Elon Musk predicts on Canada PM Justin Trudeau defeat in upcoming election dgtl
Elon Musk on Trudeau
পরের ভোটেই খেলা শেষ! এ বার ট্রুডো-বিদায়ের তারিখও জানিয়ে দিলেন ‘কিং মেকার’ মাস্ক
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে নিয়ে বড় মন্তব্য করলেন বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের তথা আমেরিকান শিল্পপতি ইলন মাস্ক। তাঁর পতনের দিনক্ষণ এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন তিনি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪ ১২:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হোক বা জার্মানিতে সরকারের পতন। তিনি মুখ খুললেই সংবাদমাধ্যমে তৈরি হয় নতুন শিরোনাম। এ হেন বিশ্বের অন্যতম ধনকুবেরের হাত ধরেই কি এ বার কানাডায় ‘পালা বদলের পালা’?
০২২০
তিনি, শিল্পপতি ইলন মাস্ক। যাঁর ব্যাটারিচালিত গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা ‘টেসলা’ সারা দুনিয়ায় হইচই ফেলে দিয়েছে। এ ছাড়া নেটাগরিকদের প্রিয় এক্স হ্যান্ডলেরও (সাবেক টুইটার) মালিকানা রয়েছে তাঁরই হাতে।
০৩২০
সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘অতি ঘনিষ্ঠ’ মাস্ক। যা নিঃসন্দেহে নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে।
০৪২০
ট্রুডোকে নিয়ে ঠিক কী বলেছেন টেসলা কর্ণধার? আগামী নির্বাচনে ‘ম্যাপল পাতা’র দেশ নতুন প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাস্ক। নিজের মালিকানাধীন এক্স হ্যান্ডলে এ কথা লিখেছেন তিনি।
০৫২০
চলতি বছরের ৭ নভেম্বর মাস্ককে ট্যাগ করে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন রবার্ট রোনিং নামের এক ব্যক্তি। সেখানে ‘ট্রুডোর থেকে মুক্তির জন্য’ তাঁর কাছে সাহায্য চান তিনি। জবাবে টেসলা কর্ণধার বলেন, ‘‘আসন্ন নির্বাচনে পতন হবে ট্রুডোর।’’
০৬২০
আগামী বছর (২০২৫ সালে) কানাডায় নির্বাচন রয়েছে। মাস্কের ওই মন্তব্যের পর তা এগিয়ে আসতে পারে বলেও আন্তর্জাতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। অন্য দিকে সমীক্ষকদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে নিজের দেশে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন ট্রুডো।
০৭২০
২০১৫ সাল থেকে আমেরিকার উত্তরের প্রতিবেশী দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন জাস্টিন। ২০১৯ এবং ২০২১ সালে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হয় তাঁর দল লিবারেল পার্টি।
০৮২০
এ অবস্থায় জগমিত সিংহের ‘নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’র (এনডিপি) সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করেছেন ট্রুডো। আগামী ভোটে তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী পিয়েরে পোইলিভরের ‘কনজ়ারভেটিভ পার্টি’ হতে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
০৯২০
বিশেষজ্ঞদের দাবি, নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে শিখদের সমর্থন নিজের দিকে টানতে চাইছেন ট্রুডো। ফলে কানাডা বিচ্ছিন্নতাবাদী খলিস্তানপন্থীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। আর সব দেখেও চোখ বন্ধ করে রয়েছেন ম্যাপল পাতার দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
১০২০
ট্রুডোর এ হেন আচরণের জেরে ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। অন্য দিকে, মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের সঙ্গে লড়তে গিয়ে উত্তর আমেরিকার দেশটির অর্থনীতি একরকম ফালাফালা হয়ে গিয়েছে।
১১২০
ফলে নির্বাচন যত এগোচ্ছে, ততই কানাডার রাজনীতিতে ধীরে ধীরে ‘একঘরে’ হয়ে পড়ছেন জাস্টিন। সমীক্ষকদের দাবি, দেশটির ৬৮ শতাংশ বাসিন্দাই তাঁকে অপছন্দ করেন। মাত্র ২৭ শতাংশ কানাডাবাসী ট্রুডোকে ফের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে দেখতে চেয়েছেন।
১২২০
ভোট পূর্ববর্তী সমীক্ষা অনুযায়ী, আসন্ন নির্বাচনে কানাডার কনজ়ারভেটিভ পার্টি ৪২ শতাংশের সমর্থন পেতে পারে। অন্য দিকে, ২৬ শতাংশ দেশবাসীর ভোট যেতে পারে ট্রুডোর লিবারেল পার্টির ঝুলিতে। তৃতীয় স্থানে থাকা এনডিপি পেতে পারে ১৫ শতাংশ ভোট।
১৩২০
এই সমীক্ষা মিলে গেলে ক্ষমতা হারাবেন ট্রুডো। আর মিলে যাবে মাস্কের ভবিষ্যদ্বাণী। যদিও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, ট্রাম্প বা টেসলা কর্ণধার, কেউই অটোয়ার কুর্সিতে থাকা জাস্টিনকে সহ্য করতে পারেন না।
১৪২০
এর আগে কানাডা প্রশাসনের বাক্স্বাধীনতার পদ্ধতি নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন মাস্ক। অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে ট্রুডো প্রশাসনের তত্ত্বাবধানের বিশেষ নিয়ম নিয়ে আপত্তি রয়েছে টেসলা কর্তার।
১৫২০
আগামী বছরের (২০২৫) জানুয়ারিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় বার শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, তিনি কুর্সিতে বসার পর বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন ট্রুডো।
১৬২০
কানাডার অর্থনীতি পুরোপুরি আমেরিকার উপর নির্ভরশীল। দেশটির রফতানি করা পণ্যের ৭৫ শতাংশই কিনে থাকে ওয়াশিংটন। ট্রাম্প জমানায় দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অন্য খাতে বইতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
১৭২০
নির্বাচনী প্রচারে আমদানিকৃত সামগ্রীর উপর ১০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা বলেছেন ট্রাম্প। এর ফলে কানাডার অর্থনীতির কোমর ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই সেখানকার শীর্ষ আধিকারিকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
১৮২০
এ বছরের সেপ্টেম্বরে ‘সেভ আমেরিকা’ নামের একটি চিত্র পুস্তক প্রকাশ করেন ট্রাম্প। সেখানে ট্রুডোর মায়ের সঙ্গে কমিউনিস্ট কিউবার প্রায়ত স্বৈরশাসক ফিদেল কাস্ত্রোর সম্পর্ক রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। কানাডা সরকার অবশ্য ট্রাম্পের এই তত্ত্বকে পুরোপুরি খারিজ করে দিয়েছে।
১৯২০
এ বারের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে খোলাখুলি ভাবে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন করেন মাস্ক। ট্রাম্পের জন্য নির্বাচনী প্রচারে লক্ষ কোটি ডলার খরচ করেছেন তিনি। সেই ভোট শেষ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই জার্মানিতেও ওলাফ স্কোলজ সরকারের পতন হয়।
২০২০
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, জার্মান চ্যান্সেলার স্কোলজকে কিছু দিন আগে ‘মূর্খ’ বলেছিলেন মাস্ক। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, তাঁর হাত ধরেই দ্বিতীয় বার ওয়াশিংটনের ‘শ্বেত প্রাসাদ’-এ (হোয়াইট হাউস) পা রাখতে চলেছেন ট্রাম্প। আর তাই ‘অপছন্দের’ ট্রুডো সরকারকে ফলতে গোপনে মাস্ক কলকাঠি নাড়তে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে।