Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Hacker

২০০ ব্যাঙ্ক লুট করে কোটি কোটি টাকা দান! ১১২ কোটি টাকা জরিমানা হয় ‘গরিবের রবিনহুডের’

এ-ও এক ‘মানি হাইস্ট’। পর্দার নয়, বাস্তবের। ইউরোপ, আমেরিকার ব্যাঙ্কগুলিকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়েছিলেন আলজিরিয়ার সেই হ্যাকার— হামজা বেন্দেলাজ। সেখান থেকে লুট করেছিলেন কোটি কোটি টাকা।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:২৯
Share: Save:
০১ ১৮
‘মানি হাইস্ট’-এর প্রফেসরকে ১০ গোল দিতে পারেন তিনি। টাকা হাতাতে ব্যাঙ্কে যেতেন না। ঘরে বসে হাতিয়ে নিতেন ইউরোপ, আমেরিকার বহু ব্যাঙ্কের কোটি কোটি টাকা। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে। নাম হামজা বেন্দেলাজ। যাঁকে দুনিয়া চেনে ‘স্মাইলিং হ্যাকার’ নামে।

‘মানি হাইস্ট’-এর প্রফেসরকে ১০ গোল দিতে পারেন তিনি। টাকা হাতাতে ব্যাঙ্কে যেতেন না। ঘরে বসে হাতিয়ে নিতেন ইউরোপ, আমেরিকার বহু ব্যাঙ্কের কোটি কোটি টাকা। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে। নাম হামজা বেন্দেলাজ। যাঁকে দুনিয়া চেনে ‘স্মাইলিং হ্যাকার’ নামে।

০২ ১৮
হামজার জন্ম ১৯৮৮ বা ১৯৮৯ সালে। আলজিরিয়ার তিজি ওজুতে। ‘বিএক্স১’ ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন তিনি।

হামজার জন্ম ১৯৮৮ বা ১৯৮৯ সালে। আলজিরিয়ার তিজি ওজুতে। ‘বিএক্স১’ ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন তিনি।

০৩ ১৮
কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ছিলেন হামজা। শোনা যায়, পড়াশোনায় ছিলেন তুখোড়।

কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ছিলেন হামজা। শোনা যায়, পড়াশোনায় ছিলেন তুখোড়।

০৪ ১৮
পাঁচটি ভাষা গড়গড়িয়ে বলতে পারতেন হামজা। ছিলেন প্রযুক্তিতে দক্ষ। সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দুনিয়ার যে কোনও ব্যাঙ্ক থেকে টাকা লোপাট করতে সমর্থ ছিলেন।

পাঁচটি ভাষা গড়গড়িয়ে বলতে পারতেন হামজা। ছিলেন প্রযুক্তিতে দক্ষ। সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দুনিয়ার যে কোনও ব্যাঙ্ক থেকে টাকা লোপাট করতে সমর্থ ছিলেন।

০৫ ১৮
অভিযোগ, ইউরোপ, আমেরিকার ২০০টি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা লুট করেছিলেন হামজা। বেশির ভাগ ব্যাঙ্কই ছিল আমেরিকার। ব্যাঙ্কগুলির কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকিয়ে টাকা বার করে নিতেন তিনি। মনে করা হয়, মোট ১৪ লক্ষ কম্পিউটার হ্যাক করেছিলেন হামজা।

অভিযোগ, ইউরোপ, আমেরিকার ২০০টি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা লুট করেছিলেন হামজা। বেশির ভাগ ব্যাঙ্কই ছিল আমেরিকার। ব্যাঙ্কগুলির কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকিয়ে টাকা বার করে নিতেন তিনি। মনে করা হয়, মোট ১৪ লক্ষ কম্পিউটার হ্যাক করেছিলেন হামজা।

০৬ ১৮
ইন্টারপোল, আমেরিকার ফেডেরাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হ্যাকারদের তালিকায় নাম ছিল। সেই তালিকায় প্রথম ১০ জনের মধ্যে ঠাঁই পেয়েছিলেন হামজা।

ইন্টারপোল, আমেরিকার ফেডেরাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হ্যাকারদের তালিকায় নাম ছিল। সেই তালিকায় প্রথম ১০ জনের মধ্যে ঠাঁই পেয়েছিলেন হামজা।

