Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Murder

শ্রদ্ধা-মেঘা-নিক্কি হত্যাকাণ্ড: তিন কন্যারই কাল হল ডেটিং অ্যাপ

নিক্কি যাদব হত্যাকাণ্ড স্মৃতি উস্কে দিয়েছে রাজধানীর বুকে আরও কয়েকটি নৃশংস খুনের ঘটনার। যে তালিকায় রয়েছে শিউরে ওঠার মতো শ্রদ্ধা ওয়ালকর এবং মেঘা থোরভি হত্যাকাণ্ড।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:১২
Share: Save:
০১ ২০
Horrific Murder Case

নিক্কি যাদব হত্যাকাণ্ড নিয়ে শোরগোল চলছে দিল্লিতে। আর এই হত্যাকণ্ডই স্মৃতি উস্কে দিয়েছে রাজধানীর বুকে আরও কয়েকটি নৃশংস খুনের ঘটনার। যে তালিকায় রয়েছে দেশ জুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া শিউরে ওঠার মতো শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যাকাণ্ড।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

০২ ২০
Horrific Murder Case

নিক্কি যাদব এবং শ্রদ্ধা ওয়ালকর, এই দু’টি ঘটনার মধ্যে ব্যবধানও খুব একটি বেশি নয়। ৯ মাসের ব্যবধানে ঘটে যাওয়া এই দু’টি ঘটনাই এখন আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। নিক্কি খুনের সঙ্গে তুলনা শুরু হয়ে গিয়েছে শ্রদ্ধা ওয়ালকরের হত্যাকাণ্ডের। আরও একটি হত্যাকাণ্ড জুড়ে গিয়েছে এই তালিকায়, সেটি হল মেঘা থোরভি হত্যাকাণ্ড। আর এই তিন ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল প্রেমের সম্পর্কে, শেষ পরিণতি হত্যাকাণ্ডে।

প্রতীকী ছবি।

০৩ ২০
Nikki Murder Case

২০২৩, ১০ জানুয়ারি। গোপন সূত্রে দিল্লি পুলিশ খবর পায়, লিভ ইন সঙ্গীকে খুন করে সেই দেহ ধাবার ফ্রিজে লুকিয়ে রেখেছেন এক ব্যক্তি। সেই খবর পেয়েই শহরের বাইরে মিত্রাঁও গ্রামে হানা দিয়ে এক তরুণীর দেহ ফ্রিজ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। যে ঘটনা এখন গোটা রাজধানীর আলোচ্য বিষয়।

ছবি: সংগৃহীত।

০৪ ২০
Nikki Murder Case

প্রেম, লিভ ইন, অন্য সম্পর্কে জড়ানো, তার পর খুন— শ্রদ্ধা এবং নিক্কির ঘটনার মধ্যে অনেকটাই মিল খুঁজে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তবে শ্রদ্ধা ওয়ালকরের লিভ ইন সঙ্গী আফতাব পুনাওয়ালার একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। অন্য দিকে, নিক্কির খুনে অভিযুক্ত সাহিল গহলৌতের আর কোনও সম্পর্ক ছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, অন্য মেয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার বিষয়টি মানতে পারেননি নিক্কি। দু’জনের মধ্যে বচসা হয়। তার পরই নিক্কিকে সাহিল খুন করেন বলে অভিযোগ।

ছবি: সংগৃহীত।

০৫ ২০
Nikki Murder Case

পুলিশ সূত্রে খবর, তিন বোনের মধ্যে নিক্কি কনিষ্ঠ। হরিয়ানার ঝঝ্ঝরের বাসিন্দা। নিক্কির বাবা সুনীল যাদবের গুরুগ্রামে একটি মোটর গ্যারাজ রয়েছে। ২০১৮ সালে পড়াশোনার সূত্রে দিল্লি চলে এসছিলেন নিক্কি। দ্বারকায় থাকাকালীন সাহিলের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। নিক্কি মেডিক্যাল প্রবেশিকার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অন্য দিকে, সাহিল প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্টাফ সিলেকশন কমিশনের পরীক্ষার। কিন্তু দু’জনেই পরীক্ষায় ব্যর্থ হন। তার পর দু’জনেই একসঙ্গে গালগোটিয়া কলেজে ভর্তি হন।

ছবি: সংগৃহীত।

০৬ ২০
Nikki Murder Case

দিল্লি পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১টা নাগাদ নিক্কি এবং সাহিল দেখা করেন। সাহিলের বাড়ি থেকে বার বার ফোন আসছিল। সাহিল যখন নিক্কিকে জানান, নিজের মর্জিতে বিয়ে করছেন, তখন নিক্কি কাঁদতে শুরু করেন। এর পর দু’জনে পালানোর পরিকল্পনা করেন। গোয়ার জন্য বিমানের টিকিট হয় নিক্কির। কিন্তু সাহিলের টিকিট না হওয়ায় গোয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে হিমাচল প্রদেশে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

ছবি: সংগৃহীত।

০৭ ২০
Nikki Murder Case

পুলিশ সূত্রে খবর, ৯ ফেব্রুয়ারি রাতেই নিক্কিকে নিয়ে সাহিল আনন্দ বিহারের বাসস্ট্যান্ডে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন যে, ওই বাস আইএসবিটি এবং কাশ্মীরি গেট হয়েই হিমাচল প্রদেশ যাবে। এর পর দু’জনে কাশ্মীরি গেটে যান। এর মধ্যেই সাহিলের বাড়ি থেকে ফোন আসে। তাঁকে দ্রুত ফেরার জন্য বলা হয়। এর পর সাহিল নিক্কিকে বাড়ি চলে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু নিক্কি যেতে চাননি। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমরা একসঙ্গে বাঁচার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। একসঙ্গে যখন বাঁচার উপায় নেই, একসঙ্গে তো মরতে পারি!” কিন্তু সাহিল নাকি আত্মহত্যায় রাজি ছিলেন না।

ছবি: সংগৃহীত।

০৮ ২০
Nikki Murder Case

বিষয়টি নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ১০ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টে নাগাদ আইএসবিটি পৌঁছে নিক্কিকে গাড়ির ভিতরেই মোবাইল ফোনের তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে সাহিল খুন করেন বলে অভিযোগ। এর পর সেই দেহ নিয়ে ৪০ কিলোমিটার গাড়িতে ঘোরেন। কোথায় দেহ লুকোবেন তা ভেবে না পেয়ে শেষমেশ নিজের গ্রাম মিত্রাওতে পৌঁছন। এখানেই সাহিলদের পারিবারিক ধাবা রয়েছে। সেই ধাবায় ফ্রিজের মধ্যে নিক্কির দেহ লুকিয়ে রাখেন।

প্রতীকী ছবি।

০৯ ২০
Nikki Murder Case

পুলিশ সূত্রে খবর, এর পরই সাহিল বিয়ে করতে যান। বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে নিক্কির দেহ লোপাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পুলিশের অনুমান, শ্রদ্ধা ওয়ালকরের মতোই নিক্কির দেহ টুকরো করে লোপাট করার ছক কষেছিলেন সাহিল।

ছবি: সংগৃহীত।

১০ ২০
Nikki Murder Case

পুলিশ সূত্রে খবর, দু’দিন ধরে নিক্কির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে না পেরে তাঁর বাবা সাহিলকে ফোন করে মেয়ের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। তখন সাহিল তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, নিক্কি ভ্রমণে গিয়েছেন। শুধু তাই-ই নয়, নিক্কির বাবাকে সাহিল জানিয়েছিলেন যে, সামনেই তাঁর বিয়ে, তাই নিক্কির সঙ্গে ভ্রমণে যাননি। সাহিল এটাও জানিয়েছিলেন যে, নিক্কি ভ্রমণে গেলেও ওঁর ফোন দিয়ে গিয়েছে তাঁকে। আর এখান থেকেই সন্দেহের সূত্রপাত।

ছবি: সংগৃহীত।

১১ ২০
Shraddha Murder Case

১৮ মে, ২০২২। শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর লিভ ইন সঙ্গী আফতাব পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে। ১২ নভেম্বর আফতাবকে গ্রেফতারের পর খুনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।

ছবি: সংগৃহীত।

১২ ২০
Shraddha Murder Case

পুলিশ সূত্রে খবর, একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আফতাবের সঙ্গে হামেশাই ঝামেলা হত শ্রদ্ধার। ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে শ্রদ্ধার সঙ্গে যে ভাবে আলাপ হয়, ঠিক একই রকম ভাবে একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন আফতাব। তাঁর সেই সম্পর্কে দিল্লি থেকে দুবাই পর্যন্ত ছড়ানো ছিল।

