Gruesome Murders: বীভৎস! খুনের পর টুকরো করে দেহ ভরা হয়েছিল তন্দুরে, হত্যার পর হয় যৌননিগ্রহও
১৯৯৫ সালে দিল্লিতে খুন হন কংগ্রেস নেতা এবং বিধায়ক সুশীল শর্মার স্ত্রী নয়না সাহানি। তদন্তে উঠে আসে সেই খুনের বীভৎসতা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২২ ১৩:৩৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৭
সোমবার সন্ধ্যায় বহরমপুরে এক ছাত্রীকে তাঁর মেসের বাইরে ডেকে নিয়ে এসে নৃশংস ভাবে খুন করে এক যুবক। খুনের কারণ হিসেবে জানা যায়, ওই যুবতীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে টানাপড়েন চলছিল যুবকের।
০২২৭
খুনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ফেলে পুলিশ। শুধু বহরমপুরেই নয়, এমন নৃশংস খুনের নজির আরও রয়েছে দেশের বিভিন্ন শহর জুড়ে। তার মধ্যে থেকে কয়েকটি উল্লেখ করা হল।
ছবি- সুতপা চৌধুরী এবং সুশান্ত চৌধুরী।
০৩২৭
রমন রাঘবের কিস্সার কথা প্রথমেই উল্লেখ করতে হয়। ১৯৬৮ সালের এই ঘটনায় কেঁপে উঠেছিল মুম্বইয়ের রাস্তা। প্রায় ২৩ জন ফুটপাথবাসীকে মুগুর দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছিল অভিযুক্ত রমন রাঘব বা ‘সাইকো’ রাঘব।
০৪২৭
তদন্তে জানা যায়, প্রায় তিন বছর ধরে এই হত্যালীলা চালিয়েছিল রাঘব। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর রাঘবকে যাবজ্জীবন কারদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। ১৯৯৫ সালে কিডনির রোগে ভুগে জেলেই মৃত্যু হয় রমন রাঘবের। তার জীবনী নিয়ে সিনেমাও তৈরি হয়েছে বলিউডে।
০৫২৭
এর পর আসে স্টোনম্যান কিলারের কথা। ভারতের অপরাধমূলক ঘটনার মধ্যে অন্যতম এটি। ১৯৮৫ সালের মুম্বই এবং ১৯৮৯ সালের কলকাতা (পড়ুন ক্যালকাটা)। মুম্বইয়ে প্রায় ১২ জন এবং কলকাতায় ২৩ জন ফুটপাথবাসী এবং কাগজকুড়ানির মাথা থেঁতলে খুন করা হয়।
প্রতীকী ছবি।
০৬২৭
দু’টি ঘটনার যোগসাজশের কোনও প্রমাণ না পাওয়া গেলেও খুনের ধরন দেখে তদন্তকারীরা ধরে নিয়েছিলেন, তা এক জনেরই কাজ। তদন্তের পরও খুনি ধরতে অপারগ থেকে যান তদন্তকারীরা। এই দু’টি মামলা এখনও পর্যন্ত অমীমাংসিত এবং রহস্য হিসেবে রয়ে গিয়েছে।
প্রতীকী ছবি।
০৭২৭
নয়না সাহানি খুনের কথাও স্মর্তব্য। ১৯৯৫ সালে দিল্লিতে খুন হন কংগ্রেস নেতা এবং বিধায়ক সুশীল শর্মার স্ত্রী নয়না সাহানি। তদন্তে উঠে আসে সেই খুনের বীভৎসতা।
ছবি- নয়না সাহানি।
০৮২৭
নয়নাকে গুলি করে মেরে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে তন্দুরে ভরে দেন স্বামী সুশীল। বিধায়কের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
ছবি- সুশীল শর্মা।
০৯২৭
মনে পড়ে বেবি কিলারের কথা? পঞ্জাবের জালন্ধর। ২০০৪। দরবারা সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে নাবালক খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে প্রকাশ্যে আসে, দরবারা সিংহের নারকীয় হত্যার কাহিনি। প্রায় ২৩ জন নাবালক-নাবালিকাকে অপহরণের করে খুন করেছিল দরবারা।
১০২৭
শুধু খুন করেই ক্ষান্ত থাকেনি। মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সংসর্গেও লিপ্ত হয়েছিল সে। অপরাধ প্রমাণের পর আজীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয় প্রাক্তন বায়ু সেনার কর্মীকে। ২০১৮ সালে ৭৫ বছর বয়সে হাসপাতালে মৃত্যু হয় দরবারার। মৃত্যুর পর দেহ নিতে অস্বীকার করেন তাঁর পরিবারে লোকজন।
১১২৭
সদাশিব সাহুর নাম শুনেছেন? খুন করে রাতের বেলায় শান্তিতে ঘুমোতে যেতেন উত্তরপ্রদেশের ফুরসতগঞ্জের কাপড়ের ব্যবসায়ী সদাশিব। ২০০০ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে ২২ জনকে খুন করেছিল সদাশিব।
১২২৭
গ্রেফতারির পর জবানবন্দিতে সদাশিব জানায়, কোনও এক অদৃশ্য শক্তি তাকে উৎসাহ দিত খুনগুলি করার জন্য। খুনের পর বাড়িতে গিয়ে সে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারত। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারদণ্ডে দণ্ডিত করে।
১৩২৭
নিঠারি-কাণ্ডের কথা ওঠে এর পর। ২০০৫ থেকে ’০৬ সালের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের নয়ডার কাছে নিঠারি এলাকায় ২০টি শিশুর নিখোঁজ হয়। বেশ কিছু দিন পরে ওই এলাকার আশপাশ থেকে নিখোঁজ হওয়া শিশুদের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় মণীন্দ্র সিংহ পান্ধের ও তাঁর পরিচারক সুরেন্দ্র কোহলীকে।
