এ বারের মন্ত্রিসভায় বাদ পড়লেন কিছু চেনা মুখ। অথচ আগের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছিলেন তাঁরা। এমনকি রবিবার শপথগ্রহণ করার আগে সকালে সাত, লোককল্যাণ মার্গের বাড়িতে আয়োজিত চা-চক্রের অনুষ্ঠানেও দেখা যায়নি তাঁদের।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৪ ১৪:২০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
তৃতীয় বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করলেন নরেন্দ্র মোদী। শপথ নিলেন তাঁর মন্ত্রিসভার ৩০ জন পূর্ণমন্ত্রী এবং ৪১ জন প্রতিমন্ত্রী (পাঁচ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত-সহ)। তবে এ বারের মন্ত্রিসভায় বাদ পড়লেন কিছু চেনা মুখ। অথচ আগের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছিলেন তাঁরা। এমনকি, রবিবার শপথগ্রহণ করার আগে সে দিন সকালে সাত, লোককল্যাণ মার্গের বাড়িতে এনডিএ-র বেশ কয়েক জন সাংসদকে চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদী। সেখানে আমন্ত্রিতদের তালিকায়ও দেখা যায়নি তাঁদের।
০২২২
২০১৪ সালে মোদী যখন প্রথম সরকার গঠন করেন, তখন হিন্দি ধারাবাহিকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানি হয়ে উঠেছেন পুরোদস্তুর রাজনীতিক। ২০১৪ সালের মন্ত্রিসভায় স্মৃতি ছিলেন চেনা মুখ। মন্ত্রিসভায় থাকা স্মৃতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের।
০৩২২
পাঁচ বছর পর ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন মোদী। সে বছর অমেঠী থেকে বিজেপি প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীকে বিপুল ভোটে হারিয়েছিলেন স্মৃতি। দ্বিতীয় বার মোদীর মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নেন তিনি।
০৪২২
২০১৯ সালে মহিলা এবং শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বে ভারপ্রাপ্ত হন স্মৃতি। পরে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্ব চলে যায় স্মৃতির কাঁধে।
০৫২২
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে আবার অমেঠী কেন্দ্র থেকেই বিজেপি প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্মৃতি। কিন্তু তাঁর সঙ্গে রাজনীতির মাঠে এ বার আর রাহুল লড়াই করতে নামেননি। বরং রাহুলের পরিবর্তে কংগ্রেস প্রার্থী হয়ে লড়েছিলেন কিশোরীলাল শর্মা।
০৬২২
অমেঠী কেন্দ্রে এক লক্ষেরও বেশি ভোটে স্মৃতিকে হারিয়েছেন কিশোরীলাল। পর পর দু’বার জয়ী হয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েও এ বার আর মন্ত্রিসভায় দেখা গেল না স্মৃতিকে।
০৭২২
হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর কেন্দ্র থেকে পর পর পাঁচ বার ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন অনুরাগ ঠাকুর। এ বার লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে কংগ্রেস প্রার্থী সতপল রায়জাদাকে প্রায় দু’লক্ষের কাছাকাছি হারিয়েছেন তিনি। কিন্তু রবিবার শপথগ্রহণ করতে দেখা গেল না তাঁকে।
০৮২২
২০১৯ সালের মন্ত্রিসভায় ক্রীড়া মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০২৪ সালের মন্ত্রিসভায় দেখা গেল না তাঁকে।
০৯২২
২০১৯ সালে প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণ করেছিলেন রাজীব চন্দ্রশেখর। তাঁর দায়িত্বে ছিল ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য-প্রযুক্তি, জলশক্তি মন্ত্রক। এ বার লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে তিরুঅনন্তপুরম কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। কংগ্রেস প্রার্থী শশী তারুরের কাছে ১৬ হাজার ভোটে হেরে যান। তৃতীয় মোদী মন্ত্রিসভায় শপথ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি রাজীবকে।
১০২২
দ্বিতীয় মোদী মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) হিসাবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন আরকে সিংহ। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর। মোদী ৩.০-এ আর দেখা পাওয়া গেল না তাঁর।
১১২২
