China is all set to make First Deep-Water research facility dgtl
Chinese Underwater Research Station
শুধুই গবেষণা? না অন্য ছক? সমুদ্রের গভীরে চিনা গবেষণাকেন্দ্র তৈরির খবরে চাঞ্চল্য
সমুদ্রের গভীরে ওই গবেষণাকেন্দ্রের নকশা নাকি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। চিনা সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গবেষণাকেন্দ্রটি এমন ভাবেই তৈরি হবে, যাতে ছ’জন বিজ্ঞানী এক মাস পর্যন্ত সেখানে থেকে গবেষণা চালাতে পারেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এর অবস্থান। সেটি দিন-রাতে প্রায় দেড় ঘণ্টা অন্তর এক বার করে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে ১৯৯৮ সাল থেকে।
০২২০
মহাকাশ সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণা-সহ অন্য অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। অনেক মহাকাশচারী একসঙ্গে থেকে সেখানে কাজ করতে পারেন।
০৩২০
তবে এ বার নতুন একটি গবেষণাকেন্দ্র তৈরি করে তাক লাগাতে চাইছে চিন। তবে সেই গবেষণাকেন্দ্রটি মহাকাশে নয়, সমুদ্রের অতলে তৈরি করছে ড্রাগন।
০৪২০
আনুষ্ঠানিক ভাবে দক্ষিণ চিন সাগরের গভীর একটি সমুদ্র গবেষণাকেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে বেজিং। সেই খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই আন্তর্জাতিক মহলে হইচই পড়ে গিয়েছে।
০৫২০
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি এমন একটি পদক্ষেপ, যা দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবকে আরও শক্তিশালী করে সামুদ্রিক গবেষণায় বিপ্লব ঘটাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
০৬২০
বছরের পর বছর ধরে আলোচনা এবং প্রযুক্তিগত মূল্যায়নের পর দক্ষিণ চিন সাগরের নিকষ কালো গভীরে ওই বৈজ্ঞানিক গবেষণাকেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হেওয়া হয়েছে বলে খবর।
০৭২০
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই গবেষণাকেন্দ্রটি কৌশলগত ভাবে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দু’হাজার মিটার বা প্রায় ছ’হাজার ফুট নীচে তৈরি করা হবে।
০৮২০
সমুদ্রের গভীরের ওই গবেষণাকেন্দ্রের নকশা নাকি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। চিনা সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গবেষণাকেন্দ্রটি এমন ভাবেই তৈরি হবে যাতে ছ’জন বিজ্ঞানী এক মাস পর্যন্ত সেখানে থেকে গবেষণা চালাতে পারেন।
০৯২০
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গবেষণাকেন্দ্রটি এমন ভাবেই তৈরি করা হচ্ছে যে, সমুদ্রের গভীরে চরম অবস্থাতেও যেন সেটি ক্ষতির মুখে না পড়ে।
১০২০
সামুদ্রিক তথ্য সংগ্রহের জন্য গবেষণাকেন্দ্রে একটি চতুর্স্তরীয় নজরদারি প্রক্রিয়া, জাহাজ, ডুবোজাহাজ এবং মানমন্দির থাকছে বলেও খবর।
১১২০
গবেষণাকেন্দ্রটি একটি বৃহত্তর নেটওয়ার্ক পরিকাঠামোর অংশ হবে বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। মনে করা হচ্ছে দ্রুত ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য গবেষণাকেন্দ্রের মধ্যে উন্নত ফাইবার-অপ্টিক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে।
সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে চিনা সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, ২০৩০ সাল নাগাদ দক্ষিণ চিন সাগরের নীচে বেজিংয়ের ওই গবেষণাকেন্দ্রটি সম্পূর্ণ ভাবে চালু হয়ে যাবে।
১৪২০
জানা গিয়েছে, গবেষণাকেন্দ্রের মূল উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে অন্যতম হল, সমুদ্রতলে মিথেনের নিঃসরণ পর্যবেক্ষণ করে জলবায়ুর উপর তার প্রভাব অধ্যয়ন করা।
১৫২০
এ ছাড়া গভীর সমুদ্রের জীববৈচিত্র বোঝা এবং এর সাহায্যে চিকিৎসাক্ষেত্রকে কোনও ভাবে উন্নত করা যায় কি না, তা বিচার করে দেখা হবে বলে সরকারি সূত্রে খবর।
১৬২০
পাশাপাশি, ভূমিকম্প এবং সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস পেতে ভূতাত্ত্বিক গতিবিধির দিকেও নজর রাখবে ওই গবেষণাকেন্দ্রটি। একই সঙ্গে বিকল্প শক্তির উৎস হিসাবে মিথেন হাইড্রেটের খোঁজও ওই গবেষণাকেন্দ্র থেকে চালাবেন বিজ্ঞানীরা।
১৭২০
প্রযুক্তিনির্ভর গবেষণার কাজের জন্য সমুদ্রগর্ভে থাকা ওই চিনা গবেষণাকেন্দ্রে কৃত্রিম মেধা বা ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)’ ব্যবহার করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
১৮২০
উল্লেখ্য, চিনের ওই গবেষণাকেন্দ্র তৈরির খবরে কিন্তু ঘুম উড়েছে আন্তর্জাতিক মহলের। এমনিতেই চিনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ চিন সাগরে নজরদারি জাহাজ মোতায়েনের অভিযোগ উঠেছে বার বার। যদিও সেই জাহাজগুলিকে গবেষণা-জাহাজ বলে দাবি করে এসেছে চিন।
১৯২০
পাশাপাশি বিশ্বের প্রথম সমুদ্রতল রাডার নির্মাণের দাবিও করেছে চিন। সাগরের নীচে প্রায় হাজার মিটার গভীরতা থেকে লড়াকু জেট শনাক্ত করার ক্ষমতা রয়েছে সেটির। দক্ষিণ চিন সাগরে ওই রাডার মোতায়েন করেছে ড্রাগন ফৌজ।
২০২০
আর তাই সমুদ্রের নীচে গবেষণাকেন্দ্র তৈরি করে নতুন কী খেল দেখাবে, তা নিয়েই চিন্তায় রয়েছেন আন্তর্জাতিক মহলের অনেকে।