এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় স্তম্ভিত নেপাল-সহ সারা বিশ্ব। নেপালবাসীদের মনে ভেসে আসছে পুরনো স্মৃতি। ইয়েতি এয়ারলাইনস সংস্থার বিমান দুর্ঘটনা সেই সমস্ত ক্ষতে ভরা স্মৃতিই যেন তাজা করে দিয়েছে। নেপালের দুর্গম এলাকা, খারাপ আবহাওয়া, নতুন বিমানের জন্য বিনিয়োগের অভাব এবং কার্যকরী বিমানগুলির পরিকাঠামোর দিকে ঠিকমতো নজরের অভাবেই নেপালে বিমান দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। বিমান নিরাপত্তা বিভাগের তরফ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিগত ৩ দশকে ২৭টি বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছে নেপাল।
নেপালের বিমান যাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)-এর এয়ারস্পেসে নামতে না পারে, সেই কারণে ২০১৩ সালে ইইউ নেপালের সমস্ত বিমানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে নেপাল সরকারের তরফে ইইউ-কে এই নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হলেও ইইউ সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে নেপালের বিমানগুলিকে কালো তালিকাতেই রেখেছে।
কাঠমান্ডু থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে একটি পাহাড়ে ধাক্কা লাগে এয়ারবাস ৩১০-এর। যাত্রী-সহ বিমানকর্মীদের সকলে এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন। পরে তদন্ত করে জানা যায় যে, বিমানের ডানায় কোনও সমস্যা দেখা দিয়েছিল। বিমানের পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে যোগাযোগ বার বার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হয় ১১৩ জনের।
২০১৫ সালের মে মাস। নেপাল সেই সময় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল। চারিকোট এলাকায় তখন ‘সহযোগী হাট’ নামের অপারেশন চালানো হয়। ইউএইচ-১ওয়াই হুয়ে হেলিকপ্টার চারিকোট এলাকায় ত্রাণ পৌঁছতে গিয়েছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারান হেলিকপ্টারে থাকা ৮ জন ব্যক্তি। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, ৮ জনের মধ্যে ২ জন নেপালি সৈন্য ছিলেন।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। খারাপ আবহাওয়ার কারণে উড়ানে সমস্যা দেখা দেবে বলে আবার নেপালে ফিরছিল একটি এয়ার ডাইন্যাস্টির হেলিকপ্টার। কিন্তু নেপালে ফেরার পথে একটি পাহাড়ে ধাক্কা মারে হেলিকপ্টারটি। এই দুর্ঘটনায় ৭ জন মারা যান। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, ওই হেলিকপ্টারে নেপালের তৎকালীন পর্যটন মন্ত্রী রবীন্দ্র অধিকারীও ছিলেন। দুর্ঘটনার ফলে তিনি প্রাণ হারান।
কিন্তু নেপালের মুসতাং জেলায় পৌঁছতেই ঘটল দুর্ঘটনা। এই এলাকা পাহাড়ে ঢাকা। খারাপ আবহাওয়া থাকার কারণে পাহাড়ের গায়ে ধাক্কা লেগে বিমানটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। দুর্ঘটনার ফলে ২২ জন মারা যান। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, ২২ জনের মধ্যে ৪ জন ভারতীয় ছিলেন। ঠাণের বাসিন্দা ছিলেন তাঁরা। দুর্ঘটনার তিন দিন পর দুর্ঘটনাস্থল থেকে সকলের দেহ উদ্ধার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy