Donald henry gaskins American serial killer rapist dgtl
Henry Gaskins
অন্তঃসত্ত্বাকে মেরে তাঁর দু'বছরের মেয়েকে ধর্ষণ! ৮০ জনকে খুন করেন এই সিরিয়াল কিলার
নিজে জানিয়েছিলেন, অন্তত ৮০ জনকে খুন করেছেন। দু’বছরের শিশুকে পর্যন্ত ধর্ষণ করেছিলেন। সেই ডোনাল্ড হেনরি গ্যাসকিনসের অপরাধের বীজ লুকিয়ে তাঁর ছোটবেলায়।
সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটনশেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:০৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
দক্ষিণ ক্যারোলাইনার ইতিহাসে তাঁর থেকে ভয়ঙ্কর অপরাধী আর নেই। সিরিয়াল কিলিং, ধর্ষণ এমনকি মানুষের মাংস খাওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি ডোনাল্ড গেনরি গ্যাসকিনস। ১১ বছর বয়সেই অপরাধে যাঁর হাতেখড়ি।
০২২৪
উচ্চতা পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চি। রোগাসোগা গড়ন। সাদামাটা দেখতে। এ হেন গ্যাসকিনসকে দেখে কেউ ভাবতেই পারতেন না যে, তিনি এত জনকে খুন করেছেন। যে তালিকায় রয়েছে শিশুও।
০৩২৪
গ্যাসকিনসের নিশানায় থাকতেন মূলত কমবয়সি মহিলারা। তদন্তকারীরা মনে করেন, এর কারণ লুকিয়ে রয়েছে তাঁর ছেলেবেলায়।
০৪২৪
ছোট থেকে গ্যাসকিনস দেখতেন, মাকে মারধর করছেন সৎবাবা। তাঁকেও মারতেন সৎবাবা। সে সব থেকেই অপরাধের দিকে ঝোঁক।
০৫২৪
জন্মের পর থেকেই গ্যাসকিনসকে ভালবাসতেন না মা। তেমন দেখভালও করতেন না। এক বছর বয়সে এক বার কেরোসিন খেয়ে ফেলেছিলেন গ্যাসকিনস। কোনও মতে প্রাণে বেঁচেছিলেন। সবটাই হয়েছিল তাঁর মায়ের গাফিলতির কারণে।
০৬২৪
ওই ঘটনা থেকে বেঁচে উঠলেও দীর্ঘ দিন খিঁচুনি হত গ্যাসকিনসের। সে সব কারণে তাঁর ছোটবেলা আর পাঁচ জনের মতো ছিল না।
০৭২৪
গ্যাসকিনস কোনও দিন জানতেই পারেননি তাঁর আসল বাবা কে। মা-ও ভালবাসতেন না। ছোট থেকে মায়ের প্রেমিকরা এসে মারধর করতেন তাঁকে। সেই থেকেই কমবয়সি মহিলাদের প্রতি ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল তাঁর মনে।
০৮২৪
নিজের নামটাই গোটা ছোটবেলায় শোনেননি গ্যাসকিনস। একাধিক অপরাধ করে আদালতের কাঠগড়ায় এসে যখন দাঁড়িয়েছিলেন, তখন প্রথম বার নিজের নাম শুনেছিলেন।
০৯২৪
বেঁটেখাটো চেহারার জন্য সকলে তাঁকে ডাকতেন ‘পি উই’ বলে। স্কুলের ছেলেরা ঠাট্টা করত। ১১ বছর বয়সে তাই স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।
১০২৪
স্কুল ছাড়ার পর একটি গ্যারেজে কাজে যোগ দিয়েছিলেন গ্যাসকিনস। সেখানে তাঁর মতো আরও দুই স্কুলছুট ছেলের সঙ্গে আলাপ হয়। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তিন জন মিলে এর পর নাম লেখান অপরাধের জগতে। দলের নাম ছিল ‘দ্য ট্রাবল ট্রায়ো’।
১১২৪
ওই কম বয়সেই গ্যাসকিনস ও দুই সঙ্গী মিলে একাধিক ধর্ষণ, ডাকাতি করে ফেলেছিলেন। ছোট ছোট ছেলেদেরও ধর্ষণ করতেন তাঁরা।
১২২৪
১৩ বছর বয়সে একটি বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়েছিলেন গ্যাসকিনস। ধরে ফেলে ছোট্ট একটি মেয়ে। মেয়েটির মাথায় কুঠার দিয়ে আঘাত করেন তিনি। এর পর পালিয়ে যান। মেয়েটি কোনও মতে প্রাণে বাঁচে। সে-ই শনাক্ত করে গ্যাসকিনকে।
