China nuclear weapon issue Biden approves secret nuclear strategy dgtl
America’s secret nuclear strategy
রাশিয়ার দোসর চিন, উত্তর কোরিয়া! তিন শত্রুকে ঠেকাতে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে নয়া নির্দেশ পেল পেন্টাগন
চিনের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার বৃদ্ধির প্রতিরোধ কৌশল কী হবে, তা নিয়ে আমেরিকা নিজেদের পারমাণবিক পরিকল্পনার সংশোধনী রূপরেখা তৈরি করতে চলেছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৪ ১২:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
রাশিয়াকে নিয়ে চিন্তা ছিলই। পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার সম্প্রসারণ নিয়ে এ বার আমেরিকার মাথাব্যথার কারণ হতে চলেছে চিন এবং উত্তর কোরিয়াও। বিগত কয়েক বছর ধরেই রাশিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘বিশ্বের জন্য হুমকি’ বলে প্রচার করে আসছে আমেরিকা।
০২১৭
সম্প্রতি আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত একটি উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশিকা সংশোধনের অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। বেজিংয়ের পারমাণবিক অস্ত্রাগার সম্প্রসারণের বিষয়টিকে ওয়াশিংটন যে লঘু করে দেখতে চাইছে না, তেমনটা জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনও।
০৩১৭
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার বৃদ্ধির প্রতিরোধ কৌশল কী হবে, তা নিয়ে আমেরিকা নিজেদের পারমাণবিক পরিকল্পনার সংশোধনী রূপরেখা তৈরি করতে চলেছে।
০৪১৭
‘পারমাণবিক সংস্থান নির্দেশিকা’ শীর্ষক ওই রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে নতুন ভাবে চিন, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্রের মোকাবিলার জন্য প্রতিরোধ কৌশলে পরিবর্তন এনে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে চাইছে আমেরিকা।
০৫১৭
অর্থাৎ, এই তিন রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতে আমেরিকা কী ভাবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে, তার রূপরেখা তৈরির অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
০৬১৭
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অতি গোপনীয় এই নথিটির কোনও বৈদ্যুতিন সংস্করণ নেই। শুধুমাত্র কয়েক জন জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং পেন্টাগনের সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা স্বল্প সংখ্যক উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকের হাতেই রয়েছে এই নথির কাগুজে সংস্করণ।
০৭১৭
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাশিয়াকে নিয়ে বরাবরই শঙ্কিত আমেরিকা। ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্টসের তথ্য বলছে, ২০২২ সাল নাগাদ রাশিয়ার কাছে থাকা পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৭৭, আমেরিকার ৫ হাজার ৪২৮টি।
০৮১৭
২০২৩ সালের নিরিখে এই দুই দেশের অস্ত্রভান্ডার বাড়েনি বলে সুইডিশ থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সারা বিশ্বে ১২ হাজার ২২১টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মজুত রয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার ৫৮৫টি ক্ষেপণাস্ত্র সম্ভাব্য ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলির অস্ত্রাগারে মজুত রয়েছে।
০৯১৭
পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যার নিরিখে এর পরই রয়েছে চিন। পেন্টাগনের তথ্য বলছে, বর্তমানে চিনের হাতে মজুত পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ৫০০। ২০৩০-এর মধ্যে সেই সংখ্যা এক হাজারে নিয়ে যাবে চিন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অধীনে চিনের পারমাণবিক উন্নয়ন প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত এগিয়ে চলেছে, এমনটাই মনে করছে পেন্টাগন।
১০১৭
চিন আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতায় জড়াতে চায় বলে ওয়াশিংটন যে দাবি করেছে, তা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে বেজিং। চিনের পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কে ওয়াশিংটন যে ভীতিকর দাবি করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে শি জিনপিংয়ের সরকার।
১১১৭
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিম জং উনের উত্তর কোরিয়া। তারাও চিন ও রাশিয়ার মতো নিজেদের পারমাণবিক শক্তিবৃদ্ধিতে পিছিয়ে নেই বলে মত পেন্টাগনের। রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রধারী উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি করে কোরিয়াকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ইঙ্গিত দিয়েছে।
১২১৭
উত্তর কোরিয়া ২০২২ সালে ৩০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। এ সব পরীক্ষার মধ্যে দূরপাল্লার কিছু ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা আমেরিকার মাটিতেও আঘাত হানতে পারে।
১৩১৭
ইতিমধ্যেই রাশিয়া ও চিন একসঙ্গে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। আমেরিকার নাকের ডগায় বসে আলাস্কায় পারমাণবিক শক্তি পরীক্ষা চালিয়েছে তারা। এমন তথ্য পেন্টাগনের হাতে এসে পৌঁছেছে বলে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে।
১৪১৭
ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্টসের তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তান ১৬৫, ভারত ১৬০, ইজ়রায়েল ৯০ এবং উত্তর কোরিয়া ২০টি পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী।
১৫১৭
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তথ্যমতে, আমেরিকা ১৯৯২ সালে, চিন ও ফ্রান্স ১৯৯৬, ভারত ও পাকিস্তান ১৯৯৮, উত্তর কোরিয়া ২০১৭ সালে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। রাশিয়া সবশেষ পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল ১৯৯০ সালে।
১৬১৭
চিন, ফ্রান্স, রাশিয়া, আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য-সহ ১৯১টি দেশ পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় যারা রয়েছে তাদের পারমাণবিক অস্ত্রসম্ভার কমিয়ে আনার এবং কাগজেকলমে পরমাণু অস্ত্র থেকে তৈরি থেকে পুরোপুরি বিরত থাকার কথা।
১৭১৭
কিন্তু ভারত, ইজ়রায়েল ও পাকিস্তান কখনও এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। আর উত্তর কোরিয়া সই করলেও চুক্তি থেকে সরে গিয়েছে ২০০৩ সালে। এর মধ্যে ইজ়রায়েল কখনওই আনুষ্ঠানিক ভাবে তার পারমাণবিক কর্মসূচি স্বীকার করেনি।