Bizarre: 'Trovants', the stones found in Romania, which reportedly growing by up to 2 inches every 1000 years dgtl
Living Stones
বছর বছর আকারে বাড়ে, কাটলে মেলে গাছের মতো চক্র! রোমানিয়ায় ছড়িয়ে অসংখ্য ‘জীবন্ত পাথর’
পাথরের ক্ষয় হতে পারে। সেগুলি কী ভাবে বৃদ্ধি পায়? তবে কি এই পাথরগুলিতে প্রাণ রয়েছে? স্থানীয়দের অন্তত তেমনই দাবি। এমনও হয় না কি?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
বুখারেস্টশেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ১৭:২৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
এক-একটির বয়স নাকি ৬০ লক্ষ বছর। কোনওটিকে হাতের মুঠোয় বন্দি করা যায়। কোনটি উচ্চতায় সাড়ে ৪ মিটার। দেখতে যেন পাথুরে বুদবুদ। রোমানিয়া জুড়ে এ ধরনের অসংখ্য পাথর ছ়ড়িয়ে রয়েছে।
০২১৭
স্থানীয়দের দাবি, বুদবুদের মতো দেখতে এই পাথরগুলি প্রতি হাজার বছরে সর্বোচ্চ ২ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। কারও আবার দাবি, প্রতি ১২০০ বছরে ৪-৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায় এগুলি।
০৩১৭
এত বছর ধরে বৃষ্টির জল পড়ার জেরে নাকি পাথরের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে। পাথরের ক্ষয় হতে পারে। সেগুলি কী ভাবে বৃদ্ধি পায়? তবে কি এই পাথরগুলিতে প্রাণ রয়েছে? স্থানীয়দের অন্তত তেমনই দাবি। এমনও হয় নাকি? এমনতরো নানা প্রশ্ন নিয়ে পাথরগুলি দেখতে রোমানিয়ায় ভিড় করেন পর্যটকেরা।
০৪১৭
রোমানিয়ার এই পাথরগুলির একটি গালভরা নামে রয়েছে। এক-একটি পাথরকে ‘ট্রোভ্যান্ট’ নামে ডাকা হয়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটি হল জার্মান শব্দ ‘স্যান্ডস্টাইনকনক্রেশনেন’-এর সমনাম। যার অর্থ সিমেন্ট দিয়ে জোড়া বালুকণা।
০৫১৭
কসটেস্টি নামে রোমানিয়ায় একটি ছোট গ্রামে মূলত এ ধরনের অংসখ্য পাথর দেখতে পাওয়া যায়। সে দেশের রাজধানী বুখারেস্ট থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই গ্রামটি। ওই গ্রামের পাশাপাশি রোমানিয়ার অন্তত ২০টি জায়গাতেও এমন পাথর ছড়িয়ে রয়েছে।
০৬১৭
জিয়োলজিক্যাল ইনস্টিটিউট অফ রোমানিয়ার সঙ্গে যুক্ত মিরসিয়া টিকলিয়ানু ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘মেল অনলাইন’কে বলেন, ‘‘রোমানিয়ায় নানা বয়সের ট্রোভ্যান্ট রয়েছে। মাটি থেকে এগুলির উৎপত্তি হয়নি। প্রাকৃতিক কারণে বিভিন্ন ভৌগোলিক সময় এগুলি তৈরি হয়ে গিয়েছে। কতগুলিকে আবার বালির খাদেও দেখা যায়।’’
০৭১৭
টিকলিয়ানু আরও বলেন, ‘‘রোমানিয়ার ভৌগোলিক সাহিত্যে সর্বপ্রথম ‘ট্রোভ্যান্ট’ শব্দের ব্যবহার দেখা গিয়েছিল।’’
০৮১৭
প্রায় গোলাকার বা অর্ধবৃত্তাকার এই ট্রোভ্যান্টগুলি আসলে বালুকণার আস্তরণে ঢাকা বেলেপাথর। যা পাথরের উপরে ঢাকনার মতো আস্তরণ তৈরি করেছে।
০৯১৭
বৈজ্ঞানিকদের দাবি, প্রায় ৬০ লক্ষ বছর আগে ভূমিকম্পের জেরে ট্রোভ্যান্টগুলি তৈরি হয়েছিল। বছরের পর বছর ধরে তার উপর বালি, পাথরের আস্তরণ জমা পড়েছে। সেগুলিকে আঠার মতো জুড়ে রেখেছে চুনাপাথরের আস্তরণ।
১০১৭
বৈজ্ঞানিকদের আরও দাবি, শত সহস্র বছর ধরে ভারী বৃষ্টির জেরে ট্রোভ্যান্টের উপরিভাগের আস্তরণ ভেদ করে জল ঢুকে গিয়েছে। ধীরে ধীরে তা পাথরগুলির উপরে জমা হতে শুরু করেছে। যদিও এই প্রক্রিয়াটি ঠিক কী ভাবে হয়, তা বিশদে জানাননি তাঁরা।
১১১৭
বিশেষজ্ঞদের মতে, বৃষ্টির জলে থাকা খনিজ পদার্থের সঙ্গে বিক্রিয়ায় ট্রোভ্যান্টের ভিতর অত্যধিক চাপ তৈরি হয়। যার জেরে পাথরগুলি ফুলেফেঁপে বহু গুণ হয়ে ওঠে। যেন সেগুলির বৃদ্ধি হয়েছে।
১২১৭
পাথরগুলিকে কাটার পর এর মধ্যে গাছের গুঁড়ির মতো বৃত্তাকার রিং দেখা গিয়েছে। সেগুলির প্রতিটিই পাথরগুলির বয়স জানান দেয়।
১৩১৭
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ট্রোভ্যান্টগুলির চেহারায় বদল দেখা গিয়েছে। বৈজ্ঞানিকদের মতে, এগুলিকে সে অর্থে ‘জীবন্ত’ বলা যায় না। তবে স্থানীয় বা পর্যটকেরা এগুলিকে ‘জীবন্ত’ বলেই বর্ণনা দেন।
১৪১৭
রোমানিয়ার কার্পাথিয়ান এলাকায় এমন অসংখ্য পাথরের দেখা মিললেও ট্রোভ্যান্টগুলি দেখতে কসটেস্টি গ্রামেই কেন ভিড় হয়?
১৫১৭
আসলে ওই গ্রামের ট্রোভ্যান্টগুলি রোমানিয়ার অন্যান্য জায়গার পাথরের তুলনায় আকারে বড়। কোনওটি গোলাকার, কোনওটির আবার আকৃতি ডিম্বাকার। অনেকগুলি পাথরের পাশে আবার সেটির ‘যমজ’ ট্রোভ্যান্ট দেখা যায়।
১৬১৭
কসটেস্টি গ্রামের ট্রোভ্যান্টগুলির আরও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বৃহদাকার পাথরগুলির পাশে ছোট আকারের পাথরও চোখে পড়ে। সেই পাথরগুলির গায়ে ছোট ছোট গোলাকার কাঁটার মতো অজস্র অংশ দেখা যায়।
১৭১৭
বড়সড় ট্রোভ্যান্টের পাশে পড়ে থাকা এ ধরনের ছোট আকারের পাথরগুলির গায়ে যেন অসংখ্য বালুকণা, নুড়ি আটকে রয়েছে।