Bollywood actor Akshaye Khanna dealt with mental stress while starting of his acting career dgtl
Akshaye Khanna
কাজ ছিল না তিন বছর, মানসিক অবসাদে মাথার চুল পড়ে যেতে থাকে অক্ষয়ের
কেরিয়ারের প্রথমার্ধে একাধিক ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন অক্ষয়। কিন্তু কাজের চাপে তাঁর মানসিক চাপও বাড়তে থাকে। তার প্রভাব পড়তে থাকে অভিনেতার শরীরেও।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
অভিনয় জগতে আসার আগে টিনসেল নগরীতে প্রথম পরিচয় তৈরি হয়েছিল বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা বিনোদ খন্নার দৌলতে। সম্পর্কে বিনোদের কনিষ্ঠ পুত্র অক্ষয়। তারকাসন্তান হওয়ার পরেও তিনি বলিপাড়়ায় জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছতে ব্যর্থ হন। অভিনয় জীবনের গোড়ায় এক সময় মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন অক্ষয়।
০২১৬
১৯৭৫ সালে মুম্বইয়ে জন্ম অক্ষয়ের। মুম্বই এবং উটিতে স্কুলজীবন কেটেছে তাঁর। তার পর মুম্বইতেই অভিনয় নিয়ে পড়াশোনা অক্ষয়ের। ১৯৯৭ সালে অভিনয়জীবনে পা রাখেন তিনি। পঙ্কজ পরাশর পরিচালিত ‘হিমালয় পুত্র’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি।
০৩১৬
কেরিয়ারের প্রথমার্ধে একাধিক ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন অক্ষয়। কিন্তু কাজের চাপে তাঁর মানসিক চাপও বাড়তে থাকে। তার প্রভাব পড়তে থাকে অভিনেতার শরীরে। অভিনেতা এক সাক্ষাৎকারে বলেন,‘‘মানসিক চাপ বাড়তে থাকার ফলে আমার মাথা থেকে চুল পড়তে শুরু করেছিল। দিনের পর দিন চুল পড়ার পরিমাণ বাড়তেই থাকে। তখন সবে কেরিয়ার শুরু করছি আমি। এই ঘটনার পর আমাকে মানসিক অবসাদ ঘিরে ফেলে।’’
০৪১৬
অক্ষয় একজন পিয়ানোবাদকের সঙ্গে নিজের পরিস্থিতির তুলনা করেছিলেন। অভিনেতার বক্তব্য, এক জন পিয়ানোবাদকের হাতের সমস্ত আঙুল কেটে নিলে যেমন হয়, তাঁর জীবনেও ঠিক তেমনই ঘটছিল। অভিনেতাদের চুলের ঘনত্ব বেশি না থাকলে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে বলে অক্ষয়ের দাবি।
০৫১৬
চুল পড়ে যাওয়ার কারণে নাকি বলিপাড়ার পরিচালক-প্রযোজকেরা অক্ষয়কে বেশি কাজের সুযোগ দিতেন না। তিনি মনে করেন, একমাত্র এই কারণেই তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছতে পারেননি।
০৬১৬
‘হিমালয় পুত্র’ মুক্তি পাওয়ার একই বছরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘বর্ডার’ ছবিটি। সুনীল শেট্টি, সানি দেওল, জ্যাকি শ্রফ, তব্বুর মতো তারকাদের সঙ্গে এই ছবিতে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছিলেন অক্ষয়। দর্শকমহল তাঁর অভিনয়গুণে পঞ্চমুখ হয়েছিল।
০৭১৬
তার পর ‘ডোলি সাজা কে রাখনা’, ‘আ অব লউট চলে’, ‘কুদরত’-এর মতো ছবিতে কাজ করলেও অক্ষয়ের কেরিয়ার গ্রাফ উপরের দিকে ওঠেনি। ১৯৯৯ সালে সুভাষ ঘাই পরিচালিত ‘তাল’ ছবিতে অভিনয় করে আবার চর্চায় আসেন অক্ষয়।
০৮১৬
