Eight month after bali, govt confirms modi and Xi spoke on need to stabilise relations dgtl
PM Narendra Modi
চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন মোদী, বৈঠকের আট মাস পর কেন এই ঘোষণা দিল্লির?
জি২০ সম্মেলনের একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছিল জিনপিংয়ের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন মোদী। মুখে স্মিত হাসি। সে সময় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, ওই সাক্ষাৎ ছিল নেহাতই সৌজন্যমূলক।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৩ ০৮:৩৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
গত নভেম্বরে বালিতে হয়েছিল জি২০ সম্মেলন। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের করমর্দনের একটি ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়। সে সময় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, ওই সাক্ষাৎ ছিল নেহাতই সৌজন্যমূলক। ওই ঘটনার আট মাস পর সেই সাক্ষাৎ নিয়ে অন্য কথা জানিয়েছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। কেন, তা নিয়ে রয়েছে বেশ কিছু প্রশ্ন।
০২১৬
জি২০ সম্মেলনের একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছিল জিনপিংয়ের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন মোদী। মুখে স্মিত হাসি। এর পরেই ক্যামেরা অন্য দিকে ঘুরে যায়। ২০২০ সালের মে মাসে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) দুই দেশের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর এই প্রথম চিনের প্রেসিডেন্ট এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে মুখোমুখি দেখা গিয়েছিল।
০৩১৬
সে সময় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, জি২০ সম্মেলনের শেষে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রপ্রধানের সাক্ষাৎ ছিল নেহাতই সৌজন্যমূলক। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন। সেই নৈশভোজের শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট মুখোমুখি হয়েছেন। সৌজন্য বিনিময় হয়েছে দু’জনের।
০৪১৬
তার পর কেটে গিয়েছে আট মাস। চলতি সপ্তাহের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার একটি সম্মেলন ছিল। সেখানে চিনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং য়ির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের।
০৫১৬
এর পরেই চিনের বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করে। তারা জানায়, ‘‘গত বছরের শেষে বালিতে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছয়।’’
০৬১৬
এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচীকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘গত বছর জি২০ সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের আয়োজিত নৈশভোজ শেষে প্রধানমন্ত্রী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সৌজন্য বিনিময় করেন। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।’’
০৭১৬
বাগচী আরও বলেন, ‘‘ভারত-চিন সীমান্তের পশ্চিমাংশে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সমস্যা সমাধানই আমাদের সব সময়ের চেষ্টা। রেজ়োলিউশনের জন্য সীমান্ত এলাকায় শান্তি এবং স্থিতাবস্থা ফেরানো প্রয়োজন।’’
০৮১৬
প্রশ্ন উঠছে, সে সময় বিদেশ সচিব দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সাক্ষাতের বিষয়ে এই প্রসঙ্গের উল্লেখ করেননি কেন? এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচীকেও।
০৯১৬
বাগচী বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, বিদেশ সচিব এই বিষয়টির উল্লেখ করেছিলেন। হয়তো দ্বিতীয় অংশের উল্লেখ করেননি। তিনি সৌজন্য বিনিময়ের কথা বলেছিলেন। আমার মনে হয়, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করা এবং তাকে কী ভাবে আমরা দেখছি, এই বিষয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছিল।’’
১০১৬
আট মাস পর কেন সে দিনের সেই দুই রাষ্ট্রপ্রধানের কথাবার্তার বিষয়টি স্বীকার করল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরছে দিল্লির অন্দরে। মনে করা হচ্ছে, নয়াদিল্লিতে জি২০ সম্মেলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে কেন্দ্র।
১১১৬
সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে জি২০ সম্মেলন। সেখানে আমন্ত্রিত চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তাঁর ভারতে আসার সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রকের একাংশ।
১২১৬
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বাগচীর কথাতেও তার ইঙ্গিত রয়েছে। তিনি জি২০ সম্মেলন প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘জি২০ বৈঠকের আর বেশি দিন বাকি নেই। আমরা সব রকম চেষ্টা করছি এবং প্রস্তুতি নিচ্ছি, যাতে আমন্ত্রিত সব নেতা অংশগ্রহণ করেন।’’
১৩১৬
বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্রের খবর, শি জিনপিং ভারতে জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে এলে আবারও প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকে বসতে পারেন।
১৪১৬
কিন্তু তার পরেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, বালিতে প্রধানমন্ত্রী এবং চিনের প্রেসিডেন্টের আলোচনার বিষয়টি কেন দুই দেশই এত দিন চেপে গিয়েছিল। যেখানে ২০২০ সালের মে মাসে গালওয়ানে সংঘর্ষের পর সেই প্রথম মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই দেশের প্রধান।
১৫১৬
ওই সাক্ষাতের পর দুই দেশের মধ্যে সামরিক স্তরে একাধিক বৈঠক হলেও সীমান্ত-বরফ গলেনি। পাশাপাশি চিনের সাংবাদিকদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে চায়নি ভারত। পাল্টা চিন সে দেশে এক জন ভারতীয় সাংবাদিককেই অনুমোদন দিয়েছে।
১৬১৬
এ সব টানাপড়েনের মধ্যেই আপাতত দুই দেশের নজর সেপ্টেম্বরে জি২০ সম্মেলনের দিকে। আর সে কারণেই ‘পুরনো কাসুন্দি’ ঘাঁটা হল, প্রকাশ্যে আনা হল দুই রাষ্ট্রপ্রধানের পুরনো আলোচনার কথা। এমনটাই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রকের একাংশ।