Earth has received a laser transmission from deep space dgtl
laser transmission
২২ কোটি কিমি দূরে মহাকাশের গভীর থেকে পৃথিবীতে সঙ্কেত! কে পাঠিয়েছিল বার্তা?
নাসার সাইকি মহাকাশযানটি পাঠানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল গ্রহাণুর সম্পদকে পর্যবেক্ষণ করা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:১৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সৌরজগতে এমন অগুনতি গ্রহাণু আছে যাদের সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য মানুষের কাছে এসে পৌঁছয়নি। তেমনই এক স্বল্পখ্যাত গ্রহাণু ‘সাইকি’। মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মাঝে থাকা বড় মাপের এই গ্রহাণুটি ১৮৫২ সালে আবিষ্কার করেন ইটালির জ্যোতির্বিদ অ্যানিবেলে ডি গ্যাসপারিস।
০২১৫
সম্প্রতি সেই গ্রহাণুটিকে ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে। গ্রহাণুটিকে ভাল ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য গত বছর অক্টোবরে একটি নভোযান পাঠায় নাসা। ওই গ্রহাণুর নাম থেকেই নাসা তাদের নভোযানের নাম দিয়েছে সাইকি।
০৩১৫
২০২৯ সালের অগস্ট মাসে গ্রহাণুটির কাছাকাছি পৌঁছনোর কথা সেই মহাকাশযানের। আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার দাবি, সম্প্রতি এই নভোযান সাইকি থেকে পৃথিবীতে আসছে রহস্যময় লেজ়ার সঙ্কেত।
০৪১৫
মহাকাশের গভীর থেকে সেই সঙ্কেত ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে মহাকাশ সংস্থা নাসা। পৃথিবী থেকে আনুমানিক ২২ কোটি ৫৩ লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করা নাসার মহাকাশযান সাইকি থেকে লেজ়ারের মাধ্যমে সঙ্কেত এসেছে বলে নাসা জানিয়েছে।
০৫১৫
নাসার সাইকি মহাকাশযানটি পাঠানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল গ্রহাণুর সম্পদকে পর্যবেক্ষণ করা। মহাকাশে দীর্ঘ দূরত্বে লেজ়ার যোগাযোগ সম্ভব করার জন্য এই মহাকাশযানটিতে শক্তিশালী ‘ডিপ স্পেস অপটিক্যাল কমিউনিকেশনস’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি চলতি অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থার চেয়ে অনেকাংশেই উন্নত বলে মনে করা হয়।
০৬১৫
এই পদ্ধতিতে দ্রুত মহাকাশের গভীর থেকে লেজ়ার রশ্মির মাধ্যমে যোগাযোগ করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। নাসার বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, তাঁদের এই পরীক্ষা সফল হলে বর্তমানে মহাকাশে যোগাযোগে যে সব পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তার তুলনায় অনেক সহজে যোগাযোগ করা যাবে।
০৭১৫
লেজ়ারটি প্রথাগত রেডিয়ো তরঙ্গ ব্যবস্থার ১০ থেকে ১০০ গুণ গতিতে তথ্য পাঠাতে পারে। সাধারণত গভীর মহাকাশে মহাকাশযান যখন পৃথিবীতে সঙ্কেত পাঠায়, তখন তাদের ব্যান্ডউইথ সীমিত থাকে। প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ তথ্য পাঠানো যায় তাকে ব্যান্ডউইথ বা ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড বলা হয়।
০৮১৫
যে উদ্দেশ্যে সাইকিকে পাঠানো হয়েছে, সেই পরিকল্পনা সফল হয়েছে বলে নাসা জানিয়েছে। পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝের দূরত্বের প্রায় দেড় গুণ দূরত্ব, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ২২ কোটি কিমি দূর থেকে লেজ়ার রশ্মির মাধ্যমে পৃথিবীতে সফল ভাবে তথ্য প্রেরণ করেছে সাইকি নামের মহাকাশযানটি।
০৯১৫
এই অভিযানের দায়িত্বে রয়েছেন মীরা শ্রীনিবাসন। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ১০ মিনিট ধরে লেজ়ার রশ্মির মাধ্যমে মহাকাশযান থেকে প্রতিলিপি করা কিছু তথ্য এসেছিল পৃথিবীতে। পাশাপাশি প্রথাগত পদ্ধতি অনুসরণ করে বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে নভোযানের প্রকৃত তথ্য নাসার গ্রাউন্ড স্টেশনে পাঠানো হয়।
১০১৫
দু’টি তথ্য তুলনা করে দেখা যায়, লেজ়ার রশ্মি ব্যবহার করে সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ২৬৭ মেগাবাইট তথ্য প্রেরণ করা সম্ভব। মহাকাশযান এখন অনেক দূরে থাকায় তথ্য প্রেরণের হার কম বলে জানিয়েছে নাসা।
১১১৫
এপ্রিল মাসে এই পরীক্ষার সময় সাইকো মহাকাশযানটি প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ২৫ মেগাবাইট তথ্য প্রেরণ করতে সফল হয়েছে। মহাকাশে এই পরিমাণ দূরত্বে সেকেন্ডে কমপক্ষে ১ মেগাবাইট তথ্য প্রেরণ সম্ভব কি না, সেটা দেখাই ছিল পরীক্ষাটির উদ্দেশ্য।
১২১৫
এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় গ্রহাণুগুলির মধ্যে ১৬ সাইকি অন্যতম। গ্রহাণুটির গড় ব্যাস প্রায় ২২০ কিলোমিটার। গ্রিক দেবী ‘সাইকি’র নামে গ্রহাণুটির নামকরণ করা হয়েছে।
১৩১৫
১৬ সাইকির প্রায় সমগ্র অংশ লোহা এবং নিকেল দিয়ে তৈরি। গ্রহাণুটির বেশ কিছু অংশ সোনা দিয়ে তৈরি বলেও দাবি করেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।
১৪১৫
নাসা মনে করছে, ১৬ সাইকিতে যে লোহা এবং নিকেল রয়েছে, তার ঘনত্ব পৃথিবীতে পাওয়া লোহা এবং নিকেলের ঘনত্বের থেকে বেশি।
১৫১৫
১৬ সাইকির জন্ম নিয়ে মতান্তর রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়, ব্রহ্মাণ্ডের কোনও নক্ষত্র ধ্বংস হয়ে গ্রহাণুটির জন্ম হয়েছে। তবে এ নিয়ে আরও মতামত রয়েছে।