First grain cargo ship has left Ukraine since war against Russia began, will India gain dgtl
Russia
Ukraine Russia War: যুদ্ধের মাঝেই ইউক্রেন থেকে টন টন শস্য নিয়ে পাড়ি দিল জাহাজ, কতটা লাভ হতে পারে ভারতের?
২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার যুদ্ধাভিযান ঘোষণার পর ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর দিয়ে এই প্রথম কোনও শস্যপণ্যবোঝাই জাহাজ চলল।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২২ ১৪:১৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ইউক্রেন থেকে শস্য রফতানি বন্ধ। তবে সম্প্রতি সে ছবিতে বদল ঘটল। যুদ্ধের মাঝেই ইউক্রেনীয় বন্দর ওডেসা থেকে পাড়ি দিল ২৬,৫২৭ টন ভুট্টাবোঝাই জাহাজ ‘এমভি রাজোনি’।
০২১৬
ওই জাহাজের প্রাথমিক গন্তব্য, তুরস্কের অদূরের বসফোরাস প্রণালী। তার পর তা বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে পাড়ি দেবে। সেখান থেকে তা পৌঁছবে ভারত-সহ বিশ্বের নানা দেশে। এতে কতটা লাভবান হতে পারে ভারত তথা বিশ্বের অন্যান্য দেশ?
০৩১৬
২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধাভিযান ঘোষণার পর এই প্রথম সে দেশের বন্দর থেকে কৃষ্ণসাগরের উপর দিয়ে কোনও শস্যপণ্যবোঝাই জাহাজ চলল। মঙ্গলবার তা বসফোরাস প্রণালী পৌঁছেছে। পরের গন্তব্য, উত্তর লেবাননের ত্রিপোলি। কৃষ্ণসাগরের উপর দিয়ে একটি বিশেষ করিডর ধরে তা পৌঁছবে অন্যান্য বন্দরে।
০৪১৬
ইউক্রেন থেকে জলপথে ‘এমভি রাজোনি’র যাত্রাপথে প্রহরা দেবে সে দেশের নৌবাহিনী। রাশিয়ার সেনাদের আক্রমণের হাত থেকে ওই জাহাজকে রক্ষা করাই তাদের কাজ। সম্প্রতি একটি চুক্তির জন্য ওই পণ্য পরিবহণ সম্ভব হয়েছে।
০৫১৬
২২ জুলাই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে ওই চুক্তি হয়েছে। তাতে ছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং তুরস্কও। ‘ব্ল্যাক সি গ্রেন ইনিশিয়েটিভ’ নামে চুক্তির ফলে ওডেসা, চোরনোমোর্স্ক এবং ইউজ্নি বন্দর দিয়ে শস্যপণ্য রফতানি করতে পারবে ইউক্রেন।
০৬১৬
কৃষ্ণসাগর দিয়ে পাড়ি দেওয়া জাহাজে যাতে শুধুমাত্র সার এবং শস্যই পাড়ি দেয়, তার নজরদারির জন্য একটি যৌথ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তুরস্কের ইস্তানবুলে গঠিত ওই কমিটিতে রাষ্ট্রপুঞ্জ, ইউক্রেন, রাশিয়া এবং তুরস্কের প্রতিনিধি রয়েছেন।
০৭১৬
জাহাজ পারাপারের এই কিস্সা তো হল। তবে এতে আখেরে ভারত তথা গোটা বিশ্বের কতটা ফায়দা হবে? একটি তথ্যেই তার আভাস মিলতে পারে।
০৮১৬
সোমবার ওই জাহাজযাত্রা শুরু হতে না হতেই শুক্রবারের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম পড়তির দিকে। শুক্রবার থেকে শিকাগো বোর্ড অব ট্রেড কমোডিটিস এক্সচেঞ্জে প্রতি টন তা ২৩৫৫৪.৮৯ টাকা থেকে ২২২৭২.৩৪ টাকায় নেমে গিয়েছে।
০৯১৬
স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্ববাজারে এ বার গমের দামেও এর প্রতিফলন দেখা যাবে। অন্য দিকে, বিশ্বে শস্য রফতানিকারী দেশের তালিকায় বেশ উপরের দিকেই রয়েছে ইউক্রেন।
১০১৬
যুদ্ধের আগে গম রফতানিকারী হিসাবে রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকার পরেই ছিল ইউক্রেন। বার্লি বা ভুট্টার রফতানিকারক দেশগুলির তালিকায় ইউক্রেন যথাক্রমে পঞ্চম এবং চতুর্থ স্থানাধিকারী। তবে সূর্যমুখী তেল রফতানিকারী হিসাবে শীর্ষে রয়েছে ইউক্রেন।
১১১৬
এ বার আসা যাক ভারতের কথায়। ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে বিদেশ থেকে ২১.৭৬ লক্ষ টন সূর্যমুখী তেল আমদানি করেছিল ভারত। তবে ২০২১-’২২ তা কমে দাঁড়ায় ২০.৪৫ লক্ষ টন। আর্থিক মূল্যে তা ছিল যথাক্রমে ১৯৬ কোটি ডলার এবং ২৮৮ কোটি ডলার। এই আমদানিকৃত শস্যর বেশির ভাগ এসেছিল ইউক্রেন থেকে।
১২১৬
২০২০-’২১ অর্থবর্ষে ইউক্রেন থেকে ১৭.৪০ টন ((১৬০ কোটি ডলার অর্থমূল্যের) এবং পরের অর্থবর্ষে ১৪.৮৩ টন (২০৯ কোটি ডলার অর্থমূল্যের) সূর্যমুখী তেল আমদানি করেছিল ভারত।
১৩১৬
ইউক্রেন ছাড়াও রাশিয়া এবং আর্জেন্টিনা থেকেও সূর্যমুখী তেল আমদানি করেছে ভারত। তবে ইউক্রেনের তুলনায় তা অতি নগণ্য। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে তা ছিল যথাক্রমে ৩৪৫৪.৫৭ টন এবং ১৮৭৯.৬৯২৫ টন।
১৪১৬
এ দেশে পাম, সয়াবিন এবং সর্ষের পর সূর্যমুখীর তেলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে প্রায় ৭০ শতাংশ চাহিদা রয়েছে এই তেলের।
১৫১৬
যুদ্ধের আগে এ দেশে প্রতি মাসে দু’হাজার টনেরও বেশি সূর্যমুখী তেল আমদানি করা হত। যার ৭০-৮০ শতাংশই আসত ইউক্রেন থেকে। তবে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়া পর থেকে সে ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এর জেরে মুম্বইয়ে প্রতি টন সূর্যমুখী তেলের দাম (বিমা এবং পণ্য পরিবহণ কর মিলিয়ে) ১৭৪,৬০৪ টন প্রতি টাকা পার করেছে। অথচ, মার্চের মাঝামাঝি তা ছিল টন প্রতি ১১৫০৭৯.৯৮ থেকে ১১৯০৪৮.২৫ টাকা।
১৬১৬
কৃষ্ণসাগরের বন্দর দিয়ে আবারও শস্যপণ্যের জাহাজ চলাচলে কতটা পার্থক্য হবে? এই মুহূর্তে ইউক্রেন ছাড়াও রোমানিয়া, বুলগেরিয়া এবং তুরস্কের বন্দর ব্যবহার করে শুরু হয়েছে পণ্য পরিবহণ। একে স্বাগত জানিয়েছেন এক সরকারি আধিকারিক। তাঁর দাবি, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে। অন্য দিকে, ওডেসা-সহ অন্যান্য ইউক্রেনীয় বন্দর থেকে সরাসরি পণ্য এলে তাতে সূর্যমুখী তেলের থেকেও প্রাধান্য পাবে গম এবং ভুট্টা।