০৭ ১৮
যদিও বহু মানুষের কাছে হামজা ছিলেন ঈশ্বর। ‘গরিবের রবিনহুড’ বলা হত তাঁকে। শোনা যায়, ব্যাঙ্ক থেকে যে টাকা লুট করতেন হামজা, তা বিভিন্ন প্যালেস্তিনীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় দান করতেন। যদিও তাঁর বিচারের নথিতে সে রকম দানধ্যানের উল্লেখ নেই। টাকা হাতিয়ে হামজা কী করতেন, সেখানে বলা হয়নি।

যদিও বহু মানুষের কাছে হামজা ছিলেন ঈশ্বর। ‘গরিবের রবিনহুড’ বলা হত তাঁকে। শোনা যায়, ব্যাঙ্ক থেকে যে টাকা লুট করতেন হামজা, তা বিভিন্ন প্যালেস্তিনীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় দান করতেন। যদিও তাঁর বিচারের নথিতে সে রকম দানধ্যানের উল্লেখ নেই। টাকা হাতিয়ে হামজা কী করতেন, সেখানে বলা হয়নি।

০৮ ১৮
কী ভাবে ব্যাঙ্কের কম্পিউটার হ্যাক করে টাকা বার করতেন হামজা? একটি ম্যালওয়্যার তৈরি করেছিলেন তিনি। নাম ‘স্পাইআই বটনেট’। এই ম্যালওয়্যার তৈরিতে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন রাশিয়ার আলেকজান্দ্র আন্দ্রেইভিচ নামে আর এক হ্যাকার।

কী ভাবে ব্যাঙ্কের কম্পিউটার হ্যাক করে টাকা বার করতেন হামজা? একটি ম্যালওয়্যার তৈরি করেছিলেন তিনি। নাম ‘স্পাইআই বটনেট’। এই ম্যালওয়্যার তৈরিতে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন রাশিয়ার আলেকজান্দ্র আন্দ্রেইভিচ নামে আর এক হ্যাকার।

০৯ ১৮
২০০৯ থেকে ২০১১ সালে হ্যাকারদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিল এই ভাইরাস। এর মাধ্যমে অনলাইনে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট লগ ইনের তথ্য হাতিয়ে নেওয়া যেত। গ্রাহকদের পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য... হাতিয়ে নেওয়া যেত সব কিছু।

২০০৯ থেকে ২০১১ সালে হ্যাকারদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিল এই ভাইরাস। এর মাধ্যমে অনলাইনে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট লগ ইনের তথ্য হাতিয়ে নেওয়া যেত। গ্রাহকদের পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য... হাতিয়ে নেওয়া যেত সব কিছু।

১০ ১৮
এই ভাইরাসের মাধ্যমে শুধু নিজে লুট করেননি, অন্য জালিয়াতদের কাছেও বিক্রি করেছিলেন হামজা। আমেরিকার আদালতের নথি বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে এই ভাইরাস তৈরি করে তা অন্য হ্যাকারদের কাছে বিক্রি করেছিলেন হামজা। যাঁদের কাছে বিক্রি করেছিলেন তাঁরা সেটি ব্যবহার করে অন্য ব্যাঙ্ক থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন।

এই ভাইরাসের মাধ্যমে শুধু নিজে লুট করেননি, অন্য জালিয়াতদের কাছেও বিক্রি করেছিলেন হামজা। আমেরিকার আদালতের নথি বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে এই ভাইরাস তৈরি করে তা অন্য হ্যাকারদের কাছে বিক্রি করেছিলেন হামজা। যাঁদের কাছে বিক্রি করেছিলেন তাঁরা সেটি ব্যবহার করে অন্য ব্যাঙ্ক থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন।

১১ ১৮
এর পরেই হামজাকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে এফবিআই। টানা দু’বছর তাঁর খোঁজ চলেছিল। শেষে এক গুপ্তচরকে সেই ‘স্পাইআই’ বিক্রি করে ফেঁসে গিয়েছিলেন তিনি। দাম নিয়েছিলেন সাড়ে আট হাজার ডলার (ভারতীয় মু্দ্রায় ছ’লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা) নজরে পড়ে গিয়েছিলেন আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থার।

এর পরেই হামজাকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে এফবিআই। টানা দু’বছর তাঁর খোঁজ চলেছিল। শেষে এক গুপ্তচরকে সেই ‘স্পাইআই’ বিক্রি করে ফেঁসে গিয়েছিলেন তিনি। দাম নিয়েছিলেন সাড়ে আট হাজার ডলার (ভারতীয় মু্দ্রায় ছ’লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা) নজরে পড়ে গিয়েছিলেন আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থার।

১২ ১৮
২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি হামজা মালয়েশিয়া থেকে মিশর যাচ্ছিলেন স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে। ব্যাঙ্কক বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ধরে তাইল্যান্ডের পুলিশ।

২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি হামজা মালয়েশিয়া থেকে মিশর যাচ্ছিলেন স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে। ব্যাঙ্কক বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ধরে তাইল্যান্ডের পুলিশ।

১৩ ১৮
শোনা যায়, গ্রেফতারের পরেও শান্ত ছিলেন হামজা। হাসতে হাসতে হাতকড়া পরেছিলেন। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দুনিয়ায়। তার পরেই দুনিয়ার কাছে তিনি পরিচিত হয়েছিলেন ‘স্মাইলিং হ্যাকার’ নামে। তিনি ধরা পড়লেও তাঁর স্ত্রী আর মেয়ে বিমান ধরে চলে গিয়েছিলেন মিশর।

শোনা যায়, গ্রেফতারের পরেও শান্ত ছিলেন হামজা। হাসতে হাসতে হাতকড়া পরেছিলেন। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দুনিয়ায়। তার পরেই দুনিয়ার কাছে তিনি পরিচিত হয়েছিলেন ‘স্মাইলিং হ্যাকার’ নামে। তিনি ধরা পড়লেও তাঁর স্ত্রী আর মেয়ে বিমান ধরে চলে গিয়েছিলেন মিশর।

১৪ ১৮
২০১৩ সালের মে মাসে তাইল্যান্ড থেকে হামজাকে প্রত্যর্পণ করে আনা হয়েছিল আমেরিকায়। আটলান্টায় তাঁর বিচার শুরু হয়। ২০১৫ সালের ২৫ জুন তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।

২০১৩ সালের মে মাসে তাইল্যান্ড থেকে হামজাকে প্রত্যর্পণ করে আনা হয়েছিল আমেরিকায়। আটলান্টায় তাঁর বিচার শুরু হয়। ২০১৫ সালের ২৫ জুন তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।

১৫ ১৮
৩০ বছর জেল এবং এক কোটি ৪০ লক্ষ ডলার জরিমানা করা হয় তাঁর। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১১১ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা।

৩০ বছর জেল এবং এক কোটি ৪০ লক্ষ ডলার জরিমানা করা হয় তাঁর। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১১১ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা।

১৬ ১৮
যদিও রটে যায়, হামজাকে ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছে আমেরিকার আদালত। নেটমাধ্যমে সেই নিয়ে হইচই পড়ে যায়। অনেকে লেখেন, ‘২১৭টি ব্যাঙ্ক হ্যাক করে ২৮ কোটি ডলার (২২৩৯ কোটি ২০ লক্ষ ২০ হাজার) প্যালেস্তাইনে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর সাজা ফাঁসি?’

যদিও রটে যায়, হামজাকে ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছে আমেরিকার আদালত। নেটমাধ্যমে সেই নিয়ে হইচই পড়ে যায়। অনেকে লেখেন, ‘২১৭টি ব্যাঙ্ক হ্যাক করে ২৮ কোটি ডলার (২২৩৯ কোটি ২০ লক্ষ ২০ হাজার) প্যালেস্তাইনে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর সাজা ফাঁসি?’

১৭ ১৮
তার পরেই আলজিরিয়ায় আমেরিকার রাষ্ট্রদূত জোয়ান এ পোলাশচিক টুইটারে লেখেন, ‘কম্পিউটার সংক্রান্ত অপরাধ গুরুতর অপরাধ নয়। তার সাজা মৃত্যুদণ্ড নয়।’

তার পরেই আলজিরিয়ায় আমেরিকার রাষ্ট্রদূত জোয়ান এ পোলাশচিক টুইটারে লেখেন, ‘কম্পিউটার সংক্রান্ত অপরাধ গুরুতর অপরাধ নয়। তার সাজা মৃত্যুদণ্ড নয়।’

১৮ ১৮
মৃত্যুদণ্ড হয়নি হামজার। এখনও আমেরিকার জেলেই রয়েছেন তিনি।

মৃত্যুদণ্ড হয়নি হামজার। এখনও আমেরিকার জেলেই রয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy