Advertisement
২৩ জুলাই ২০২৫
Canada wants Nuclear Weapon

আগ্রাসী ট্রাম্পকে ঠান্ডা করতে ডিগবাজি! আমেরিকার নাকের ডগায় পরমাণু বোমা রাখবে কানাডা?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী নীতির আতঙ্কে কাঁপছে কানাডা। দেশ বাঁচাতে ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের থেকে পরমাণু বোমা চেয়ে গলা ফাটাচ্ছেন অটোয়ার রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৫ ১৫:১২
Share: Save:
০১ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

ঠেলার নাম বাবাজি! কানাডার জন্য সত্যি হতে চলেছে অতি প্রচলিত এই বাংলা প্রবাদ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আতঙ্কে পরমাণু হাতিয়ার চেয়ে গলা ফাটাতে শুরু করেছে অটোয়া। এ ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি উল্টো দিকে সরে গিয়েছে উত্তর আমেরিকার এই দেশ। কানাডার এ হেন আচরণে বিশ্ব রাজনীতি অন্য খাতে বইতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা।

০২ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

দ্বিতীয় বারের জন্য ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে পর্যন্ত অটোয়া এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে ছিল গলায় গলায় বন্ধুত্ব। কোনও দেশ পরমাণু বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে শুনলেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠত কানাডা। সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে তবে নিঃশ্বাস নিতেন সেখানকার রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

০৩ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

শুধু তা-ই নয়, ১৯৬৯ সালের জানুয়ারিতে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে কানাডা। তার পর থেকেই ‘ম্যাপল পাতার দেশ’টিতে গণবিধ্বংসী যে কোনও ধরনের হাতিয়ার নির্মাণ, রাখা বা তার রক্ষণাবেক্ষণ নিষিদ্ধ হয়। ৫৬ বছর পর ওই সিদ্ধান্তের জন্য যে পস্তাতে হবে, তা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী।

০৪ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

কানাডার পরমাণু হাতিয়ারের প্রয়োজনীয়তার কথা প্রথম বার খোলাখুলি ভাবে বলেছেন সেখানকার সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়া ফ্রিল্যান্ড। এ ব্যাপারে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মতো নেটোভুক্ত দেশগুলির সাহায্য চেয়েছেন তিনি। অটোয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সেখান থেকে এই মারণাস্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।

০৫ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

চলতি বছরের জানুয়ারিতে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী তথা লিবারেল পার্টির নেতা জাস্টিন ট্রুডো। তাঁর উত্তরসূরির দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ফ্রিল্যান্ড। সম্প্রতি একটি বিতর্কসভায় যোগ দিয়ে আণবিক হাতিয়ারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মুখ খোলেন অটোয়ার সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী। তার পরই দুনিয়া জুড়ে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়।

০৬ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

অনুষ্ঠানে ফ্রিল্যান্ড বলেন, ‘‘কানাডার ব্যাপারে ট্রাম্প মোটেই রসিকতা করছেন না। তাই সার্বভৌমত্ব বাঁচাতে আমাদের সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’’ আর তাই ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের সঙ্গে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সম্পর্ক গড়ে তোলার পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি।

০৭ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ওদের (ব্রিটেন ও ফ্রান্স) পারমাণবিক হাতিয়ার রয়েছে। সেটা ওরা সরবরাহ করে আমাদের সুরক্ষা দিতে পারে। কারণ, আমেরিকা এখন কানাডা কব্জা করার ছক কষছে। আর সেটাই এখন অটোয়ার কাছে সবচেয়ে বড় হুমকি।’’ কুর্সি পেলে এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে নেটোভুক্ত ইউরোপীয় দেশগুলির সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি করার পথে যে পা বাড়াবেন, তা একরকম স্পষ্ট করেছেন ফ্রিল্যান্ড।

০৮ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

ওই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের ‘মস্কো প্রেম’কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কানাডার দাপুটে রাজনৈতিক নেত্রী। ‘‘দেশের সীমান্ত বিস্তারের জন্যেই ইউক্রেনকে গিলতে চাইছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেটা জেনেও সব কিছু না দেখার ভান করছেন ট্রাম্প। কারণ, তার পরবর্তী লক্ষ্য হল কানাডা। সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য মস্কোর রাস্তায় হাঁটবেন তিনি,’’ বলেছেন ফ্রিল্যান্ড।

০৯ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

দলের তরফে পরবর্তী নেতা বা নেত্রী নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকবেন ট্রুডো। চলতি বছরের ৩ মার্চ ব্রিটেন সফরে গিয়ে সেখানকার রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। কমনওয়েলথভুক্ত দেশ হওয়ায় লন্ডনের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন ট্রুডো। সেখানে পরমাণু হাতিয়ার সরবরাহের ব্যাপারে ব্রিটিশ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর কোনও আলোচনা হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।

১০ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের জন্য ভোটে জেতেন ট্রাম্প। এর পরই ৫১তম প্রদেশ হিসাবে আমেরিকার সঙ্গে কানাডার সংযুক্তিকরণের পক্ষে সওয়াল করেন ট্রাম্প। ফলে দুনিয়া জুড়ে শুরু হয় আলোড়ন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি ওয়াশিংটন সফরে যান ট্রুডো।

১১ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। তাতে অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘মানভঞ্জন’ হয়েছে, এমনটা নয়। উল্টে ট্রুডোকে প্রকাশ্যেই তিনি কানাডার গভর্নর বলে সম্বোধন করে বসেন। কানাডার আতঙ্কিত প্রধানমন্ত্রী খালি হাতেই নিজের দেশে ফিরে যান। ওই সময় থেকেই ওয়াশিংটন ও অটোয়ার সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে।

১২ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

এ বছরের গোড়ার দিকে বিষয়টি নিয়ে একটি সমীক্ষা করে কানাডা সরকার। সেই রিপোর্ট জমা পড়তেই চোখ কপালে ওঠে ট্রুডো সরকারের। সমীক্ষকেরা জানিয়েছেন, ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সি ৪৩ শতাংশ কানাডাবাসী ট্রাম্পের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ, এতে আমেরিকায় কাজের সুযোগ পাবেন তাঁরা। পাশাপাশি আরও মজবুত হবে কানাডার অর্থনীতি।

১৩ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

সমীক্ষার রিপোর্ট থেকে আরও জানা গিয়েছে, কানাডা যে কখনও না কখনও আমেরিকার অংশ হবে, তা মেনে নিয়েছেন ৩১ শতাংশ জনতা। একে ভবিতব্য বলেই মনে করছেন তাঁরা, যাতে নেই কোনও লোকসানের আশঙ্কা। ওয়াশিংটনের ওভাল অফিসে বসে এই সমীক্ষা রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রাম্প। ফলে অটোয়ার রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের রক্তচাপ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

১৪ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

আর সেই কারণেই মার্কিন আগ্রাসন ঠেকাতে পরমাণু হাতিয়ারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন ফ্রিল্যান্ড। যদিও বাস্তবে তা অসম্ভব বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা। কারণ, বর্তমান পরিস্থিতিতে কানাডার পক্ষে দ্রুত আণবিক অস্ত্র তৈরি করা কার্যত অলীক কল্পনা।

১৫ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

দ্বিতীয়ত, ট্রাম্প প্রশাসন কখনওই প্রতিবেশী কোনও রাষ্ট্রের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকুক, তা চাইবে না। ফলে ব্রিটেন বা ফ্রান্স থেকে ওই হাতিয়ার হাতে পাওয়ার আগেই অটোয়া আক্রমণ করতে পারে মার্কিন ফৌজ। এ ব্যাপারে বিরোধী ডেমোক্র্যাটদেরও সরাসরি সমর্থন পাবেন রিপাবলিকান ট্রাম্প, বলছেন বিশ্লেষকেরা।

১৬ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

তৃতীয়ত, ব্রিটেন বা ফ্রান্স হঠাৎ করে পরমাণু হাতিয়ার কানাডার হাতে তুলে দিলে নেটোয় ভাঙন ধরবে। তখন পূর্ব দিকে রাশিয়া এবং আটলান্টিকের অপর পারে আমেরিকার আগ্রাসনের মুখে পড়তে হবে পশ্চিম ইউরোপকে। সেই ঝুঁকি এখনই ব্রিটেন, ফ্রান্স বা জার্মানির মতো দেশগুলি নেবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

১৭ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

এ হেন জটিল পরিস্থিতিতেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে ছাড়ছেন না কানাডার রক্ষণশীল রাজনৈতিক নেতা পিয়েরে পোইলিভর। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা কখনওই যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম প্রদেশ হব না। কারণ, আমরা একটি মহান এবং স্বাধীন দেশ।’’

১৮ ১৮
Canada wants Nuclear Weapon

ফিল্যান্ডের কায়দাতেই ফ্রান্সের কাছে পরমাণু হাতিয়ার চেয়েছে জার্মানি। রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে ওই অস্ত্র প্রয়োজন বলে জানিয়ে দিয়েছে বার্লিন। বিষয়টি নিয়ে প্যারিসের তরফে সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। জার্মানি ও কানাডার ক্ষেত্রে ইউরোপের দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ (পড়ুন ব্রিটেন ও ফ্রান্স) এখন কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই দেখার।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy