Bollywood actress Aditi Govitrikar, who acted in movies is psychologist dgtl
Aditi Govitrikar
মডেল হিসাবে জনপ্রিয়, বিবাহবিচ্ছেদের পর অভিনয় থেকে সরে যান, শাহরুখের সহ-অভিনেত্রী এখন চিকিৎসক
কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর মডেলিংয়ের জগতে পা রাখেন অদিতি গোভিত্রিকর। একের পর এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হতে থাকেন তিনি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ১৪:৫৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৬
পেশায় চিকিৎসক। আবার মডেলিংও করেন। তিনিই বিশ্বের প্রথম ভারতীয় মহিলা, যিনি বিয়ের পর বিশ্বসুন্দরীর খেতাব পেয়েছেন। পেশাগত দায়িত্ব সামলে অভিনয়জগতেও নিজের কেরিয়ার গড়ে তুলেছেন তিনি। শাহরুখ খান, অক্ষয় কুমারের মতো বলি অভিনেতার সঙ্গে অভিনয়ও করেছেন তিনি। অভিনয় ছেড়ে এখন চিকিৎসায় মন দিয়েছেন অদিতি গোভিত্রিকর।
০২২৬
১৯৭৪ সালের ২১ মে মহারাষ্ট্রের পানভেলে জন্ম অদিতির। সেখানে বাবা-মা, ভাই এবং বোনের সঙ্গে থাকতেন তিনি। মুম্বইয়ের স্কুল এবং কলেজ থেকেই পড়াশোনা শেষ করেন অদিতি।
০৩২৬
১৯৯৭ সালে এমবিবিএস পাশ করেন অদিতি। কলেজে পড়াকালীন তাঁর আালাপ হয় মুফজ্জল লকড়াওয়ালার সঙ্গে। কলেজে অদিতির সিনিয়র ছিলেন মুফজ্জল। সাত বছর সম্পর্কে ছিলেন তাঁরা।
০৪২৬
মুফজ্জল এবং অদিতির ধর্ম ভিন্ন হওয়ার কারণে বিয়ের জন্য অদিতির পরিবার আপত্তি জানায়। পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও মুফজ্জলকে বিয়ে করেন অদিতি। ১৯৯৮ সালে বিয়ে করেন দু’জন।
০৫২৬
বিয়ের পর ধর্মান্তরিত হয়ে নাম পরিবর্তন করেন অদিতি। নিজের নাম রাখেন সারা লকড়াওয়ালা। কিন্তু পেশাগত জীবনে নিজের পুরনো নামই ব্যবহার করতেন তিনি।
০৬২৬
কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর মডেলিংয়ের জগতে পা রাখেন অদিতি। একের পর এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হতে থাকেন তিনি। ২০০১ সালে বিবাহিত মহিলাদের জন্য একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে জয়ীর মুকুট পরেন অদিতি। শুধু তাই নয়, অদিতি প্রথম ভারতীয় বিবাহিত মহিলা যিনি বিশ্বসুন্দরীর খেতাব পান।
০৭২৬
মডেল হিসাবে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যান অদিতি। বিভিন্ন খ্যাতনামী সংস্থার বিজ্ঞাপনী প্রচারের মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। বলি অভিনেতা হৃতিক রোশনের সঙ্গে বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে আরও জনপ্রিয়তা পান অদিতি।
০৮২৬
পাকাপাকি ভাবে অভিনেত্রী হিসাবে নিজের কেরিয়ার এগিয়ে না নিয়ে যাওয়ার জন্য এখনও আফসোস করেন অদিতি। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েওছিলেন তিনি। এমনকি অতীতের খারাপ অভিজ্ঞতার কারণে অভিনয়ের সুযোগও নাকি হারিয়েছিলেন অদিতি।
০৯২৬
সাক্ষাৎকারে অদিতি জানিয়েছিলেন যে, বলিপাড়ার এক জনপ্রিয় ছবিনির্মাতার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অতীতে ‘কাস্টিং কাউচ’ নিয়ে খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন অভিনেত্রী। সে কারণে ছবিনির্মাতার সঙ্গে দেখা করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন তিনি।
১০২৬
অদিতি বলেছিলেন, ‘‘আমি একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেই প্রতিযোগিতার বিচারকের আসনে ছিলেন যশ চোপড়া। আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অতীতের অভিজ্ঞতা এত খারাপ ছিল যে আমি ভয় পেয়ে যাই। দেখা করতে যাইনি ওঁর সঙ্গে।’’
১১২৬
অদিতির কথায়, ‘‘আমি যশ চোপড়ার অফিসে খবর পাঠিয়েছিলাম যে, অভিনয়ের প্রতি আমার কোনও আগ্রহ নেই। তাঁর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম আমি। এখন ভাবি যে, কী বোকামি করেছিলাম। আমার জীবনের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল সেটা। আসলে আমার মনে ভয় ছিল। কাস্টিং কাউচ নিয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা ছিল আমার। কী ভাবে সেগুলো সামলাতে হত তা জানতাম না। অডিশন দিতে যাওয়ার সময় প্রতি দিন আমার সঙ্গে মায়ের যাওয়া সম্ভব ছিল না। একা যেতে ভয় লাগত। তাই এড়িয়ে গিয়েছিলাম।’’
১২২৬
অদিতি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছিলেন যে, দক্ষিণী ফিল্মজগতের লোকজন পেশাদার এবং সেখানে নাকি ‘কাস্টিং কাউচ’ নিয়ে রাজনীতিও কম হয়। সেই খোঁজ পেয়ে দক্ষিণী ফিল্মজগতের মাধ্যমেই অভিনয়ে কেরিয়ার শুরু করেন অদিতি।
