Gurpatwant Singh Pannun Murder plot is linked to CC-1 who is allegedly an Indian officer in the US chargesheet dgtl
Gurpatwant Singh Pannun Murder Plot Case
রহস্যময় ‘সিসি-১’ কে? ভারতের কোন উচ্চপদস্থ কর্তাকে পন্নুন মামলায় জড়িয়ে দিল্লিকে চাপে রাখছে আমেরিকা?
খলিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুনকে আমেরিকায় খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তাতে ভারতের যোগ থাকতে পারে বলেও অভিযোগ উঠেছে। আমেরিকায় তদন্ত চলছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ ১১:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুন। আমেরিকা নিবাসী খলিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা। তাঁকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি আলোড়ন তৈরি হয়েছে ভারত এবং আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। অভিযোগ, আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে পন্নুনকে খুন করার চক্রান্ত করা হয়েছিল।
০২১৮
পন্নুন খুন হননি। তবে এই খুনের চক্রান্তের শিকড় খুঁজতে বদ্ধপরিকর আমেরিকা। গোটা পরিকল্পনার সঙ্গে ভারত জড়িয়ে আছে বলে তাদের দাবি। ইতিমধ্যে সে দেশের গোয়েন্দারা তদন্তও শুরু করে দিয়েছেন ভারত-যোগ প্রসঙ্গে।
০৩১৮
পন্নুনের ঘটনা কানাডার হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অনেকটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজ্জরকে ২০২৩ সালে খুন করা হয় কানাডার মাটিতে। তিনিও পন্নুনের মতোই খলিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা।
০৪১৮
নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই খুনের নেপথ্যে ভারতের গুপ্তচর সংস্থার হাত রয়েছে বলে প্রকাশ্যে দাবি করেছিলেন। যা উড়িয়ে দেয় নয়াদিল্লি। তারা জানায়, ট্রুডো রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্য ভারতের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ করছেন।
০৫১৮
পন্নুন এবং নিজ্জর— উভয়েই ভারতে নিষিদ্ধ। তাঁদের সংগঠনও নিষিদ্ধ। পন্নুন খুনের চক্রান্তের মামলায় নিখিল গুপ্ত নামের এক ভারতীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এখন আমেরিকার হাতে। যদিও তাঁকে আইনি প্রক্রিয়ায় সাহায্য করছে ভারত।
০৬১৮
চেক প্রজাতন্ত্রের জেলে বন্দি ছিলেন নিখিল। আমেরিকার অনুরোধে চেক প্রশাসন তাঁকে তুলে দিয়েছে ওয়াশিংটনের হাতে। সেখানেই আপাতত বন্দি নিখিল। অভিযোগ, তিনি পন্নুন হত্যার চেষ্টার চক্রান্তের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
০৭১৮
পন্নুন-চক্রান্তের শিকড় খুঁজতে গিয়ে আমেরিকার তদন্তকারীরা যে চার্জশিট প্রকাশ করেছেন, তাতে বার বার উঠে এসেছে রহস্যময় এক নাম— সিসি-১। তাঁকে ভারত সরকারের কোনও এক উচ্চপদস্থ কর্তা বলে ব্যাখ্যা করেছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু চার্জশিটে কোথাও সরাসরি তাঁর নাম নেওয়া হয়নি।
০৮১৮
তদন্তকারীদের দাবি, পন্নুন-চক্রান্তের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড এই সিসি-১। তাঁর নির্দেশেই নিখিল আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে পন্নুনকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিলেন। যদিও নিখিল সরাসরি খুন করতেন না। আমেরিকার গোয়েন্দাদের দাবি, নিখিল এই কাজের জন্য অন্য এক জনকে নিয়োগ করেছিলেন। সবটাই ঘটেছিল ওই সিসি-১-এর নির্দেশে।
০৯১৮
বক্তব্যের প্রমাণস্বরূপ চার্জশিটে একাধিক বিষয় দেখিয়েছে আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থা। সিসি-১-এর সঙ্গে নিখিলের নিয়মিত কথোপকথন, গোপনীয়তা রক্ষার চেষ্টা সংক্রান্ত একাধিক নথি প্রকাশ করা হয়েছে।
১০১৮
এই ভিডিয়ো দেখিয়ে আমেরিকা দাবি করছে যে, নিজ্জর খুনের সঙ্গে ভারতের যোগ সংক্রান্ত নথিও তাদের হাতে আছে। এই দাবি এত দিন ধরে করে এসেছে কানাডা। তবে ভারত বার বার নিজ্জর খুনের সঙ্গে যোগ অস্বীকার করে এসেছে।
১১১৮
পন্নুন খুনের চক্রান্তের সঙ্গে কোনও রকম যোগ থাকার কথা প্রথম থেকেই অস্বীকার করছে নয়াদিল্লি। যে হেতু বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং এর সঙ্গে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জড়িয়ে আছে, তাই উভয় ক্ষেত্রেই সাবধানে পা ফেলা হচ্ছে।
১২১৮
আমেরিকার চার্জশিটে সিসি-১-এর উল্লেখ থাকলেও কেন তাঁর আসল নাম নেওয়া হল না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এই ধরনের সাঙ্কেতিক নাম রহস্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে কি আমেরিকার দাবি অনুযায়ী, ভারত সরকারের এমন কোনও আধিকারিক এই চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত, যাঁর নাম প্রকাশ্যে এলে বিপদ ঘটতে পারে?
১৩১৮
বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, নয়াদিল্লিকে প্যাঁচে ফেলতে আটঘাট বাঁধছে আমেরিকা। প্রথমেই তাই চক্রান্তকারীর নাম নেওয়া হচ্ছে না। আরও তদন্ত করে উপযুক্ত প্রমাণ সংগ্রহ করে তবেই হয়তো নাম প্রকাশ করা হবে।
১৪১৮
সম্প্রতি আমেরিকার আরও কিছু কার্যকলাপ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পন্নুন তদন্তের আবহে ভারতকে খানিক চাপে রাখতে চাইছে আমেরিকা।
১৫১৮
আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান দু’দিনের সফরে ভারতে এসেছিলেন। বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে।
১৬১৮
সালিভান ভারতে এসেছিলেন ১৭ জুন। ভারত-আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি ‘ক্রিটিকাল অ্যান্ড ইমার্জিং টেকনোলজি’র (আইসিইটি) বার্ষিক বৈঠকেও যোগ দিয়েছেন তিনি। আবার ১৯ তারিখেই আমেরিকা থেকে এক দল আইন বিশেষজ্ঞ ভারতে এসেছেন। সরকারি ভাবে অবশ্য জানানো হয়েছে এই সফরের উদ্দেশ্য দলাই লামার সঙ্গে সাক্ষাৎ।
১৭১৮
হঠাৎ করে আমেরিকান আধিকারিকদের বার বার ভারতে আসার সঙ্গে পন্নুন মামলার যোগ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের দাবি, ভারতকে বাড়তি চাপে রাখতে এটি আমেরিকার ‘কৌশল’ হতে পারে। সেই কারণেই ঘন ঘন সেখানকার আধিকারিকেরা এ দেশে আসছেন।
১৮১৮
বিশেষজ্ঞদের মতে, পন্নুন হত্যা নিয়ে তলে তলে অনেক দূর এগিয়েছে আমেরিকা। ভারতের বিরুদ্ধে তারা উপযুক্ত প্রমাণ হাতে পেলে নয়াদিল্লির পক্ষে বিষয়টি সামাল দেওয়া খুব একটা সহজ হবে না বলেও মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ।