Faisal Malik, the actor who plays Prahlad Pandey in 'Panchayat' dgtl
Panchayat
Faisal Malik: ‘কালো মোটা লোকের চরিত্র হলে আমাকে জানাবেন!’ প্রযোজকদের বলতেন ‘পঞ্চায়েত’-এর পাণ্ডেজি
নেই গালিগালাজের স্রোত। চোরডাকাত বা নিদেনপক্ষে গুন্ডা-মাফিয়ারাও গায়েব। বরং বেশ সাদামাটা সহজসরল জীবনের গল্প শোনায় ‘পঞ্চায়েত’।
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২২ ১০:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বছর কুড়ি আগে বলিউডে পা রেখেছিলেন বটে। তবে অভিনয় করতে গিয়েই ভয়ে সিঁটিয়ে যেতেন তিনি। বছর কুড়ি পর অবশ্য পরিস্থিতির আকাশপাতাল ফারাক হয়ে গিয়েছে। ‘পঞ্চায়েতে’র উপপ্রধান প্রহ্লাদ পাণ্ডের ভূমিকায় সাবলীল অভিনয়ে নজর কাড়ছেন ফয়জল মালিক।
০২১৮
বেশির ভাগ ওয়েবসিরিজের মতো ধুমধড়াক্কা গোলাবারুদের বন্যা নয়। নেই গালিগালাজের স্রোত। চোরডাকাত বা নিদেনপক্ষে গুন্ডা-মাফিয়ারাও গায়েব। বরং বেশ সাদামাটা সহজসরল জীবনের গল্প শোনায় ‘পঞ্চায়েত’।
০৩১৮
ওটিটি প্ল্যাটফর্মের হাজারো ওয়েবসিরিজের ভিড়েও আলাদা ভাবে চোখে পড়েছে পরিচালক দীপককুমার মিশ্রের এই কমেডি-ড্রামা সিরিজ।
০৪১৮
মেঠো লোকজনের ভিড়ে আচমকাই এসে হাজির হন এক পঞ্চায়েত সচিব। রয়েছেন গ্রামপঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান। তবে বকলমে তাঁর স্বামীই যাবতীয় ক্ষমতা ভোগ করেন। তিনি যেন আক্ষরিক অর্থেই গ্রামের ‘প্রধানজি’। আর রয়েছেন উপপ্রধান। সঙ্গে গ্রামের সাদাসিধা বাসিন্দারা। এবং অবশ্যই তাঁদের নিত্য দিনের কীর্তিকলাপ। এই নিয়েই জমজমাট ‘পঞ্চায়েত’!
০৫১৮
চাকরির তাগিদে শহুরে জীবনের বিলাস ছেড়ে গ্রামে গিয়ে কী ভাবে ধীরে ধীরে খাপ খাইয়ে নেন সচিবজি অভিষেক ত্রিপাঠী, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন ‘কোটা ফ্যাক্টরি’র জীতু ভাইয়া ওরফে জীতেন্দ্র কুমার।
০৬১৮
পঞ্চায়েত প্রধান হলেও সংসারের কাজে ব্যস্ত মঞ্জু দেবীর ভূমিকায় নিজেকে অন্য মাত্রায় তুলে ধরেছেন নীনা গুপ্ত। এ সিরিজে নারীর ক্ষমতায়নের গালভরা কথা না বলেও এক সময় নিজের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। তা করতে গিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের রেখা ফুটিয়ে তুলেছেন নীনা।
০৭১৮
মঞ্জু দেবীর স্বামী ব্রিজভূষণ দুবে এককালে পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। তবে ভোটপর্বের আগে স্ত্রীকে সে পদ ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। ক্ষমতা হারালেও তার দাপট কমেনি। পর্দায় এ সব দিকই জীবন্ত করেছেন রঘুবীর যাদব।
০৮১৮
তবে এত শক্তিশালী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ভিড়েও উপপ্রধানের চরিত্রে ফয়জলকে দেখে হেসে গড়িয়ে পড়েছেন অনেকে।
০৯১৮
পঞ্চায়েতের প্রথম সিরিজে প্রধানজি’র ছায়াসঙ্গী হিসাবে দেখা গিয়েছিল ফয়জলকে। মিষ্টি খেতে বেজায় ভালবাসেন। তবে প্রচলিত অর্থে খাদ্যরসিক নন। পঞ্চায়েতের নানা কাজের দায়িত্ব নিতেও পিছপা হন না সোজাসরল মানুষটি। এমন চরিত্রে ভাঁড়ামো না করেও যে দুর্দান্ত কমিক টাইমিং দিয়ে হাসি ফোটানো যায়, তা দেখিয়ে দিয়েছেন ফয়জল।
১০১৮
দ্বিতীয় মরসুমেও কামাল করেছেন ফয়জল। তবে এ বার তাঁর চরিত্রে পিতৃস্নেহ জুড়ে বসেছে। ছেলে রাহুলের জন্য বাড়িতে ‘দারু পিনা মানা’। কখনও ছেলেকে চাপাটি তৈরি করে খাওয়াচ্ছেন তো কখনও ট্রেন-সফরের সঙ্গী হচ্ছেন। চরিত্রে উত্তরণের এই পর্বটিতেও অনায়াসে উতরে গিয়েছেন অভিনেতা ফয়জল।
১১১৮
অথচ এক কালে অভিনয় করার কথা শুনলেই নাকি গলা শুকিয়ে আসত ফয়জলের। অধুনা উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের বাসিন্দাটি মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন ২২ বছর বয়সে। সেটা ২০০২ সাল। তবে রুপোলি পর্দার টানে নয়।
১২১৮
লখনউ থেকে বাণিজ্যে স্নাতকস্তরের পড়াশোনা শেষ করেছিলেন ফয়জল। বাবার ইচ্ছে ছিল, এর পর মুম্বই গিয়ে এমবিএ ডিগ্রি বাগিয়ে নেবে ছেলে। তবে সে গুড়ে বালি!
১৩১৮
মুম্বইয়ে পা রেখে এমবিএ-র পড়াশোনা মাথায় উঠেছিল। কিছুতেই পড়াশোনায় মন বসে না। এক জনের কথায় অভিনয়ে চেষ্টাচরিত্র শুরু করেন। তবে বলিউডে তাঁর মতো আনকোরাকে জায়গা দেবে কে?
১৪১৮
বলিপাড়ায় সদ্য পা রাখা আর পাঁচটা অভিনেতাদের মতো তথাকথিত নায়কোচিত চেহারা নেই। বরং বাইশের তরুণ বেশ স্থূলকায়। গায়ের রংও দুধে-আলতার বদলে মিশমিশে কালো। সেই সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে হাত-পা সিঁটিয়ে যেত তাঁর। ফয়জলের কাছে তখন এ সবই যেন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
১৫১৮
পেট চালাতে এক সময় একটা-দু’টো চাকরি করা শুরু করেন ফয়জল। তবে অভিনয়ের স্বপ্ন লালন করা ছাড়েননি। একটি সাক্ষাৎকারে ফয়জল জানিয়েছেন, প্রযোজনা সংস্থার দোরে দোরে ঘুরলেও তাঁর চেহারা দেখে কাজ দিতে অনেকেই ইতস্তত বোধ করতেন।
১৬১৮
হতাশ না হয়ে ফয়জল এ বার নিজের চেহারার ‘বিজ্ঞাপন’ দিতে শুরু করেন। প্রযোজকদের কাছে গিয়ে বলতে শুরু করেন, ‘‘কালো, মোটা লোকের চরিত্রে অভিনেতার প্রয়োজন হলে আমাকে জানাবেন!’’
১৭১৮
বলিউড অভিনেতার চেহারা নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন ফয়জল। সে দিনের সেই ২২ বছরের যুবকের ঝুলিতে আজ অনুরাগ কাশ্যপের ছবি ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’-এ কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ওই ছবিতে ইনস্পেক্টর গোপাল শর্মার চরিত্রকে আপন করে নিয়েছিলেন ফয়জল।
১৮১৮
ক্যামেরার সামনে থেকে কখন যেন পিছনে চলে গিয়েছেন ফয়জল। ‘রিভলভার রানি’ এবং ‘ম্যায় অউর চার্লস’-সহ সাতটি ছবিতে প্রযোজকের জুতোয় পা গলিয়েছেন তিনি। তবে ‘পঞ্চায়েত’ পর্বের পর অভিনেতা হিসাবে তাঁর বৃহস্পতি আবারও তুঙ্গে!