Congress leader Kamal Nath may not quit as he removes the Jay Shree Ram flag from his Delhi home dgtl
Lok Sabha Election 2024
কংগ্রেসেই থাকছেন ইন্দিরার ‘তৃতীয় পুত্র’ কমল? ‘হাত’ ছাড়ছেন না পুত্র নকুলও?
মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের আশা, শেষ পর্যন্ত কমল এবং তাঁর পুত্র তথা কংগ্রেস সাংসদ নকুল নাথ দলেই থেকে যেতে পারেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:১১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
মধ্যপ্রদেশের প্রবীণ নেতা কমল নাথ কি তা হলে কংগ্রেসেই থাকছেন? এখন অন্তত তেমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ, সোমবারই নাকি প্রবীণ নেতার বাড়ি থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়েছে ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা পতাকা।
০২১৯
তাঁর বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে জল্পনা চলছেই। আর তার মধ্যেই সোমবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কমল নাথের দিল্লির বাড়ি থেকে নামানো হল ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা গেরুয়া পতাকা।
০৩১৯
এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের আশা, শেষ পর্যন্ত কমল এবং তাঁর পুত্র তথা কংগ্রেস সাংসদ নকুল নাথ দলেই থেকে যেতে পারেন।
০৪১৯
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চহ্বাণ চলতি মাসেই যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে, এই পরিস্থিতিতে কমল-পুত্র নকুল শনিবার নিজের এক্স হ্যান্ডল থেকে ‘কংগ্রেস’ পরিচয় মুছে দেওয়ার পরে জল্পনা তৈরি হয় এ বার ছিন্দওয়াড়ার কংগ্রেস সাংসদ এবং তাঁর বাবা বিজেপিতে যোগ দেবেন।
০৫১৯
শনিবার বিকেলে কমল দিল্লি পৌঁছনোর পরে তাঁর বাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা বৃদ্ধির পরে সেই আশঙ্কা আরও দৃঢ় হয়েছিল কংগ্রেসের অন্দরে। শনিবার সকাল পর্যন্ত তাঁর দিল্লির বাড়ির ছাদে উড়ছিল ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা পতাকা।
০৬১৯
যদিও রবিবার এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র সিংহ এবং মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটোয়ারির দাবি করেছিলেন, কমল কংগ্রেসেই থাকবেন।
০৭১৯
মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের ঘনিষ্ঠ নেতা সজ্জন সিংহ বর্মা সোমবার দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তার পরে তিনি বলেন, ‘‘কমলজি আমাদের নেতা। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন, নিজেই ঘোষণা করবেন।’’
০৮১৯
ঘটনাচক্রে, তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কমল নিজে কিছুই বলেননি। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, দিল্লিতে চুরাশির শিখ দাঙ্গার তদন্তে গঠিত ‘সিট’-এর কাছে কমল নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে দিল্লি হাই কোর্ট রিপোর্ট চেয়েছে।
০৯১৯
এপ্রিলের মধ্যে তা দিতে বলা হয়েছে। কমল নাথের ভাগ্নে রাতুল পুরী-সহ বেশ কয়েকজন আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি-র ব্যাঙ্ক প্রতারণা ও আর্থিক নয়ছয়ের মামলা চলছে। তা নিয়েই কমল ও তাঁর ছেলে ছিন্দওয়াড়ার সাংসদ নকুলের উপরে চাপ রয়েছে।
১০১৯
গত বছরের ১৭ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে বিজেপি ঝড়ে কার্যত ‘উড়ে গিয়েছে’ কংগ্রেস। ২৩০ আসনের বিধানসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজেপি পেয়েছে ১৬৩টি আসন। অন্য দিকে, কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ৬৬টি আসন।
১১১৯
তার পরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে কমলকে সরিয়ে বসানো হয়েছিল তাঁর ‘বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত জিতু পাটোয়ারিকে। বিরোধী দলনেতার পদও তাঁকে দেয়নি কংগ্রেস হাইকমান্ড।
১২১৯
কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাজ্যসভা ভোটে টিকিটের জন্য কমল স্বয়ং সোনিয়ার কাছে আবেদন জানালেও তা গ্রাহ্য হয়নি। এমনকি বিধায়কদের সমর্থন নিয়ে তিনি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর ইচ্ছা পূরণে আগ্রহ দেখায়নি।
১৩১৯
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের অন্দরেও কমল ‘নরম হিন্দুত্ববাদী’ বলেই পরিচিত। গত বছর মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা ভোটের আগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিনের পুত্র উদয়নিধির বিরুদ্ধে ‘হিন্দু বিরোধী’ মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছিল।
১৪১৯
সে সময় কমলের আপত্তির জেরেই ভোপালে ‘ইন্ডিয়া’র পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল করতে বাধ্য হয় কংগ্রেস হাইকমান্ড। চার বছর আগে জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে বিজেপিতে যাওয়ার পরে গোয়ালিয়র-চম্বল অঞ্চলে ধস নেমেছিল কংগ্রেসে। কমল মধ্যপ্রদেশে দলের সবচেয়ে মজবুত ঘাঁটি মহাকোশলেও দল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা।
১৫১৯
রাহুলের পিতামহী ইন্দিরা গান্ধীর আমলে ছিন্দওয়াড়ার সাংসদ হয়েছিলেন কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রাক্তনী কমল। ১৯৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় একটানা সাংসদ (মাঝে ১৯৯৬-’৯৮ পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন না) কমল কেন্দ্রে মন্ত্রী হয়েছেন একাধিক বার।
১৬১৯
একদা ‘সঞ্জয় গান্ধীর অনুগামী’ বলে পরিচিত হলেও পরবর্তী সময়েও গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে ঠাঁই পেয়েছেন। জরুরি অবস্থার সময় ইন্দিরা-সঞ্জয়ের পাশে দাঁড়িয়ে গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। ইন্দিরা তাঁকে ‘আমার তৃতীয় পুত্র’ বলেছিলেন।
১৭১৯
২০১৮ সালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে দেড় দশক পরে ভোপালে ক্ষমতায় দলকে ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন কমল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে মধ্যপ্রদেশের ২৮টি আসনের মধ্যে মাত্র একটিতে জিতেছিল কংগ্রেস। কমলের খাসতালুক ছিন্দওয়াড়ায় তাঁর পুত্র নকুল।
১৮১৯
প্রসঙ্গত, কমল নাথ দল ছাড়লে তা রাজনৈতিক ক্ষতি তো বটেই, এমনকি কংগ্রেসের পকেটেও টান পড়তে পারে বলে মত একাংশের। কংগ্রেস সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরেই দলের তহবিল সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেন কমল। দলের তরফে মুম্বই-সহ গোটা দেশের শিল্পমহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলতেন।
১৯১৯
প্রায় দশ বছর আগে কেন্দ্রে ক্ষমতা হারানোর পর রাজনৈতিক প্রভাব হ্রাস পায় কংগ্রেসের। টান পড়ে ভাঁড়ারেও। কর্পোরেট অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের তুলনায় কয়েক গুণ এগিয়ে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে কমল নাথ বিজেপিতে যোগ দিলে কংগ্রেসের সঙ্গে শিল্পমহলের যোগাযোগের শেষ সুতোটিও ছিঁড়ে যেতে পারে বলে মনে করছে ওই সূত্রটি।