Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Serial Killer

জেলের ভিতরেও জোড়া খুন! মৃত্যুভিক্ষাও নামঞ্জুর হয়, ৪৫ বছর কাচের ঘরে বন্দি সিরিয়াল কিলার

হাজতেও অপরাধ থেকে দূরে থাকতে পারেননি রবার্ট মড্‌সলে। ব্রিটেনের সব থেকে বিপজ্জনক বন্দির তকমা পেয়েছিলেন রবার্ট। বন্দিজীবনের বড় অংশ কাটছে একটা কাচের ঘরে, একা।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫১
Share: Save:
০১ ১৬
একের পর এক খুন করেছিলেন। সে জন্য যাবজ্জীবন হয়েছিল তাঁর। হাজতেও অপরাধ থেকে দূরে থাকতে পারেননি রবার্ট মড্‌সলে। ব্রিটেনের সব থেকে বিপজ্জনক বন্দির তকমা পেয়েছিলেন রবার্ট। বন্দিজীবনের বড় অংশ কেটেছে একটা কাচের ঘরে, একা। তাতেও নজির গড়েছিলেন তিনি। এর আগে কোনও বন্দি এত বছর জেলে একা কাটাননি।

একের পর এক খুন করেছিলেন। সে জন্য যাবজ্জীবন হয়েছিল তাঁর। হাজতেও অপরাধ থেকে দূরে থাকতে পারেননি রবার্ট মড্‌সলে। ব্রিটেনের সব থেকে বিপজ্জনক বন্দির তকমা পেয়েছিলেন রবার্ট। বন্দিজীবনের বড় অংশ কেটেছে একটা কাচের ঘরে, একা। তাতেও নজির গড়েছিলেন তিনি। এর আগে কোনও বন্দি এত বছর জেলে একা কাটাননি।

০২ ১৬
সিরিয়াল কিলার রবার্ট ‘হানিবল দ্য ক্যানিবল’ বলে পরিচিত ছিলেন। ভয়ঙ্কর অপরাধের কারণে টানা ১৬ হাজার ৪০০ দিন তিনি নিভৃত কুঠুরিতে কাটিয়েছেন। এমনকি জেলের রক্ষীরাও তাঁর কুঠুরিতে যেতে চাইতেন না।

সিরিয়াল কিলার রবার্ট ‘হানিবল দ্য ক্যানিবল’ বলে পরিচিত ছিলেন। ভয়ঙ্কর অপরাধের কারণে টানা ১৬ হাজার ৪০০ দিন তিনি নিভৃত কুঠুরিতে কাটিয়েছেন। এমনকি জেলের রক্ষীরাও তাঁর কুঠুরিতে যেতে চাইতেন না।

০৩ ১৬
একাধিক খুনের জন্য ওয়েকফিল্ড জেলে সাজা কাটাচ্ছিলেন রবার্ট। সেখানেই ১৯৭৮ সালের ২৮ জুলাই দুই সহবন্দিকে খুন করেছিলেন তিনি। সেই কারণেই আরও কঠোর হয়েছিল সাজা।

একাধিক খুনের জন্য ওয়েকফিল্ড জেলে সাজা কাটাচ্ছিলেন রবার্ট। সেখানেই ১৯৭৮ সালের ২৮ জুলাই দুই সহবন্দিকে খুন করেছিলেন তিনি। সেই কারণেই আরও কঠোর হয়েছিল সাজা।

০৪ ১৬
দুই সহবন্দিকে খুনের পর জেলের রক্ষীদের রবার্ট বলেছিলেন, ‘‘এ বার রোল কলের সময় দু’জন কম থাকবেন।’’ ওই দিন থেকে টানা ৪৫ বছর তিনি নিভৃত কুঠুরিতে কাটিয়েছিলেন।

দুই সহবন্দিকে খুনের পর জেলের রক্ষীদের রবার্ট বলেছিলেন, ‘‘এ বার রোল কলের সময় দু’জন কম থাকবেন।’’ ওই দিন থেকে টানা ৪৫ বছর তিনি নিভৃত কুঠুরিতে কাটিয়েছিলেন।

০৫ ১৬
নাপিত রবার্টের চুল কাটতে চাইতেন না। জেলের রক্ষীরা ভয়ে তাঁর কাছে যেতে চাইতেন না। তাঁরা সবাই কারা কর্তৃপক্ষের উপর চাপ দিতেন। সেই চাপে পড়েই রবার্টের জন্য নিভৃত কুঠুরি তৈরি করেন কর্তৃপক্ষ।

নাপিত রবার্টের চুল কাটতে চাইতেন না। জেলের রক্ষীরা ভয়ে তাঁর কাছে যেতে চাইতেন না। তাঁরা সবাই কারা কর্তৃপক্ষের উপর চাপ দিতেন। সেই চাপে পড়েই রবার্টের জন্য নিভৃত কুঠুরি তৈরি করেন কর্তৃপক্ষ।

০৬ ১৬
১৯৮৩ সালে ১৮ ফুট বাই ১৫ ফুটের একটি কাচের কুঠুরি তৈরি করেন ওয়েকফিল্ড জেল কর্তৃপক্ষ। সেই কুঠুরির জানলাগুলি ছিল বুলেটপ্রুফ। একটা মাত্র ইস্পাতের দরজা ছিল সেখানে।

১৯৮৩ সালে ১৮ ফুট বাই ১৫ ফুটের একটি কাচের কুঠুরি তৈরি করেন ওয়েকফিল্ড জেল কর্তৃপক্ষ। সেই কুঠুরির জানলাগুলি ছিল বুলেটপ্রুফ। একটা মাত্র ইস্পাতের দরজা ছিল সেখানে।

০৭ ১৬
কুঠুরিতে ইস্পাতের দরজার ছোট একটি অংশে একটি জাল লাগানো ছিল। সেই জালের জানলা দিয়েই খাবার দেওয়া হত রবার্টকে।

কুঠুরিতে ইস্পাতের দরজার ছোট একটি অংশে একটি জাল লাগানো ছিল। সেই জালের জানলা দিয়েই খাবার দেওয়া হত রবার্টকে।

০৮ ১৬
কুঠুরির ভিতর ছিল সিমেন্ট বাঁধানো বিছানা। কাডবোর্ডের তৈরি একটি চেয়ার, একটি বেসিন আর একটি সিঙ্ক। সেখানেই টানা ৪৫ বছর কেটেছিল রবার্টের।

কুঠুরির ভিতর ছিল সিমেন্ট বাঁধানো বিছানা। কাডবোর্ডের তৈরি একটি চেয়ার, একটি বেসিন আর একটি সিঙ্ক। সেখানেই টানা ৪৫ বছর কেটেছিল রবার্টের।

০৯ ১৬
‘সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্ব’ ছবিতে জেলের যে কুঠুরি দেখানো হয়েছিল, তার সঙ্গে রবার্টের কুঠুরির অদ্ভুত এক মিল রয়েছে। ১৯৯১ সালে মুক্তি পাওয়া ওই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন অ্যান্থনি হপকিনস।

‘সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্ব’ ছবিতে জেলের যে কুঠুরি দেখানো হয়েছিল, তার সঙ্গে রবার্টের কুঠুরির অদ্ভুত এক মিল রয়েছে। ১৯৯১ সালে মুক্তি পাওয়া ওই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন অ্যান্থনি হপকিনস।

১০ ১৬
জেল সূত্রে জানা গিয়েছিল, এক সহবন্দির মাথায় চামচ গেঁথে দিয়েছিলেন রবার্ট। তার পর আর তাঁকে নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি জেল কর্তৃপক্ষ। রবার্ট আবেদন করেছিলেন, বাকি বন্দিদের সঙ্গে জেলে রাখা হোক তাঁকে। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ সে আবেদন শোনেননি।

জেল সূত্রে জানা গিয়েছিল, এক সহবন্দির মাথায় চামচ গেঁথে দিয়েছিলেন রবার্ট। তার পর আর তাঁকে নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি জেল কর্তৃপক্ষ। রবার্ট আবেদন করেছিলেন, বাকি বন্দিদের সঙ্গে জেলে রাখা হোক তাঁকে। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ সে আবেদন শোনেননি।

১১ ১৬
বিচারকের নির্দেশে সেই কুঠুরিতে দিনে ২৩ ঘণ্টা কাটাতেন রবার্ট। এক ঘণ্টা শুধু বাইরে আলো-হাওয়ার থাকার অনুমতি ছিল। রবার্ট নিজের অবস্থা বর্ণনা করে বলেন, ‘‘জীবন্ত কফিনে রাখা হয়েছে আমায়।’’

বিচারকের নির্দেশে সেই কুঠুরিতে দিনে ২৩ ঘণ্টা কাটাতেন রবার্ট। এক ঘণ্টা শুধু বাইরে আলো-হাওয়ার থাকার অনুমতি ছিল। রবার্ট নিজের অবস্থা বর্ণনা করে বলেন, ‘‘জীবন্ত কফিনে রাখা হয়েছে আমায়।’’

১২ ১৬
বার বার সাধারণ জেলে থাকার আবেদন জানিয়েছিলেন রবার্ট। অন্তত বড়দিনটা তাঁকে বাকি বন্দিদের সঙ্গে কাটাতে দেওয়া হোক, সে আবেদনও করেছিলেন। ২০২১ সালে শেষ বার তিনি মামলায় হেরে যান। বিচারক নির্দেশ দেন, আমৃত্যু তাঁকে ওই কুঠুরিতেই থাকতে হবে।

বার বার সাধারণ জেলে থাকার আবেদন জানিয়েছিলেন রবার্ট। অন্তত বড়দিনটা তাঁকে বাকি বন্দিদের সঙ্গে কাটাতে দেওয়া হোক, সে আবেদনও করেছিলেন। ২০২১ সালে শেষ বার তিনি মামলায় হেরে যান। বিচারক নির্দেশ দেন, আমৃত্যু তাঁকে ওই কুঠুরিতেই থাকতে হবে।

১৩ ১৬
এই নিয়ে বার বার সরব হয়েছে রবার্টের পরিবার। তাঁর ভাইপো গেভিন মড্‌সলে বলেন, ‘‘ধর্ষকদের সঙ্গে একই কুঠুরিতে রাখা হয়েছিল রবার্টকে। তিনি নিজেই বলেছিলেন আমাদের। এ-ও বলেছিলেন, দরকারে আরও ধর্ষককে মারবেন তিনি।’’

এই নিয়ে বার বার সরব হয়েছে রবার্টের পরিবার। তাঁর ভাইপো গেভিন মড্‌সলে বলেন, ‘‘ধর্ষকদের সঙ্গে একই কুঠুরিতে রাখা হয়েছিল রবার্টকে। তিনি নিজেই বলেছিলেন আমাদের। এ-ও বলেছিলেন, দরকারে আরও ধর্ষককে মারবেন তিনি।’’

১৪ ১৬
রবার্টের ভাইপো গেভিন এ-ও জানিয়েছেন যে, তাঁর কাকা যে অপরাধ করেছেন তা তাঁর পক্ষে কথা বলছে না। তবে রবার্টের দিকটিও ভেবে দেখা হোক। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ওঁর কাজকে সমর্থন করছি না। তিনি খুবই খারাপ কাজ করেছেন। কিন্তু তিনি কোনও শিশু বা মহিলাকে খুন করেননি। যাঁদের খুন করেছিলেন, তাঁরাও খারাপ লোক।’’

রবার্টের ভাইপো গেভিন এ-ও জানিয়েছেন যে, তাঁর কাকা যে অপরাধ করেছেন তা তাঁর পক্ষে কথা বলছে না। তবে রবার্টের দিকটিও ভেবে দেখা হোক। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ওঁর কাজকে সমর্থন করছি না। তিনি খুবই খারাপ কাজ করেছেন। কিন্তু তিনি কোনও শিশু বা মহিলাকে খুন করেননি। যাঁদের খুন করেছিলেন, তাঁরাও খারাপ লোক।’’

১৫ ১৬
২০০০ সালে স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানিয়েছিলেন রবার্ট। বিচারককে চিঠি দিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘কেন আমাকে দিনে ২৩ ঘণ্টা আটকে রাখা হচ্ছে? কেন আমাকে খেতে দেওয়া হচ্ছে? খাবার দেওয়া বন্ধ করুন।’’ রবার্টের মৃত্যুর আর্জিও খারিজ হয়ে যায়।

২০০০ সালে স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানিয়েছিলেন রবার্ট। বিচারককে চিঠি দিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘কেন আমাকে দিনে ২৩ ঘণ্টা আটকে রাখা হচ্ছে? কেন আমাকে খেতে দেওয়া হচ্ছে? খাবার দেওয়া বন্ধ করুন।’’ রবার্টের মৃত্যুর আর্জিও খারিজ হয়ে যায়।

১৬ ১৬
রবার্টের আগে সব থেকে বেশি বছর জেলে নিভৃত কুঠুরিতে ছিলেন আমেরিকার অ্যালবার্ট উডফক্স। ৪৩ বছর নিভৃত কুঠুরিতে থাকার পর ২০১৬ সালে মুক্তি পান তিনি। তাঁকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন রবার্ট। ৪৫ বছর কাচের কুঠুরিতে কাটাতে হবে তাঁকে।

রবার্টের আগে সব থেকে বেশি বছর জেলে নিভৃত কুঠুরিতে ছিলেন আমেরিকার অ্যালবার্ট উডফক্স। ৪৩ বছর নিভৃত কুঠুরিতে থাকার পর ২০১৬ সালে মুক্তি পান তিনি। তাঁকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন রবার্ট। ৪৫ বছর কাচের কুঠুরিতে কাটাতে হবে তাঁকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy