‘খুফিয়া’ ছবিতে দেখানো হয়েছে যে ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং’ (র)-এর এক ইন্টেলিজেন্স অফিসার অফিসের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমেরিকায় পাচার করছেন। এই গুপ্তচরের অস্তিত্ব বাস্তবেই ছিল বলে জানা যায়।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
বলিপাড়ার প্রথম সারির ছবিনির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজের পরিচালনায় বৃহস্পতিবার নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ‘খুফিয়া’। স্পাই-থ্রিলার ঘরানার এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন তব্বু, ওয়ামিকা গাব্বি এবং আলি ফজল। পার্শ্বচরিত্রে থেকে মন জয় করেছেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন।
০২১৯
‘খুফিয়া’ ছবির চিত্রনাট্য বুনতে নিজের পরিকল্পনার পাশাপাশি একটি উপন্যাসের সাহায্যও নেন বিশাল। প্রাক্তন গোয়েন্দা অমর ভূষণের লেখা ‘এসকেপ টু নোহোয়্যার’ উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে ‘খুফিয়া’র চিত্রনাট্য বুনেছেন পরিচালক।
০৩১৯
স্পাই-থ্রিলার ঘরানার ‘খুফিয়া’ যে খানিকটা সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে তা জানেন কি? আদতে ‘এসকেপ টু নোহোয়্যার’ উপন্যাসেও কলমের মাধ্যমে সত্য ঘটনার ছবি এঁকেছেন অমর। ‘খুফিয়া’য় চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে ছবির প্রথমাংশ ছাড়াও দ্বিতীয়াংশ অনেকটাই বদলে দিয়েছেন বিশাল।
০৪১৯
‘খুফিয়া’ ছবিতে দেখানো হয়েছে যে ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং’ (র)-এর এক গোয়েন্দা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমেরিকায় পাচার করছেন। বাস্তবেও এই গুপ্তচরের অস্তিত্ব ছিল বলে জানা যায়।
০৫১৯
গুপ্তচরের চরিত্রে ‘খুফিয়া’ ছবিতে অভিনয় করেন আলি ফজল। সে চরিত্রের নাম রবি মোহন।
০৬১৯
বাস্তবের গুপ্তচরের নাম অবশ্য রবি মোহন ছিল না। তাঁর আসল নাম ছিল রবীন্দ্র সিংহ। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাকে পাচারের অভিযোগ ওঠে রবীন্দ্রের বিরুদ্ধে।
০৭১৯
হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান রবীন্দ্র। বহু বছর আমেরিকায় আশ্রিত হিসাবে ছিলেন তিনি। কানাঘুষো শোনা যায় বিদেশে থাকাকালীন পথ দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।
০৮১৯
প্রথম জীবনে সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ আধিকারিক ছিলেন রবীন্দ্র। ভারতীয় সেনাবাহিনীতেও যুক্ত হন তিনি। মেজর পদ পর্যন্ত পদোন্নতিও হয় তাঁর।
০৯১৯
সেনাবাহিনীর পর র-এর গোয়েন্দা পদে নিযুক্ত হন রবীন্দ্র। কিন্তু কিছু দিন কর্মরত থাকার পর সন্দেহের খাতায় নাম ওঠে তাঁর।
১০১৯
র-এর অন্যান্য সহকর্মী দাবি করতে থাকেন যে রবীন্দ্র অফিসে থাকাকালীন এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের ফোটোকপি বার করছেন যেগুলির সঙ্গে তাঁর কর্মসংক্রান্ত কোনও যোগসূত্রই নেই।
১১১৯
সন্দেহ হওয়ায় আতশকাচের তলায় চলে আসেন রবীন্দ্র। তাঁর গতিবিধি সব সময় নজরে রাখা হত। এমনকি ফোন ট্যাপ করে সমস্ত কথোপকথনের উপর কড়া নজরদারি চলত বলে দাবি করেন এক প্রাক্তন গোয়েন্দাকর্তা।
১২১৯
কড়া নজরদারির মধ্যে থেকেও হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান রবীন্দ্র। পরে আমেরিকায় তাঁর সন্ধান মেলে। ২০০৪ সালের মে মাসে উধাও হন তিনি।
১৩১৯
গোয়েন্দাদের একাংশের অনুমান, নেপালের পথ ধরে আমেরিকায় পালিয়ে যান রবীন্দ্র। বিপদ থেকে রক্ষা পেতে সকলের চোখে ধুলো দিয়ে স্ত্রী পরমিন্দর কউর-সহ আমেরিকায় পালিয়ে যান তিনি।
১৪১৯
দেশ ছেড়ে পালানোর সময় ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করেন রবীন্দ্র। নিজের নাম বদলে রাখেন রাজপাল প্রসাদ শর্মা। পরমিন্দরের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় দীপাকুমার শর্মা।
১৫১৯
র-এর আধিকারিকদের দাবি, রবীন্দ্র এবং পরমিন্দরের ভুয়ো পাসপোর্ট এবং ভিসা হাতে আসে সংস্থার। এমনকি ২০০৪ সালের ৭ মে কাঠমান্ডু থেকে কোন বিমানে চেপে তাঁরা আমেরিকায় পালিয়ে যান সে তথ্যও স্পষ্ট হয় র-এর কাছে।
১৬১৯
আধিকারিকদের একাংশের দাবি, ২০০৭ সালে নিউ জার্সিতে খোঁজ মেলে রবীন্দ্রের। আমেরিকায় আশ্রিত হিসাবে থাকতে শুরু করেন রবীন্দ্র এবং তাঁর স্ত্রী।
১৭১৯
গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায়, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থার তরফে মাসে মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকাও দেওয়া হত রবীন্দ্রকে।
১৮১৯
পরে নাকি রবীন্দ্রকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয় আমেরিকা। এমনকি তিনি আমেরিকায় যেন কোনও কাজ করতে না পারেন সে ব্যবস্থাও করা হয়েছিল বলে জানা যায়।
১৯১৯
রবীন্দ্র এবং পরমিন্দর আমেরিকায় কী ভাবে দিনযাপন করেছেন সে বিষয়ে কিছু জানা না গেলেও পরে গোপন সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের শেষের দিকে আমেরিকার মেরিল্যান্ডে এক পথদুর্ঘটনায় মারা যান রবীন্দ্র।