১৩২৪
১৯৪৬ সালের ১৮ জুন গ্যাসকিনসকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। তাঁকে জুভেনাইল হোমে পাঠানো হয়। সেখানে ১৮ বছর পর্যন্ত থাকার কথা ছিল গ্যাসকিনসের।
১৪২৪
জুভেনাইল হোমে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখে পড়েছিলেন গ্যাসকিনস। সেখানে তাঁকে ২০ জন ছেলে গণধর্ষণ করে। এর পর গ্যাসকিনসকে সহবাসের সঙ্গী করতে চান হোমে আবাসিকদের ‘নেতা’। প্রতিশ্রুতি দেন, তাঁর সঙ্গে নিয়মিত সহবাস করলে বাকিদের থেকে বাঁচাবেন গ্যাসকিনসকে।
১৫২৪
বার বার জেল থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন গ্যাসকিনস। সফলও হয়েছিলেন এক বার। পালিয়ে গিয়ে ১৩ বছরের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন গ্যাসকিনস। তার পর নিজেই হোমে ফিরে আসেন। ১৮ বছর পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন।
১৬২৪
হোম থেকে বেরিয়ে একটি তামাক কারখানায় কাজ নিয়েছিলেন গ্যাসকিনস। কিছু দিনের মধ্যেই সেখান থেকে কাঁচামাল সরিয়ে অন্য জায়গায় বিক্রি করা শুরু করেন।
১৭২৪
গ্যাসকিনসের চেহারা নিয়ে ঠাট্টা করেছিল এক কিশোরী। রাগে হাতুড়ি দিয়ে তার মাথা দু’ভাগ করে দেন তিনি।
১৮২৪
এর পর ফের জেলে যান গ্যাসকিনস। সেখানে আবারও যৌন হেনস্থার শিকার হন। এ বার আর সহ্য করেননি। এক সহবন্দিকে গলা কেটে খুন করেন। তার পর থেকে জেলে সকলে সমঝে চলতেন গ্যাসকিনসকে।
১৯২৪
২০ বছর ধরে বহু বার জেলে গিয়েছেন, বেরিয়েছেন। বিভিন্ন অপরাধে। ছ’মাস একা একটি কুঠুরিতেও কাটিয়েছিলেন ভয়ঙ্কর এক খুনের অপরাধে।
২০২৪
সব থেকে ভয়াবহ অপরাধটি গ্যাসকিনস করেছিলেন ১৯৭০ সালে। এক যৌনকর্মীর কাছে গিয়েছিলেন। গ্যাসকিনসের চেহারা দেখে হেসেছিলেন সেই যৌনকর্মী। তরুণীকে ভয়ঙ্কর মারধর করেছিলেন তিনি। তাতে জ্ঞান হারান ওই যৌনকর্মী। ওই অবস্থায় তাঁর উপর চলে যৌন অত্যাচার। অস্বাভাবিক উপায়ে যৌন সংসর্গ করেছিলেন গ্যাসকিনস। দিনের পর দিন চলে অত্যাচার। শেষে খুন। সারা জীবন সে কথা ভুলতে পারেননি বলে নিজেই জানান গ্যাসকিনস।
২১২৪
১৯৭০ সালের নভেম্বরে নিজের ১৫ বছরের ভাগ্নি এবং তাঁর বন্ধুকে ধর্ষণ করে খুন করেছিলেন গ্যাসকিনস।
২২২৪
১৯৭৫ সালে গ্যাসকিনস নিজেই জানিয়েছিলেন, অন্তত ৮০ জনকে খুন করেছিলেন তিনি। সন্তানসম্ভবা এক মহিলাকে জলে ডুবিয়ে খুন করে তাঁর দু’বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করেছিলেন।
২৩২৪
গ্যাসকিনসের পুরনো এক সহযোগী এর পর ধরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁকে। ওয়াল্টার নিলি নামে ওই ব্যক্তি গ্যাসকিনসের হাতে নিহতদের দেহ লোপাট করতেন। ১৯৭৬ সালের ২৬ এপ্রিল গ্রেফতার হন গ্যাসকিনস।
২৪২৪
১৯৯১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর গ্যাসকিনসের ফাঁসি হয়। পুলিশ মনে করে, তাঁর হাতে খুন হওয়া বহু মেয়ের দেহ এখনও পোঁতা রয়েছে দক্ষিণ ক্যারোলাইনার জঙ্গলে।