বিহারের আরা কেন্দ্র থেকে এ বার ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন আরকে সিংহ। কিন্তু সিপিআই (এমএল) প্রার্থী সুদামা প্রসাদের কাছে ৬০ হাজার ভোটে হেরে যান তিনি।
১২২২
মোদী ২.০ অর্থাৎ দ্বিতীয় মোদী মন্ত্রিসভায় মৎস্য, পশুপালন মন্ত্রকের ভার পেয়েছিলেন পুরুষোত্তম রূপালা। কিন্তু তৃতীয় মোদী মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন না তিনি। অথচ গুজরাতের রাজকোট কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের পরেশ ধনানিকে চার লক্ষের বেশি ভোটে হারিয়েছেন তিনি।
১৩২২
ভোটের প্রচারের সময় ক্ষত্রিয়দের নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন পুরুষোত্তম। উত্তর গুজরাত এবং সৌরাষ্ট্রের ক্ষত্রিয়দের রোষের মুখে পড়েন তিনি। পরে অবশ্য ক্ষমাপ্রার্থনাও করেছিলেন তিনি। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার কারণেই নাকি মোদী ৩.০ থেকে বাদ পড়েছেন তিনি।
১৪২২
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে মহারাষ্ট্রের রত্মগিরি-সিন্ধুদুর্গ কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছিলেন নারায়ণ রানে। শিবসেনা (ইউবিটি)-র বিনায়ক রউতকে ৪৭ হাজারের সামান্য বেশি ভোটে হারিয়েছেন তিনি।
১৫২২
দ্বিতীয় মোদী মন্ত্রিসভায় অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন নারায়ণ। কিন্তু তৃতীয় বারের মোদী মন্ত্রিসভায় দেখা গেল না তাঁকে।
১৬২২
এ বার একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। তাই সরকার গড়তে এনডিএ-র শরিক দলগুলির উপরে অনেকাংশে নির্ভর করতে হচ্ছে পদ্মশিবিরকে। তাই শরিক দলগুলির বরাতে কোন কোন মন্ত্রিত্ব যায়, সে দিকে নজর রয়েছে সকলের।
১৭২২
বিজেপি সূত্রে খবর, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির মতো ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মন্ত্রক নিজেদের হাতেই রাখতে পারে তারা। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, ‘বিগ ফোর’ মন্ত্রকের মধ্যে থেকে কয়েকটির দাবি জানাতে পারে জোট শরিকরা। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, অন্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলির মধ্যে বেশ কিছু বণ্টন করা হতে পারে শরিক দল চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি, নীতীশ কুমারের জেডিইউ, চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি (আর), একনাথ শিন্ডের শিবসেনা, এইচডি দেবগৌড়ার জেডিএস এবং জয়ন্ত চৌধরির আরএলডি-র মধ্যে।
১৮২২
মোদীর মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে রবিবার শপথ নেওয়া ৩০ জন পূর্ণমন্ত্রীর মধ্যে বিজেপির ২৫ জন। এঁদের মধ্যে গুজরাত থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভা সাংসদ এস জয়শঙ্কর, সাকিন তামিলনাড়ুর নির্মলা সীতারামন, হিমাচল প্রদেশের নেতা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা রয়েছেন। রয়েছেন রাজস্থানের অশ্বিনী বৈষ্ণব, যিনি ওড়িশা থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভা সাংসদ, পঞ্জাবের হরদীপ সিংহ পুরী, যিনি উত্তরপ্রদেশ থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভার সাংসদ।
সহযোগী দলের পাঁচ পূর্ণমন্ত্রীর তালিকায় তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র কিঞ্জারাপু রামমোহন নায়ডু, জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)-এর রাজীবরঞ্জন (লল্লন) সিংহ, জনতা দল সেকুলার (জেডিএস)-এর এইচডি কুমারস্বামী, লোক জনশক্তি পার্টি রামবিলাস (এলজেপি)-এর চিরাগ পাসোয়ান, হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা (হাম)-র জিতনরাম মাঝিঁ রয়েছেন।
২১২২
সহযোগী দলের ছ’জন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে শিবসেনার প্রতাপরাও যাদব, রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি)-এর জয়ন্ত চৌধরি, রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়া অঠওয়ালে (আরপিআই-এ)-র রামদাস অঠওয়ালে, জেডিইউর রামনাথ ঠাকুর, আপনা দল (সোনেলাল)-এর অনুপ্রিয়া পটেল, টিডিপির চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি।