Bollywood movie Deewaar influenced Hong Kong action movie forever and started heroic bloodshed genre worldwide dgtl
Amitabh Bachchan-Yash Chopra
পথ দেখিয়েছিল বলিউড, বিশ্বের ফিল্মজগতে এক নয়া ঘরানা তৈরি করেছিল অমিতাভ-যশের ছবি
১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দিওয়ার’ ছবিতে অভিনয় করে বলিপাড়ায় অমিতাভ ‘অ্যাংগ্রি ইয়ং ম্যান’ হিসাবে নিজের পরিচিতি তৈরি করে ফেলেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৩ ১২:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি। প্রেক্ষাগৃহে তখন মুক্তি পেয়েছে যশ চোপড়ার একটি হিন্দি ছবি। শশী কপূর, অমিতাভ বচ্চন, পরভিন ববি, নীতু সিংহ, নিরুপা রায়ের অভিনয়। সঙ্গে সেলিম খান এবং জাভেদ আখতারের জুটির সংলাপ। ‘মেরে পাস মা হ্যায়’ সংলাপটি তখন দর্শকের মুখে মুখে।
০২১৯
‘দিওয়ার’ ছবিতে দুই ভাইয়ের সম্পর্কের রসায়ন থেকে আদ্যোপান্ত অ্যাকশন— কোনও কিছুরই অভাব ছিল না। মুক্তির পর এই ছবি শুধুমাত্র ভারতীয় দর্শকের মন জিতে নেয়নি। তা প্রভাব ফেলেছিল বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তেও।
০৩১৯
যশ পরিচালিত ‘দিওয়ার’ ছবিটি সত্তর থেকে আশির দশকে যে বিদেশি ফিল্মজগতে এক নতুন ঘরানার জন্মও দিয়েছিল তা অজানা অনেকেরই।
০৪১৯
১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দিওয়ার’ ছবিতে অভিনয় করে বলিপাড়ায় অমিতাভ ‘অ্যাংগ্রি ইয়ং ম্যান’ হিসাবে নিজের পরিচিতি তৈরি করে ফেলেন। শুধুমাত্র ভারতের ছবি নির্মাতারাই নন, বিদেশের বিভিন্ন পরিচালকেও ছবিটি দেখে মুগ্ধ হয়ে যান।
০৫১৯
দুই বড় মাপের নায়ককে নিয়ে যে অ্যাকশন ঘরানার এমন ছবি বানানো যেতে পারে, তা ‘দিওয়ার’-এর মাধ্যমে হাতেনাতে প্রমাণ দিয়েছিলেন যশ। বিশেষ করে হং কংয়ের পরিচালকেরা ভেবেছিলেন এই ছবির ধারার উপর ভিত্তি করেই নতুন ছবি বানাবেন।
০৬১৯
এমনকি হং কংয়ের শ ব্রাদার্সের জনপ্রিয় এক প্রযোজনা সংস্থা ‘দিওয়ার’ ছবির স্বত্ব কিনে ফেলে। যশের ছবি মুক্তির চার বছর পর ১৯৭৯ সালে হং কং-এ মুক্তি পায় ‘দ্য ব্রাদার্স’ ছবিটি। এই ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন ড্যানি লি এবং টোনি লিউ নামের হং কংয়ের দুই জনপ্রিয় তারকা।
০৭১৯
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘দ্য ব্রাদার্স’ ছবির প্রতিটি দৃশ্য ‘দিওয়ার’ থেকে অনুরূপ ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। এমনকি ‘দিওয়ার’ ছবির কয়েকটি জনপ্রিয় সংলাপও হিন্দি থেকে ক্যান্টোনিজ় ভাষায় রূপান্তর করা হয়েছিল।
০৮১৯
আশির দশকে ‘দ্য ব্রাদার্স’ ছবিটি হং কংয়ের ফিল্মজগতে অ্যাকশন ঘরানার একটি নয়া অধ্যায়ের সূচনা ঘটায়। এই ছবি মুক্তির পর ‘দিওয়ার’ ছবির কথাও দর্শক জানতে পারেন। হং কংয়ের ছবি নির্মাতারা এই নয়া ঘরানার নাম দিয়েছিলেন ‘হিরোইক ব্লাডশেড’।
০৯১৯
১৯৮৬ সালে হংল কংয়ে ‘আ বেটার টুমরো’ নামের ‘হিরোইক ব্লাডশেড’ ঘরানার একটি ছবি মুক্তি পায়। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন টি লুং, লেসলি চেউং এবং চো উন-ফ্যাট।
১০১৯
‘আ বেটার টুমরো’ ছবিটি বিশ্বদরবারে প্রশংসা কুড়োয়। এমনকি হলিউড ফিল্মজগৎকেও প্রভাবিত করে। ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ এবং ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জন উইক’ ছবি দু’টির চিত্রনাট্য আসলে ‘আ বেটার টুমরো’ ছবি থেকে অনুপ্রাণিত।
১১১৯
এমনকি ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কোরিয়ান ছবি ‘দ্য রেইড: রিডেম্পশন’ও ‘আ বেটার টুমরো’ ছবির ধাঁচেই ‘হিরোইক ব্লাডশেড’ ঘরানা ঘেঁষা।
১২১৯
১৯৯৪ সালে বলিপাড়ায় সঞ্জয় গুপ্তের পরিচালনায় একটি ছবি মুক্তি পায়। ‘আতিশ: ফিল দ্য ফায়ার’ ছবিটিও নাকি ‘আ বেটার টুমরো’ থেকে অনুপ্রাণিত। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সঞ্জয় দত্ত এবং আদিত্য পাঞ্চোলি।
১৩১৯
কিন্তু মজার বিষয়, ‘আ বেটার টুমরো’ ছবিটিকে সম্পূর্ণ ভাবে ‘অরিজিনাল’ বলা চলে না। ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য স্টোরি অফ আ ডিসচার্জড প্রিজনার’ এবং ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য ব্রাদার্স’ ছবির চিত্রনাট্যের সম্মিলিত প্রয়াস ‘আ বেটার টুমরো’।
১৪১৯
‘দিওয়ার’ ছবিটি মুক্তির পর অমিতাভ, পরভিন এবং সেলিম-জাভেদ জুটি যেমন এক দিকে তাঁদের কেরিয়ারে সাফল্যের চূড়ায় উঠেছিলেন, ঠিক তেমন অন্য দিকে দেশ-বিদেশ জুড়ে অ্যাকশন ঘরানার ছবির চল বৃদ্ধি পায়।
১৫১৯
১৯৯২ সালে ‘হার্ড বয়েল্ড’ ছবির চিত্রনাট্য থেকে বানানো হয় ‘মোহরা’ নামের হিন্দি ছবিটি। এমনকি ‘হার্ড বয়েল্ড’ ছবির একটি অ্যাকশন দৃশ্য ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘শপথ’ ছবিতে ফুটিয়ে তোলা হয়।
১৬১৯
১৯৮৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সিটি অন ফায়ার’ ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৯২ সালে ‘রিসার্ভর ডগ্স’ ছবিটি তৈরি করা হয়। আবার ‘রিসার্ভর ডগ্স’ ছবির রিমেক তৈরি করা হয় ২০০২ সালে। ‘কাঁটে’ ছবিটি আসলে ‘রিসার্ভর ডগ্স’-এর চিত্রনাট্য থেকে প্রভাবিত।
১৭১৯
২০০০ সালে গুড্ডু ধানোয়া পরিচালিত ‘বিচ্ছু’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় ববি দেওল এবং রানি মুখোপাধ্যায়কে। এই ছবিটি বহুল প্রশংসা পেলেও আদতে এই ছবিটি ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লিওন: দ্য প্রফেশনাল’-এর রিমেক।
১৮১৯
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘দিওয়ার’ ছবি থেকে শুধুমাত্র হং কংয়ের ছবি নির্মাতারাই রিমেক বানাননি। ১৯৭৬ সালে ‘মাগাড়ু’ নামের একটি তেলুগু ছবি, ১৯৮১ সালে ‘থি’ নামের একটি তামিল ছবি এবং ১৯৮৩ সালে ‘নথি মুথল নথি ভারে’ ছবিটি রিমেক বানানো হয়েছিল ‘দিওয়ার’ থেকে।
১৯১৯
এমনকি ‘দিওয়ার’ ছবির অনুকরণে ১৯৭৮ সালে একটি পার্সি ভাষার ছবি ‘কুসে-ইয়ে-জুনুব’ এবং ১৯৮৫ সালে ‘আচিলারিন কোকুগু’ নামে একটি তুর্কি ভাষার ছবি মুক্তি পায়।