ছবি: সংগৃহীত।

১৩ ২০
Shraddha Murder Case

পুলিশ সূত্রে খবর, শ্রদ্ধাকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করেন আফতাব। তার পর তাঁর দেহ লোপাটের জন্য দেহ টুকরো করে কাটার ছক কষেন। সেই পরিকল্পনা মতো বাজার থেকে ধারালো অস্ত্র, করাত, হাতুড়ি কিনে নিয়ে আসেন আফতাব। তার পর শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করে কাটেন। ৩৫ টুকরো করেন সেই দেহ। তার পর প্রতি রাতে সেই টুকরো বিভিন্ন জায়গায় ফেলে এসেছিলেন। যদিও কোথায় কোথায় সেই টুকরো ফেলেছেন, সেই জায়গাগুলি আফতাব পুলিশকে জানানোর পরেও সেখান থেকে কোনও হাড়গোড় বা দেহাংশ উদ্ধার হয়নি।

ছবি: সংগৃহীত।

১৪ ২০
Shraddha Murder Case

চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, শ্রদ্ধার হাড়গোড় গুঁড়ো করার জন্য আফতাব মিক্সার গ্রাইন্ডার এনেছিলেন। তা ছাড়াও দেহ টুকরো করার যন্ত্রও এনেছিলেন অভিযুক্ত আফতাব।

ছবি: সংগৃহীত।

১৫ ২০
Shraddha Murder Case

চার্জশিটে পুলিশ আরও জানিয়েছে, যখনই আফতাবের বান্ধবী আসতেন, তখন ফ্রিজ থেকে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো, মাথা বার করে রান্নাঘরে রেখে আসতেন আফতাব। ফ্রিজ পরিষ্কার করে রাখতেন। আবার বান্ধবী চলে গেলে সেই দেহাংশ ফ্রিজে ভরে রাখতেন। শ্রদ্ধা ওয়ালকরের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড শিহরিত করেছে গোটা দেশকে। এই ঘটনারও সূত্রপাত প্রেম, শারীরিক সম্পর্ক এবং শেষ পরিণতি খুন।

ছবি: সংগৃহীত।

১৬ ২০
Megha Murder Case

নিক্কি এবং শ্রদ্ধার মতো আরও একটি দৃষ্টান্ত মেঘা থোরভি হত্যকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ড মহারাষ্ট্রের পালঘরের। সেখানে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন বছর সাঁইত্রিশের মেঘা থোরভি এবং তাঁর লিভ ইন সঙ্গী হার্দিক শাহ। বছর তিনেক আগে ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে হার্দিকের সঙ্গে পরিচয় হয় মেঘার। ২০২২ সালের অগস্টে বিয়ে করেন তাঁরা।

ছবি: সংগৃহীত।

১৭ ২০
Megha Murder Case

মেঘা নার্সের চাকরি করতেন। ৪০ লক্ষ টাকা নয়ছয় করায় হার্দিককে ত্যাজ্যপুত্র করেছিলেন তাঁর বাবা। মেঘার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর মহারাষ্ট্রের নালাসোপারায় বিজয়নগরে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। কল ডেটা রেকর্ড অ্যানালিস্টের কাজ করতেন হার্দিক। কিন্তু লকডাউনে চাকরি চলে যায়। মেঘাও নার্সের চাকরি ছেড়ে দেন।

ছবি: সংগৃহীত।

১৮ ২০
Megha Murder Case

পুলিশ সূত্রে খবর, সংসার চালানোর জন্য হার্দিকের বাবা মাসে ২০ হাজার টাকা দিতেন হার্দিকদের। কিন্তু হার্দিক এবং মেঘার মধ্যে টাকা নিয়ে অশান্তি শুরু হওয়ায় তিনি সেই টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন।

প্রতীকী ছবি।

১৯ ২০
megha murder case

গত ১১ ফেব্রুয়ারি টাকা নিয়ে অশান্তি চরমে ওঠে। তার পর মেঘাকে তোয়ালে দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ ওঠে হার্দিকের বিরুদ্ধে। মেঘাকে খুন করার পর তাঁর বোনকে ফোন করে বিষয়টি জানান হার্দিক। মেঘার দেহ ঘরের মধ্যেই বক্স খাটের ভিতরে ঢুকিয়ে রাখেন হার্দিক। পচা গন্ধ যাতে না বাইরে বেরোয়, তার জন্য ঘরে উগ্র গন্ধের ধূপকাঠি জ্বালিয়ে রাখতেন সর্বক্ষণ।

প্রতীকী ছবি।

২০ ২০
megha murder case

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশীরা ফ্ল্যাট থেকে পচা গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দেখে ঘরের মধ্যে ধূপকাঠি জ্বালানো রয়েছে। সেই গন্ধ ভেদ করে পচা গন্ধটা আসছিল বক্স খাটের ভিতর থেকে। সেই খাট খুলতেই মেঘার পচাগলা দেহ বেরিয়ে আসে। এর পরই হার্দিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

প্রতীকী ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy