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy