Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
The American Dream

দিনে ১৯ ঘণ্টা কাজের ফাঁকে ব্যবসায় পা, পতনের আগে ৮০০ দোকানের মালিক ছিলেন কোরীয় কোটিপতি

২০১৬ সালের অক্টোবরে আমেরিকার একটি পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধনসম্পত্তির বিচারে আমেরিকার প্রথম ৪০০ জনের মধ্যে ২২২ নম্বরে ছিলেন চ্যাং দম্পতি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
লস অ্যাঞ্জেলস শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ১৭:২২
Share: Save:
০১ ১৯
Image of Do Won Chang and Jin Sook Chang

স্কুলে পড়ার সময় থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, পাড়ি দেবেন আমেরিকায়। ২২ বছরে তেমনটাই করেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ডু ওন চ্যাং। তবে একা নন, সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী।

০২ ১৯
Representational image of clothes

আশির দশকের গোড়ায় আমেরিকায় পা রাখার পর একে একে অনেক স্বপ্নপূরণ হয়েছিল চ্যাংয়ের। একাধিক চাকরিতে দিনে ১৯ ঘণ্টার কায়িক শ্রমের ফাঁকে ব্যবসা শুরু করেন। স্ত্রীর সঙ্গে মিলে নিজের ফ্যাশন রিটেল ব্র্যান্ড গড়ে তোলেন।

০৩ ১৯
Image of Do Won Chang and Jin Sook Chang

এক সময় আমেরিকার অভিবাসী কোটিপতিদের তালিকায় প্রথম সারিতে ছিলেন চ্যাং। তবে উত্থানের সঙ্গে পতনের সাক্ষীও হন এই দম্পতি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিজেদের সে কাহিনি শুনিয়েছেন চ্যাং।

০৪ ১৯
Image of US flag

১৯৮১ সালে স্ত্রীর সঙ্গে আমেরিকার মাটিতে পা রাখেন চ্যাং। জিন সুকের সঙ্গে তখন সবে বিয়ে হয়েছে তাঁর। নবদম্পতি নেমেছিলেন লস অ্যাঞ্জেলস বিমানবন্দরে। তার আগে অবশ্য হাওয়াই ঘুরে এসেছিলেন।

০৫ ১৯
Image of Do Won Chang

একটি পত্রিকায় চ্যাং জানিয়েছিলেন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই তাঁর ‘স্বপ্নের দেশ আমেরিকায়’ যাওয়ার কথা ভাবতেন। মা-বাবার কাছে সে বায়না করলে প্রতি বারই এড়িয়ে যেতেন তাঁরা। তবে আশ্বাস দিতেন, ‘পরের মাসে তাঁকে আমেরিকায় নিয়ে যাবেন’।

০৬ ১৯
Image of Do Won Chang, Jin Sook Chang and his family

মা-বাবার ভরসায় থেকে ২২ বসন্ত পার করার পর এক দিন সদ্যবিবাহিত সুকের সঙ্গে আমেরিকার দিকে রওনা হন চ্যাং। লস অ্যাঞ্চেলসে তাঁর এক বোন থাকতেন। ভিন্‌দেশে গিয়ে গোড়ায় তাঁর উপরে ভরসা ছিল চ্যাংয়ের।

০৭ ১৯
Image of Do Won Chang

রাজনৈতিক ভাবে টালমাটাল অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়া ছেড়েছিলেন তিনি। ১৯৮১ সালে সামরিক শাসক পার্ক চুং-হি হত্যাকাণ্ডের পর দেশে সামরিক শাসন প্রত্যাহার করা হয়েছিল। সে বছরের মার্চে দেশের পঞ্চম প্রজাতন্ত্র গঠন করেন চু ডু-হওয়ান। ঘটনাচক্রে তিনি ছিলেন পার্কের সহযোগী।

০৮ ১৯
Image of Do Won Chang and Jin Sook Chang

লস অ্যাঞ্জেলসে কোনও এক শনিবার পা রেখেছিলেন চ্যাং দম্পতি। এক দিনের মধ্যেই গ্রিন কার্ড জুটিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তবে কী ভাবে সেই অসাধ্যসাধন করেন, তা খোলসা করেননি।

০৯ ১৯
Image of coffee

আমেরিকায় পা রাখার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চাকরি খুঁজতে শুরু করেছিলেন চ্যাং। দু’দিনের মধ্যে একটি স্থানীয় কফিশপে কাজ জুটে যায়। সোমবার সকাল থেকে কফিশপের বাসনপত্র ধোয়ার কাজ।

১০ ১৯
Representational picture of office cleaning

চ্যাং বলেন, ‘‘ঘণ্টায় ৩ ডলার (আজকের দিনে ভারতীয় মুদ্রায় যার অর্থমূল্য প্রায় ২৪৭ টাকা) রোজগার হত। যা যথেষ্ট ছিল না।’’ ওই কাজের সঙ্গে পেট্রল পাম্পের কর্মী হিসাবে উপরি রোজগার শুরু করেন তিনি। তাঁর ফাঁকে শুরু করেন অফিস পরিষ্কার করার ব্যবসা।