‘তাল’-এর পর সোনালি বেন্দ্রের সঙ্গে ‘দহেক’ ছবিতে অভিনয় অক্ষয়ের। কিন্তু বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে ছবিটি। তার পর দু’বছরের বিরতি। ২০০১ সালে ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি।
০৯১৬
থ্রিলার, রোম্যান্টিক কমেডি ঘরানার একাধিক ছবিতে পর পর অভিনয় করেছিলেন অক্ষয়। কোনও চরিত্রই দর্শকের মনে দাগ কাটতে সক্ষম হয়নি। ২০১৬ সালে ‘ঢিসুম’ ছবিতে জন আব্রাহাম, বরুণ ধাওয়ানের পাশাপাশি অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল অক্ষয়কেও। এই ছবি অভিনেতার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
১০১৬
অনেকে মনে করতেন, বলি ইন্ডাস্ট্রি থেকে মাঝেমধ্যেই দুই-এক বছরের জন্য বিরতি নিতেন অক্ষয়। কিন্তু অভিনেতা এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি আদৌ বিরতি নিতেন না। আসলে কাজ পেতেন না বলে বিরতি নিতে বাধ্য হতেন।
১১১৬
অক্ষয়ের মতে, পেশাগত দিক থেকে অভিনেতারা সবচেয়ে দুর্ভাগ্যবান হন। সঙ্গীতশিল্পী এবং নৃত্যশিল্পীদের থেকেও অভিনেতাদের কাজ কঠিন। অক্ষয় বলেন, ‘‘অভিনেতারা নিজের সেরা পারফরম্যান্স দিলেই সব শেষ হয়ে যায় না। পরিচালক, প্রযোজক, সহ-অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার, সিনেম্যাটোগ্রাফার ছাড়াও আরও অনেকের উপর নির্ভর করে এক জন অভিনেতার কাজ। সর্বোপরি সবচেয়ে কঠিন কাজ, দর্শকের মনে জায়গা করে নেওয়া।’’
১২১৬
২০১২ সালে ‘দিল্লি সাফারি’ নামে একটি অ্যানিমেশন ছবিতে অক্ষয় তাঁর কণ্ঠ ব্যবহার করেছিলেন। তার পর ৩ বছর ব্যক্তিগত কিছু কারণের জন্য বড় পর্দা থেকে বিরতি নিয়েছিলেন তিনি।
১৩১৬
অক্ষয় জানান, যে দীর্ঘ সময় অভিনয় জগৎ থেকে তিনি দূরে ছিলেন, সেই সময়টা কষ্টদায়ক ছিল। অক্ষয়ের মনে হত যে, তাঁকে দর্শক ভুলে যাচ্ছেন। অভিনেতার বিশ্বাস, যত দিন তাঁকে বড় পর্দায় দেখা যাবে, দর্শক তত দিনই তাঁকে মনে রাখবেন। বেশি দিন অক্ষয়ের মুখ পর্দায় দেখা না গেলে দর্শকও তাঁকে ভুলে যাবেন।
১৪১৬
অতিমারির পর চার-পাঁচটি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় অক্ষয়কে। কিন্তু ‘দৃশ্যম ২’ ছবিতে আইপিএস অফিসারের ভূমিকায় তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ দর্শকমহল।
১৫১৬
অক্ষয় এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘যখন আমি অভিনয়ে ফিরব ফিরব করছি, তখন আমার মধ্যে ভয়ের সঙ্গে এক অদ্ভুত রকমের অনিশ্চয়তা কাজ করত। পৃথিবীর সবাই অনবরত ছুটে চলেছে। চোখের সামনে থেকে সরে যাওয়া মানেই মন থেকে সরে যাওয়া। আমাকে মানসিক দিক দিয়ে আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হয়েছিল।’’
১৬১৬
তবে আবার অভিনয় শুরু করার পর নিজে থেকেই পরিশ্রম করার প্রতিশ্রুতি নিয়েুছেন অক্ষয়। অভিনেতার মন্তব্য, ‘‘যে সময় হারিয়ে গিয়েছে, তা আমি আর ফিরে পাব না। কিন্তু ওই সময়ে আমি যা কাজ করতে পারিনি, তা এ বার পরিশ্রম করে পুষিয়ে দেব। দর্শকের ভালবাসা ফিরে পাওয়ার জন্য নিজের সেরাটা দেব।’’