সত্তর-আশির দশকে উপার্জনের দিক দিয়ে বলিজগতের অভিনেতাদের মধ্যে উপরের সারিতে ছিলেন রাজেশ খন্না। তাঁর অভিনয়দক্ষতা যতটা প্রশংসা কুড়িয়েছিল, অঞ্জু মহেন্দ্রুর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে বলিজগতে জলঘোলাও তার চেয়ে কম হয়নি।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
রাজেশ খন্না। সত্তর-আশির দশকে উপার্জনের দিক দিয়ে বলিজগতের অভিনেতাদের মধ্যে উপরের সারিতে ছিলেন তিনি। ১৯৬৬ সালে ‘আখরি খত’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পদার্পণ রাজেশের। তার পর একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শককে। রাজেশ তাঁর অভিনয়দক্ষতা নিয়ে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে বলিজগতে জলঘোলাও কম হয়নি।
০২১৪
২৯ ডিসেম্বর জন্মদিন অভিনেতা রাজেশের। সেই প্রসঙ্গে পুরনো একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে বলিপাড়ায় আবার চর্চা শুরু হয়েছে। রাজেশের দীর্ঘকালীন প্রেমিকা অঞ্জু মহেন্দ্রু অভিনেতার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাঁদের সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। রাজেশের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগও করেছিলেন অঞ্জু।
০৩১৪
রাজেশ যখন বলিউডে সবেমাত্র নাম করতে শুরু করেছেন তখন অঞ্জু তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছেন। মডেলিং জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। রাজেশ-অঞ্জু তাঁদের সম্পর্ক লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও তা জানাজানি হয়ে যায়।
০৪১৪
অঞ্জুর বাড়ির সামনে প্রায় প্রতি দিন রাজেশের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। বলিপাড়ায় জানাজানি হয়ে যাওয়ায় তাঁরা জনসমক্ষে তাঁদের সম্পর্কের কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। সব জায়গায় একসঙ্গে দেখা যেতে লাগল রাজেশ-অঞ্জুকে।
০৫১৪
অঞ্জুকে বিয়ের জন্য প্রস্তাবও দিয়েছিলেন রাজেশ। সমস্যার সূত্রপাত সেখান থেকেই। বার বার রাজেশের প্রস্তাব নাকচ করে দিচ্ছিলেন অঞ্জু। কেরিয়ারে প্রভাব পড়বে বলে বিয়ে করতে চাইছিলেন না তিনি।
০৬১৪
অন্য দিকে অভিনেতার বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য জোর করা হচ্ছিল। ১৯৭৩ সালে অভিনেত্রী ডিম্পল কাপাডিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন রাজেশ। এমনকি, বিয়ের সময় ইচ্ছে করে অঞ্জুর বাড়ির সামনে দিয়ে বরযাত্রী নিয়ে গিয়েছিলেন রাজেশ।
০৭১৪
রাজেশকে কেন বিয়ে করেননি সেই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে অঞ্জু সাক্ষাৎকারে জানান, রাজেশ নাকি কখনই অঞ্জুর কেরিয়ার নিয়ে ভাবতেন না। অঞ্জু অভিনয় করতে চাইলে বাধা দিতেন রাজেশ। অভিনেতা সব সময় চাইতেন, অঞ্জু যেন তাঁর সঙ্গে অনুরাগীদের মতো ব্যবহার করেন। এক জন অনুরাগী যেমন দেখা হলেই তাঁকে প্রশংসায় ভরিয়ে রাখতেন, সে রকম ব্যবহার তাঁর কাছেও আশা করতেন রাজেশ বলে দাবি অঞ্জুর।
০৮১৪
সাক্ষাৎকারে অঞ্জু বলেছিলেন, ‘‘আমি বলিতারকা রাজেশকে ভালবাসতাম না। আমি যতীনকে (রাজেশের আসল নাম) ভালবাসতাম।’’ রাজেশের কথা মতো চলতে পারতেন না বলে জানিয়েছিলেন অঞ্জু।
০৯১৪
অঞ্জুর মন্তব্য, রাজেশের চিন্তাভাবনা অদ্ভুত রকমের ছিল। রাজেশ আধুনিক পোশাক-পরা নারীদের সঙ্গে মিশতেন। তাঁদের প্রশংসাও করতেন তিনি। কিন্তু অঞ্জু ওই ধরনের পোশাক পরলেই আপত্তি জানাতেন রাজেশ। অঞ্জু যদি তার পরিবর্তে শাড়ি পরতেন, তাতেও তাঁর উপর রেগে যেতেন রাজেশ। অঞ্জুর দাবি, রাজেশের সঙ্গে দিনের পর দিন থাকা তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে উঠছিল।
১০১৪
অঞ্জুর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মুখ খুলেছিলেন রাজেশও। কিন্তু তিনি মুদ্রার অন্য পিঠ তুলে ধরেন। রাজেশের অভিযোগ, অঞ্জু সারাদিন পার্টি নিয়ে মেতে থাকতেন। খারাপ সময়ে অঞ্জুকে কখনও পাশে পাননি বলে দাবি করেন রাজেশ।
১১১৪
রাজেশের মায়ের সঙ্গেও অঞ্জু ভাল ব্যবহার করতেন না বলে জানিয়েছিলেন অভিনেতা। কেরিয়ার গড়ার শুধুমাত্র অজুহাত দিয়েছিলেন অঞ্জু। আসলে ওই সময় ক্রিকেটার গারফিল্ড সোবার্স এবং পরে ইমতিয়াজ খানের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অঞ্জু, দাবি করেছিলেন রাজেশ। অঞ্জু সৎ ছিলেন না বলেই রাজেশ এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।
১২১৪
কিন্তু অঞ্জু জানিয়েছিলেন, রাজেশের ছবি যখন ফ্লপ হচ্ছিল, তখন তিনি অঞ্জুর প্রতি সেই হতাশা প্রকাশ করতেন। রাজেশের চারপাশে সারাক্ষণ এমন লোকজনের ঘোরাফেরা চলত, যাঁরা দিনরাত অভিনেতাকে তোষামোদ করে চলতেন। রাজেশ কখনও অঞ্জুর সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতেন না বলে অভিযোগ করেছিলেন অঞ্জু।
১৩১৪
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, অঞ্জু যে ছবি বা বিজ্ঞাপনে কাজের প্রস্তাব পেতেন, সেই কাজের সঙ্গে যুক্ত পরিচালক-প্রযোজক এবং বিজ্ঞাপন সংস্থার মালিককে বিপুল পরিমাণ অর্থের লোভ দেখাতেন রাজেশ। অঞ্জুর কাজ যেন মুক্তি না পায়, তার চেষ্টা করতেন রাজেশ। কিন্তু এই অভিযোগ কতটা সত্য তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
১৪১৪
বিচ্ছেদের পর ১৭ বছর একে অপরের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ রেখেছিলেন রাজেশ এবং অঞ্জু। পরে অবশ্য তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রাজেশের অন্তিম সময়েও বন্ধুর মতো পাশে ছিলেন অঞ্জু।