১৩২৬
১৯৯৯ সালে তেলুগু ছবি ‘থাম্মুড়ু’তে প্রথম অভিনয় করতে দেখা যায় অদিতিকে। পবন কল্যাণের সঙ্গে অভিনয় করে কেরিয়ার শুরু করেন তিনি।
১৪২৬
২০০২ সালে হিন্দি ছবিতে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান অদিতি। ‘সোচ’ ছবিতে সঞ্জয় কপূর, রবিনা টন্ডন, আরবাজ় খান এবং ড্যানি ডেনজংপার সঙ্গে অভিনয় করেন অদিতি।
১৫২৬
‘সোচ’ ছবিতে অভিনয়ের পর একে একে ‘১৬ ডিসেম্বর’, ‘বাজ’, ‘ধুন্দ’, ‘ভিক্টোরিয়া নম্বর ২০৩’, ‘ভেজা ফ্রাই ২’, ‘হম তুম শাবানা’, ‘কোয়ি জানে না’র মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন অদিতি।
১৬২৬
শাহরুখ খান অভিনীত ‘পহেলি’ এবং অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘দে দনা দন’ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় অদিতিকে। কিন্তু ধীরে ধীরে অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি।
১৭২৬
বিয়ের এক বছরের মধ্যেই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন অদিতি। ২০০৭ সালে জন্ম হয় পুত্র জিহানের। কিন্তু সংসার জীবনে ভাঙন ধরে অদিতির। ২০০৯ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় অদিতি এবং মুফজ্জলের।
১৮২৬
বিচ্ছেদের কারণ নিয়ে অদিতি বা মুফজ্জল কেউই মুখ খোলেননি। খাতায়কলমে বিচ্ছেদের আগেই মুফজ্জল অস্ট্রেলিয়া চলে যান। অদিতি তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন বাবা-মায়ের কাছে। বিচ্ছেদের পর নিজেকে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে দেন অদিতি।
১৯২৬
মডেলিং এবং অভিনয় থেকে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি করে অদিতি ফিরে যান ডাক্তারির পেশায়। দুই সন্তানের আইনি দায়িত্বও পান তিনি। বিচ্ছেদের পরে অদিতি বিয়ে না করলেও মুফজ্জল দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ২০১১ সালে গোয়ায় প্রিয়ঙ্কা কউলের সঙ্গে বিয়ে হয় মুফজ্জলের।
২০২৬
মনোবিদ্যা নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে তা নিয়েই কেরিয়ারে এগিয়ে যান অদিতি। মনোরোগ নিয়ে নানা রকম কাজ করতে শুরু করেন তিনি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মনোরোগ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ওয়ার্কশপ করতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
২১২৬
ভারতের প্রথম সারির শিল্পপতি থেকে শুরু করে বলিপাড়ার বহু তারকার কাউন্সেলিং করেন অদিতি। তাঁর সঙ্গে ভাল বন্ধুত্ব রয়েছে মালাইকা অরোরা এবং অর্জুন কপূরের।
২২২৬
বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে জানা যায়, কোভিড অতিমারি চলাকালীন নিজের বাড়িতে মালাইকা এবং অর্জুনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন অদিতি। তাঁর দু’সপ্তাহের মধ্যে দুই বলি তারকা করোনায় আক্রান্ত হন। কিছু দিন পরে কোভিডে আক্রান্ত হন অদিতি নিজেও। সুরক্ষার খাতিরে নিজেকে ঘরবন্দি করেছিলেন অদিতি। এমনকি তাঁর বাড়িও ঘিরে দেওয়া হয়েছিল বলে বলিপাড়া সূত্রে খবর।
২৩২৬
হিন্দি এবং তেলুগু ছবির পাশাপাশি কন্নড় এবং মরাঠি ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা যায় অদিতিকে। ‘ইয়ে মেরি লাইফ হ্যায়’, ‘কেহনা হ্যায় কুছ মুঝকো’, ‘অর্জুন’, ‘বড়ি দূর সে আয়ি হ্যায়’ নামের একাধিক হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করেন তিনি। পাশাপাশি আদনান সামি, জগজিৎ সিংহ এবং আশা ভোঁসলের মতো সঙ্গীতশিল্পীদের মিউজ়িক ভিডিয়োয় অভিনয় করেন অদিতি।
২৪২৬
মনোরোগ নিয়ে আলোচনা করতে অদিতির ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে হাজির হতেন অতিথিরা। লাইভ শোয়ে অতিথি হিসাবে বলিপাড়ার তারকারাও উপস্থিত থাকতেন। শুধু তা-ই নয়, ইউটিউবেও মনোরোগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি চ্যানেল খোলেন অদিতি।
২৫২৬
বর্তমানে ইনস্টাগ্রামের পাতায় অদিতির অনুগামীর সংখ্যা ১৩ লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে। ২০২২ সালে ‘মিসম্যাচড’ নামের একটি ওয়েব সিরিজ়ে শেষ অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে অদিতিকে।
২৬২৬
অদিতির বোন আরজ়ু পেশায় ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার। তবে দিদির মতো তিনিও পরে অভিনয় জগতে কেরিয়ার শুরু করেন। ‘বাগবন’, ‘মেরে বাপ পহলে আপ’-সহ কিছু ছবি এবং হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন আরজ়ু।