Diamond found in many district in Andhra Pradesh during Monsoon dgtl
Diamond
মাটি খুঁড়লেই মেলে কোটি কোটির হিরে! বর্ষা এলে অন্ধ্রপ্রদেশে শুরু হয় হিরে খোঁজার মরসুম
বর্ষা এলেই রায়লসীমা-সহ অন্ধ্রের নানা এলাকায় হিরে খোঁজার ‘মরসুম’ শুরু হয়ে যায়। সংবাদমাধ্যমের দাবি, ২০২১ সালে জন্নাগিরি গ্রামে ২ কোটি ৪ লক্ষ টাকার হিরে খুঁজে পেয়েছিলেন তিন জন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
বিশাখাপত্তনমশেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ ০৮:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
খরিফ মরসুম শুরুর আগে চাষের জমিতে কাজ করতে গিয়ে এক লহমায় ভাগ্য বদলে গিয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশের এক দিনমজুরের। জমিতে কোদাল চালাতেই হাতে উঠে এসেছিলে একটি হিরে। সেটি দু’কোটি টাকায় বিক্রি করেছিলেন তিনি।
০২১৬
অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল জেলার ওই অখ্যাত দিনমজুরের আগে এ ভাবেই ভাগ্য ফিরেছে বহু জনের। গ্রীষ্মের রুক্ষ জমিতে অঝোরে বৃষ্টি নামলেই নরম মাটি সরে গিয়ে বেরিয়ে পড়ে হিরে-সহ নানা দামি রত্ন। মূলত অন্ধ্রের অনন্তপুর এবং কুর্নুল জেলার মধ্যেকার এলাকায় হিরের খোঁজ মেলে।
০৩১৬
বর্ষা এলেই রায়লসীমা-সহ অন্ধ্রের নানা এলাকায় হিরে খোঁজার ‘মরসুম’ শুরু হয়ে যায়। সংবাদমাধ্যমের দাবি, ২০২১ সালে জন্নাগিরি গ্রামে ২ কোটি ৪ লক্ষ টাকার হিরে খুঁজে পেয়েছিলেন তিন জন।
০৪১৬
গত বছর একটি হিরে খুঁজে পাওয়ায় অন্ধ্রের এক কৃষিজীবীর ঘরে ঢুকেছিল ৪০ লক্ষ টাকা। আবার ৩০ ক্যারাটের হিরে মেলায় অন্য এক কৃষক ১ কোটি ৪ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন।
০৫১৬
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে একটি হিরের জন্য ৬০ লক্ষ টাকা পান এক কৃষক। পরের বছর অন্ধ্রের দুই বাসিন্দার ভাগ্যবদল হয়েছিল। দু’টি দামি রত্ন খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁরা। তবে সে দু’টি যথাক্রমে পাঁচ এবং ছ’লক্ষ অর্থমূল্যের হলেও নাকি মোটে দেড় লক্ষ এবং ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন তাঁরা।
০৬১৬
রায়লসীমা এলাকায় দামি রত্নের খোঁজ পাওয়া স্বাভাবিক বলে মনে করেন অনেকে। মধ্যযুগে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রমরমার সময় হিরে-জহরতের জন্য খ্যাতি ছিল রায়লসীমা অঞ্চলের। কথিত, সে আমলে শাক-সব্জি বিক্রির মতো হিরে-সহ নানা দামি রত্নের বিক্রিবাটা চলত হাম্পিতে।
০৭১৬
কালের নিয়মে দামি রত্নের কেনাবেচার ধরনে বদল এসেছে। তবে দশকের পর দশক ধরে কুর্নুল জেলার তুগ্গলি, জন্নাগিরি, মদ্দিকেরা এবং অনন্তপুরের বজ্রকরুর এলাকায় বর্ষাকালে ‘হিরের ফসল’ তোলেন বহু জন।
০৮১৬
অন্ধ্রের নানা প্রান্ত থেকে বর্ষায় এই এলাকাগুলিতে জড়ো হন হিরেশিকারিরা। স্থানীয়েরা ছাড়া পড়শি রাজ্য কর্নাটক, তেলঙ্গানা থেকেও রায়লসীমায় ভিড় করেন অনেকে।
০৯১৬
এই ভিড়ের মধ্যে হিরে ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন। হিরেশিকারিদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের রফা করানোর জন্য হাজির হয়ে যান মধ্যস্থতাকারীরাও।
তাঁদের কেউ এলাকায় তাঁবু খাঁটিয়ে রাত কাটান। অনেকে আবার আশপাশের হোটেল, লজ, অতিথিশালায় গিয়ে ওঠেন। ফলে হোটেল বা লজমালিকদের এই মরসুমে রমরমা ব্যবসা।
১২১৬
মূলত জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হিরের খোঁজে ভিড় করেন হাজার হাজার স্থানীয় এবং ভিন্রাজ্যের বাসিন্দারা।
১৩১৬
হিরে খোঁজার মরসুমে প্রশাসনের কড়াকড়ি বিশেষ দেখা যায় না। দামি রত্ন হাতে এলেই ব্যবসায়ীদের কাছে তা বিক্রির করানোর চেষ্টা শুরু করেন মধ্যস্থতাকারীরা। ফলে তাঁদের পাল্লায় পড়ে অনেক সময় বহুমূল্য রত্নও বেশ কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন হিরের খোঁজে আসা মানুষজন।
১৪১৬
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জন্নাগিরি গ্রামের এক বাসিন্দার দাবি, চাষের জমিতে একটি হিরে খুঁজে পেয়েছিলেন। তবে পুলিশ-প্রশাসনের থেকে হেনস্থার ভয়ে এবং নিজের সুরক্ষার কথা ভেবে সেটি দেড় কোটি টাকায় বিক্রি করেন। তাঁর সন্দেহ, ওই হিরের দাম আরও বেশি।
১৫১৬
ওই বাসিন্দার আরও দাবি, হিরে বিক্রির পর পুলিশকে ৬ লক্ষ এবং রাজস্ব দফতরকে ৪ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। বাকি টাকায় তাঁর যাবতীয় ঋণ শোধ করেছেন।
১৬১৬
বর্ষার মরসুমেই অন্ধ্রের জমিতে হিরে ‘ফলে’ কেন? তার কারণ খুঁজতে অন্ধ্রের মাটিতে কোনও গবেষণা হয়নি। তবে একমাত্র বৃষ্টির মরসুমেই জমির উপরে উঠে আসে দামি পাথরগুলি। খনি বিশেষজ্ঞ এবং ভূতত্ত্ববিদদের মতে, এই এলাকাগুলিতে সরকারি উদ্যোগে গবেষণা চালানো উচিত।