Chemical gas Chloropicrin allegedly used by Russia against Ukraine dgtl
Russia-Ukraine Conflict
দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হতে পারে শত্রুর! বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহার করছে রাশিয়া
আমেরিকার অভিযোগ, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে ক্লোরোপিকরিন ব্যবহার করছে। কাঁদানে গ্যাস হিসাবে ব্যবহৃত হওয়া নাইট্রোক্লোরোফর্মও নাকি ব্যবহার করছে তারা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৪ ১৫:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
প্রচলিত ধারণা হল, প্রেমে আর রণে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয় না। সাধারণ ভাবে যা নীতিনিষ্ঠ, বহু সময়েই তার বিরুদ্ধাচরণ করা হয়।
০২১৫
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেমন ইউক্রেনের সেনাদের উপরে রাসায়নিক গ্যাসকে হাতিয়ার করার অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে মস্কোকে কাঠগড়ায় তুলছে আমেরিকা।
০৩১৫
আমেরিকার অভিযোগ, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে ক্লোরোপিকরিন ব্যবহার করছে। কাঁদানে গ্যাস হিসাবে ব্যবহৃত হওয়া নাইট্রোক্লোরোফর্মও নাকি ব্যবহার করছে তারা।
০৪১৫
নাইট্রোক্লোরোফর্মের এই ব্যবহারের জন্য এটিকে ‘রায়ট কন্ট্রোল এজেন্ট’ও বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশে ‘অবৈধ’ জমায়েত হটাতে এই গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
০৫১৫
এই গ্যাসের কারণে চোখ দিয়ে অবিরত জল পড়া, চোখ জ্বালা করা, চামড়ায় দাগ হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। তবে অধিক মাত্রায় এই গ্যাস ব্যবহার করা হলে ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে।
০৬১৫
রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে ছত্রভঙ্গ করতে এই গ্যাস ব্যবহার করছে রুশ বাহিনী। এই গ্যাসে বিপক্ষ শিবিরের সেনাকে কাবু করে যুদ্ধের কৌশলগত ক্ষেত্রে রাশিয়া কিস্তিমাত করছে বলে দাবি রাশিয়ার।
০৭১৫
আমেরিকার বক্তব্য, যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাঘাঁটিতে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকেন সেনারা। সেখানে স্বল্প পরিসরে এই গ্যাস ব্যবহৃত হলে শ্বাসরোধ হয়ে সেনাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সেনাদের মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা দফতর।
০৮১৫
রাশিয়া অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তবে আমেরিকার এই দাবিকে হালকা ভাবে নিচ্ছে না ইউরোপ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ হুমকির সুরেই বলেছেন, ‘‘রাশিয়া যদি গায়ের জোর দেখায় এবং ইউক্রেন যদি অনুরোধ করে, তা হলে ফ্রান্স তাদের স্থলবাহিনী নামিয়ে দেবে।’’
০৯১৫
আমেরিকার দাবি, যুদ্ধে এই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে ‘কেমিক্যাল ওয়েপনস কনভেনশন’ (সিডব্লিউসি)-এর শর্ত ভঙ্গ করছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ।
১০১৫
রাশিয়ার পাল্টা দাবি, তারা দীর্ঘ দিন ধরে সিডব্লিউসি মেনে চলছে। ১৯৩টি দেশ এই চুক্তিতে সই করেছিল। সব দেশ নিয়ম মানছে কি না, তা দেখার জন্য নির্দিষ্ট সংস্থা রয়েছে। যার নাম ‘দ্য অর্গানাইজ়েশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল ওয়েপনস’ (ওপিসিডব্লিউ)।
১১১৫
আমেরিকা যে রাসায়নিকটির নাম তুলেছে, সেই ‘ক্লোরোপিকরিন’ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল। এটি একটি তৈলাক্ত পদার্থ। এটি শরীরে প্রবেশ করলে বমি শুরু হয়ে যায়। সেই সঙ্গে ডায়েরিয়া, মাথা ঘোরার মতো সমস্যাও দেখা যায়।
১২১৫
সিডব্লিউসি অনুযায়ী, যুদ্ধে ক্লোরোপিকরিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ। ওপিসিডব্লিউ-এর তালিকায় এটি ‘চোকিং এজেন্ট’ হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। আমেরিকার বিদেশ দফতরের দাবি, মস্কো নিয়মিত ভাবে এই এজেন্টটি যুদ্ধে ব্যবহার করেছে।
১৩১৫
রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা নিয়ে যুদ্ধে গোড়া থেকেই রাশিয়াকে সতর্ক করে আসছে আমেরিকা। যুদ্ধ শুরুর পর পরই ২০২২-এর মার্চ মাসে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ‘‘রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করলে দাম চোকাতে হবে রাশিয়াকে। ওরা যেমন কাজ করবে, তেমন ব্যবহার পাবে।’’
১৪১৫
রাশিয়ার কাছে রাসায়নিক অস্ত্রের ভান্ডার থাকার অভিযোগ নতুন নয়। ২০১৭ সালে প্রাক্তন সোভিয়েত গোয়েন্দা কর্তার উপর ‘স্যালিসবারি অ্যাটাকের’ অভিযোগ ওঠে মস্কোর বিরুদ্ধে। ২০২০ সালে তৎকালীন রুশ বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির উপর নার্ভ এজেন্ট ব্যবহারেরও অভিযোগ ওঠে।
১৫১৫
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত চলছে। এই যুদ্ধে সরাসরি ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলি। তারা রাশিয়ার ‘আগ্রাসন’-এর সমালোচনা করেছে। পাল্টা রাশিয়া ইউক্রেনকে যুদ্ধে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে আমেরিকার বিরুদ্ধে।