ছবি- সুরেন্দ্র কোহলী।
১৪২৭
জানা যায়, বেশ কিছু শিশু-কিশোর-কিশোরীর উপর যৌন অত্যাচার চালিয়ে খুন করে তাদের দেহের অংশ প্রেসার কুকারে সেদ্ধ করে খেয়ে ফেলে পান্ধের এবং কোহলী। ঘটনার নৃশংসতা বিচার করে এটিকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ ঘটনার আখ্যা দেয়। ২০০৯ সালে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট অভিযুক্ত দু’জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। মামলা এখনও চলছে।
ছবি- মণীন্দ্র সিংহ পান্ধের।
১৫২৭
এর পর আসে চন্দ্রকান্ত ঝার প্রসঙ্গ। প্রথমে পরিযায়ী যুবকদের কাজ পেতে সাহায্য করা, তার পর তাঁদের খাইয়ে-পড়িয়ে সন্তানের মতো আদর করা। এর পর সামান্য উস্কানিতে তাঁদের নির্মমভাবে হত্যা এবং বিকৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিল্লির বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া। এ ভাবেই কাজ করত সিরিয়াল কিলার চন্দ্রকান্ত ঝা।
১৬২৭
১৯৯৮ থেকে ২০০৭ অবধি ৬ জনকে খুন করেছিল চন্দ্রকান্ত। খুন করার পর মৃতদেহের সঙ্গে একই ঘরে খাবার খেত সে। ছ’টির মধ্যে তিনটি খুনের ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হয় ঝা।
ছবি- চন্দ্রকান্ত ঝা।
১৭২৭
বিয়ার ম্যান-কাণ্ডের কথা মনে পড়ে? ২০০৬ থেকে ’০৭-এর মাঝে প্রায় ৭ জন খুন হয়েছিলেন দক্ষিণ মুম্বইয়ে। প্রতিটি দেহের পাশেই পাওয়া গিয়েছিল বিয়ারের বোতল।
১৮২৭
তদন্ত চলাকালীন রবীন্দ্র কাঁত্রোলে নামে এক ব্যক্তিকে খুনি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু প্রমাণের অভাবে বোম্বাই হাইকোর্ট তাঁকে বেকসুর খালাস খরে দেয়। বিয়ার ম্যানের পরিচয় আজও অজানা।
১৯২৭
নীরজ গ্রোভার খুন। ২০০৮-র মে মাসে মুম্বইয়ে খুন হন এক বেসরকারি টেলিভিশন সংস্থার অধিকর্তা নীরজ গ্রোভার।
২০২৭
তদন্তে জানা যায়, ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে নীরজকে খুন করা হয়েছিল। খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হন তাঁর অভিনেত্রী স্ত্রী মারিয়া সুসাইরাজ এবং মারিয়ার প্রেমিক এমিল জেরোম ম্যাথিউ।
ছবি- এমিল জেরোম ম্যাথিউ এবং মারিয়া সুসাইরাজ।
২১২৭
সায়ানাইড মোহন। প্রথমে মহিলাদের প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করা। তার পর তাঁদের সায়ানাইড বড়ি খাইয়ে খুন করে তাঁদের গয়না লুঠ করা। ২০০৬ থেকে ২০১১-র মধ্যে মেঙ্গালুরু প্রায় ২০ জন মহিলাকে এ ভাবেই খুন করা হয়।
২২২৭
তদন্তে নেমে পুলিশ গ্রেফতার করে মোহনকুমার ওরফে ‘সায়ানাইড মোহন’কে। ২০ জন মহিলাকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়। ২০১৩ সালে তার ফাঁসির সাজা হয়।
২৩২৭
নির্ভয়া কাণ্ড। ২০১২ সালের দিল্লির নির্ভয়া-কাণ্ড নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। চলন্ত বাসের মধ্যে ধর্ষণ করা হয় এক মহিলাকে। এমনকি নির্যাতিতার যৌনাঙ্গ লোহার রড দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয়। ঘটনার প্রতিবাদে নামে গোটা দেশ।
ছবি- নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীরা।
২৪২৭
এই নৃশংস ঘটনায় দিল্লি পুলিশ ছ’জন গ্রেফতার করে। তার মধ্যে এক জন নাবালকও ছিল। সকলেই দোষী সাব্যস্ত হয়। নাবালককে তিনি বছরের জন্য হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাকি পাঁচ জনের মধ্যে এক জনের জেলের মধ্যেই মৃত্যু হয়। অবশিষ্ট চার জনের ফাঁসির সাজা হয়।
২৫২৭
২০১৫ সালে দিল্লিতে রবীন্দ্র কুমার নামে এক ব্যক্তিকে ১৫ জন শিশু-নাবালককে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করে পুলিশ। দু’বছরের শিশু থেকে ১০-১২ বছরের নাবালক— সকলেই ছিল রবীন্দ্রর অপরাধের শিকার।
ছবি- রবীন্দ্র কুমার।
২৬২৭
রবীন্দ্র ওই শিশু-নাবালকদের যৌন নিগ্রহ করে গলা টিপে খুন করত। এমনকি শিশুদের মৃতদেহগুলিকেও যৌন নিগ্রহ করত। জেরায় সে জানায়, এ রকম ৩০টি খুন সে করেছে। কিন্তু পুলিশ ১৫টি খুনের সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র খুঁজে পায়।
২৭২৭
এই সব নৃশংস ঘটনা ছাড়াও, শিনা বোরা হত্যাকাণ্ড, জেসিকা লাল হত্যাকাণ্ড, সুনন্দা পুষ্কর, প্রমোদ মহাজন হত্যাকাণ্ড ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়েছিল দেশের আপামর জনতাকে।