How did kingfisher inspire the designs of Japanese bullet trains dgtl
Japanese bullet trains
বুলেট ট্রেনের জটিল সমস্যার সমাধান করল মাছরাঙা, কী ভাবে?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নতুন জাপানের প্রতীক হয়ে ওঠে বুলেট ট্রেন। দ্রুতগতিতে মাউন্ট ফুজিকে ছাড়িয়ে এগিয়ে চলেছে বুলেট ট্রেন, এই দৃশ্য নতুন জাপানের প্রতীক।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২২ ১৪:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
১৯৬৪ সালের অক্টোবর মাসে পথ চলা শুরু জাপানের ‘বুলেট ট্রেন’-এর।
ফাইল ছবি।
০২২১
১৯৬৪-র অলিম্পিক্স শুরু হওয়ার ঠিক দশ দিন আগে বুলেট ট্রেনের উদ্বোধন করে জাপান।
ফাইল ছবি।
০৩২১
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নতুন জাপানের প্রতীক হয়ে ওঠে বুলেট ট্রেন। দ্রুতগতিতে মাউন্ট ফুজিকে ছাড়িয়ে এগিয়ে চলেছে বুলেট ট্রেন, এই দৃশ্য নতুন জাপানের প্রতীক।
ফাইল ছবি।
০৪২১
দিন যত এগিয়েছে, ততই গতি বেড়েছে বুলেট ট্রেনের। কিন্তু তার সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে নতুন এক সমস্যা। তা হল ‘সনিক বুম’ বা শব্দাঘাত।
ফাইল ছবি।
০৫২১
কী এই ‘সনিক বুম’? শব্দের চেয়ে দ্রুত গতিতে যখন কোনও বস্তু এগিয়ে চলে তখন সেই বস্তুর গতিবেগের ফলে উদ্ভূত শব্দ তরঙ্গের ফলে তৈরি বিস্ফোরক শব্দকেই সনিক বুম বলে।
ফাইল ছবি।
০৬২১
দ্রুত ছুটতে সক্ষম হলেও বুলেট ট্রেনের গতি কখনওই শব্দের চেয়ে বেশি ছিল না। কিন্তু এই ট্রেনের গতিবেগের ফলে তৈরি হচ্ছিল ‘সনিক বুম’। কী ভাবে?
ফাইল ছবি।
০৭২১
টোকাইডো শিনকাসেন জাপানের অন্যতম ব্যস্ত রেললাইন। এই স্টেশন থেকে ছাড়া সমস্ত বুলেট ট্রেনকেই বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সুড়ঙ্গ থেকে ট্রেনগুলি বেরোনোর সময়ই বিকট শব্দ তৈরি হত। যা প্রায় চারশো মিটার দূর থেকেও শোনা যেত। সুড়ঙ্গগুলির আশপাশে বসবাসকারী বাসিন্দারও অভিযোগ জানাতে শুরু করেন এই বিষয়ে।
ফাইল ছবি।
০৮২১
ট্রেনগুলি যখন সুড়ঙ্গে প্রবেশ করত তখন সুড়ঙ্গের ভিতরে উপস্থিত বায়ুর ওপর সেগুলি চাপ তৈরি করত। ট্রেনের গতিবেগ ১ কিলোমিটার বাড়লে সুড়ঙ্গের ভিতর বায়ুর চাপ বাড়ত ৩ গুণ। ট্রেনের সামনে ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকত বায়ুচাপ।
ফাইল ছবি।
০৯২১
ট্রেনগুলি যখন সুড়ঙ্গ ত্যাগ করত তখন ট্রেনের সামনে থাকা বায়ুচাপ বাইরে বেরোনোর সুযোগ পেয়ে বিস্ফোরণের মতো বিকট শব্দ তৈরি করত। ট্রেনগুলি তৈরির সময় বিজ্ঞানীরা এই সমস্যার দিকটি ধর্তব্যের মধ্যে আনেননি।
ফাইল ছবি।
১০২১
ওভারহেড তারের সঙ্গে লাগানো প্যান্টোগ্রাফগুলি থেকে শব্দ হত সবচেয়ে বেশি। ইঞ্জিনিয়াররা প্রথমে উদ্যত হলেন প্যান্টোগ্রাফের ডিজাইন বদলাতে। অবশেষে ১৯৯৪ সালে তাঁরা পেঁচার ডানার আকৃতিতে বানালেন নতুন প্যান্টোগ্রাফ।
ফাইল ছবি।
১১২১
এক দল ইঞ্জিনিয়ার সেই সময় বুলেট ট্রেনকে আরও গতিশীল এবং আরও কার্যকর করার কাজে লেগে পড়েন। তাঁদের সামনে নতুন সমস্যা সমাধানের চ্যালেঞ্জ চলে এল। শব্দাঘাত কমানোর চ্যালেঞ্জ।
ফাইল ছবি।
১২২১
দলের এক জওয়ান ইঞ্জিনিয়র সেই সময় বুলেট ট্রেনের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বিভাগের আধিকারিক এইজা নাকাতসুকে জানান, তাঁর মনে হয়েছে ট্রেনগুলি যখন কোনও সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে তখন মনে হয় তা আকারে ছোট হয়ে গিয়েছে। নাকাতসু সেই শুনে মনে করেন যে, সুড়ঙ্গের বায়ুচাপের পরিবর্তন এর প্রধান কারণ হতে পারে।
ফাইল ছবি।
১৩২১
পক্ষীবিশারদ নাকাতসুর মনে প্রশ্ন জাগে, পার্থিব এমন কোনও প্রাণী আছে যাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য এই রকম বায়ুচাপের পরিবর্তন সামলাতে হয়? তখনই তাঁর মনে পড়ে মাছড়াঙা পাখির কথা।
ফাইল ছবি।
১৪২১
মাছরাঙা তার শিকার ধরতে নিম্নচাপ অঞ্চল (হাওয়ায় ওড়ার সময়) থেকে উচ্চচাপ অঞ্চলে (জলে ঝাঁপ দেওয়ার সময়) ঘণ্টায় প্রায় পঁচিশ মাইল বেগে ঝাঁপ দিতে পারে।
ফাইল ছবি।
১৫২১
ঝাঁপ দেওয়ার সময় জলে কোনও তরঙ্গেরও সৃষ্টি হয় না। এর কারণ মাছরাঙার সুদীর্ঘ এবং ছুঁচালো চঞ্চু।
ফাইল ছবি।
১৬২১
এই কথা মাথায় আসতেই ইঞ্জিনিয়ররা নানা রকম মডেল পরীক্ষা করতে শুরু করেন। অবশেষে যে মডেলটি চূড়ান্ত পরীক্ষায় পাশ করে, সেটির অগ্রভাগ প্রায় মাছরাঙার চঞ্চুর মতোই দেখতে।
ফাইল ছবি।
১৭২১
সেই অনুযায়ী তারা বুলেট ট্রেনের নতুন ডিজাইন প্রকাশ্যে নিয়ে এলেন। নাম ‘শিনকানসেন-৫০০’। এই ট্রেনের যাত্রাপথে সুড়ঙ্গে মধ্যে বিস্ফোরকের শব্দের মাত্রা হ্রাস পেল। নির্ধারিত ৭০ ডেসিবলের মধ্যেই থাকল শব্দের মাত্রা।
ফাইল ছবি।
১৮২১
শুধু শব্দই নয়। নতুন ডিজাইনে গতিবেগ বৃদ্ধি পেল ট্রেনের। বিদ্যুৎ ব্যবহার কমল অনেকাংশে। পুরনো ট্রেনের চেয়ে নতুন ট্রেনে বায়ুচাপ হ্রাস পেল প্রায় ৩০ শতাংশ।
ফাইল ছবি।
১৯২১
১৯৯৭ সালের ২২ মার্চ সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য চালু করা হয় ‘শিনকানসেন-৫০০’ সিরিজের ট্রেন। ট্রেনটি সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে ছুটেছিল। যা সেই সময়ের বিশ্বরেকর্ড। এর ফলে শিন-ওসাকা থেকে হাকাতা পর্যন্ত যাত্রাপথের সময় প্রায় পনেরো মিনিট কমে গিয়েছিল।
ফাইল ছবি।
২০২১
নাকাতসুর এই প্রায় নির্ভুল পদক্ষেপটিকে বলা হয় ‘বায়োমিমিক্রি’। এর অর্থ, পার্থিব কোনও জীবের আকৃতি দেখে কোনও কাঠামোর নকশায় বদল এনে প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধান করা।
ফাইল ছবি।
২১২১
এই মাছরাঙার চঞ্চুর আদলেই এখনও তৈরি হয়ে আসছে টোকাইডো শিনকানসেন ট্রেন। পেঁচার ডানা এবং মাছরাঙার চঞ্চুর আকৃতি চিরকালের জন্য বদলে দিয়েছে বুলেট ট্রেনের চেহারা।