১১ ১৯
Image of Do Won Chang

দু’টি চাকরির পর মাঝরাত পর্যন্ত সে ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকতেন চ্যাং। সংসার টানতে একটি বিউটি পার্লারে কাজ নিয়েছিলেন স্ত্রী। বছর তিনেক এ ভাবেই কেটেছিল। সংসার খরচ সামলে রোজগার থেকে জমানো ১১,০০০ ডলারে এ বার নতুন ব্যবসা শুরু করেন চ্যাং দম্পতি।

১২ ১৯
Image of fashionable clothes

১৯৮৪ সালে লস অ্যাঞ্জেলসে ৯০০ বর্গফুটের একটি জামাকাপড়ের দোকান খুলেছিলেন চ্যাং এবং সুক। নাম রেখেছিলেন, ‘ফ্যাশন ২১’। তত দিনে কাপড়ের দোকানেও কাজ করে ফেলেছিলেন চ্যাং। তিনি জানিয়েছেন, সেই দোকানে এমন ভাবে কাজ করতেন, যেন সেটি নিজের ব্যবসা। ওই দোকান থেকেই সস্তায় কেতাদুরস্ত পোশাকের ব্যবসা করার কথা মাথায় এসেছিল চ্যাংয়ের।

১৩ ১৯
Image of clothes

জামাকাপড়ের যে দোকানটি কিনে ব্যবসায় নামেন চ্যাং, সেটির বার্ষিক বিক্রি ছিল ৩০,০০০ ডলার। তবে ‘ফ্যাশন ২১’ শুরুর বছরেই তার বিক্রি হয়েছিল ৭০,০০০ ডলার।

১৪ ১৯
Image of Do Won Chang and Jin Sook Chang

মধ্যস্থতাকারীদের বদলে কাঁচামালের জোগানদারদের থেকে সরাসরি লেনদেন করতেন চ্যাং। ফলে তাতে বিপুল ছাড় পেতেন। ব্যবসা শুরুর পর প্রতি ছ’মাসে একটি করে দোকান খোলা শুরু করেছিলেন চ্যাং দম্পতি। নিজের তত দিনে ব্র্যান্ডের নাম বদলে করেন ‘ফরেভার ২১’।

১৫ ১৯
Image of Forever 21 store

‘ফরেভার ২১’-এর হাত ধরেই সাফল্যের মুখ দেখেছিলেন চ্যাং দম্পতি। চ্যাংয়ের ব্যবসায়িক বুদ্ধির সঙ্গে মিশেল ছিল ফ্যাশন নিয়ে সুকের চিন্তাভাবনা। ২০১৬ সালের অক্টোবরে আমেরিকার একটি পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধনসম্পত্তির বিচারে আমেরিকার প্রথম ৪০০ জনের মধ্যে ২২২ নম্বরে ছিলেন এই দম্পতি।

১৬ ১৯
Image of forever 21 store

এককালে চ্যাং দম্পতির হয়ে কাজ করতেন ৪৩ হাজার কর্মী। দেশ-বিদেশে তাঁদের দোকানের সংখ্যা ছিল ৭৯০। ২০১৬ সালে চ্যাং এবং সুকের মিলিত সম্পত্তি ছিল ২,৪৭২ কোটির টাকা।

১৭ ১৯
Image of computer

চ্যাং দম্পতির সুখের সময় অবশ্য বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। নানা কারণে তাঁদের ব্যবসায় পড়তির দিকে এগোচ্ছিল। অনলাইনে কেতাদুরস্ত জামাকাপড় হাতের নাগালে পেয়ে যাওয়ায় ক্রেতারা সে দিকেই মুখ ঘুরিয়েছিলেন।

১৮ ১৯
Image of Do Won Chang with family

২০১৯ সালের মধ্যে চ্যাং দম্পতির ব্যবসা খাদে তলিয়ে যায়। ওই বছরই ১৬০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছিল ‘ফরেভার ২১’। জুলাইয়ে চ্যাং দম্পতির থেকে কোটিপতি তকমাও চলে যায়। সে বছরের সেপ্টেম্বরে দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা।

১৯ ১৯
Image of Do Won Chang and Jin Sook Chang

শেষমেশ ‘ফরেভার ২১’-কে অথেনটিক ব্র্যান্ড গোষ্ঠীর কাছে ৮ কোটি ১ লক্ষ ডলারে বিক্রি করতে বাধ্য হন চ্যাং দম্পতি। ব্যবসা হারালেও হাই স্কুল পর্যন্ত পড়াশোনা করা চ্যাং এবং তাঁর স্ত্রীর কাহিনি আজও শিরোনাম কাড়ে।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy