Asad Rauf: Controversial Umpire of Pakistan who got involved in many scandal dgtl
Asad Rauf
ম্যাচ গড়াপেটা থেকে মুম্বইয়ের মডেলের সঙ্গে ‘সম্পর্ক’, বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন আসাদ রউফ
সদ্য প্রয়াত হয়েছেন আসাদ রউফ। ম্যাচ গড়াপেটা থেকে শুরু করে যৌন কেলেঙ্কারি, বার বার বিতর্কের মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের এই প্রাক্তন আম্পায়ার।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:০২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
সদ্য প্রয়াত হয়েছেন আসাদ রউফ। ম্যাচ গড়াপেটা থেকে শুরু করে যৌন কেলেঙ্কারি, বার বার বিতর্কের মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের এই প্রাক্তন আম্পায়ার। ভারতীয় মডেলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল হওয়া নিয়েও বিতর্কের মুখে পড়েন রউফ। এ ছাড়া আরও অনেক কাণ্ডের সঙ্গে নিজের নাম জড়িয়েছিল সদ্যপ্রয়াত আম্পায়ারের।
০২১৭
এক সময় জমিয়ে আম্পায়ারিং করেছেন পাকিস্তানের এই প্রাক্তন আম্পায়ার। তিন ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে প্রায় ১৭০টি ম্যাচে আম্পায়ারিং করার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর।
০৩১৭
আম্পায়ার হওয়ার আগে নিজেও ক্রিকেট খেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রউফ। খেলা ছাড়ার পর তিনি আম্পায়ারিং শুরু করেন। সব ধরনের ক্রিকেটে ম্যাচ পরিচালনা করেছেন তিনি।
০৪১৭
২০০০ সালে আন্তর্জাতিক এক দিনের ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসাবে রউফ আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। তবে পাকিস্তানের মাটিতে আম্পায়ারিং শুরু করেন ১৯৯৮ সালে। প্রথম টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করেন ২০০৫ সালে। আম্পায়ার হিসাবে আইসিসির এলিট প্যানেলে নাম তোলেন ২০০৬ সালে।
০৫১৭
২০১৩ সালে তাঁর জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে। রউফের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ ছিল, জুয়াড়িদের থেকে দামি উপহার এবং টাকা নিয়েছেন তিনি। আর এর বদলে বিশেষ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নির্দিষ্ট একটি দলের পক্ষে।
০৬১৭
অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর ২০১৬ সালে রউফকে পাঁচ বছর নির্বাসিত করে বিসিসিআই। এর পর থেকেই আম্পায়ারিং থেকে দূরে সরতে বাধ্য হন তিনি। যদিও রউফ জানিয়েছিলেন, “জীবনের সেরা সময় আইপিএলে কাটিয়েছি। অভিযোগ নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। বিসিসিআই নিজেরাই অভিযোগ এনে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
০৭১৭
রউফ জানিয়েছিলেন, ম্যাচ গড়াপেটা-কাণ্ডে তাঁর নাম জড়ালেও তিনি ক্রিকেটারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেন। তিনি বলেন, “আমি খুব খোলামেলা ভাবে ক্রিকেটারদের সঙ্গে মিশতাম। ক্রিকেটার তো বটেই, ওঁদের স্ত্রীরাও আমার সঙ্গ উপভোগ করতেন।”
০৮১৭
২০১৩ সালের পর থেকে রউফকে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মাঠে দেখা যায়নি।
০৯১৭
এর আগে, ২০১২ সালে রউফের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যৌন কেলেঙ্কারির। লীনা কপূর নামে মুম্বইয়ের এক অভিনেত্রী-মডেল রউফের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন।
১০১৭
লীনা বলেছিলেন, “রউফ আমাকে তার আগের পক্ষের বিয়ের কথা জানিয়েছিল। রউফ বলেছিল যে তার স্ত্রী পাকিস্তানের লাহৌরে থাকে। ও আমাকে বলেছিল মুসলিম হওয়ার জন্য ও দু’বার বিয়ে করতে পারে। আমাদের বিয়েতে ওর প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তানরা উপস্থিত থাকবে বলেও রউফ জানিয়েছিল। এর পর থেকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন রউফ আমার শোষণ করে।’’
১১১৭
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন রউফ। তিনি পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘‘সস্তা খ্যাতি পাওয়ার জন্য ওই মহিলা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। ভারতে প্রায়ই এ রকম ঘটনা ঘটে। যদি অভিযোগ সত্যি হত, তা হলে আইপিএল পরিচালনার জন্য আমি ভারতে যেতে পারতাম না। মিথ্যা অভিযোগ করার জন্য ওই মহিলা আমার কাছে পরে ক্ষমাও চেয়েছিলেন।”
১২১৭
রউফ অস্বীকার করলেও তত দিনে লীনার সঙ্গে তাঁর কিছু ছবি ব্যাপক ভাবে ভাইরাল হয়ে যায়।
১৩১৭
ছবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন করলে নিজের আগের মন্তব্য থেকে খানিকটা সরে আসেন। তিনি বলেন, “ওই মহিলাকে আমি চিনতাম। বন্ধু হওয়া এবং কাউকে চেনার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বন্ধুরা এই ভাবে মানুষের সুযোগ নেয় না। আমি কখনই কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি। আমি যদি ওকে বিয়ে করতাম, আমি ওর সঙ্গেই থাকতাম। ও প্রচারের আলোয় আসতে চেয়ে এই সব করছে।’’
১৪১৭
২০১৬ সালে নির্বাসনের পর থেকে বেশ কিছু দিন প্রচারের আলো থেকে দূরে ছিলেন আসাদ। সম্প্রতি চলতি বছরের জুন মাসে আবার ভাইরাল হন তিনি। লাহৌরের বাজারে পুরনো জুতো বিক্রি করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আর সেই ছবিই নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
১৫১৭
লাহৌরের লান্ডা বাজারে রউফ এই দোকানটি চালাতেন। এই দোকানে পুরনো জামাকাপড় এবং জুতো কম দামে পাওয়া যেত। খেলার সামগ্রীও বিক্রি হয়। ক্রিকেট মহলের চাকচিক্য থেকে জুতোর দোকানদার! বিতর্কিত এই আম্পায়ারের নয়া রূপ দেখে চমকেছিলেন অনেকেই।
১৬১৭
জুতো বিক্রি প্রসঙ্গে রউফ বলেছিলেন, “কর্মচারীদের জন্যই এই কাজ করি। ওদের সংসার যাতে চলে, সেটাও আমাকে দেখতে হয়। আমার কোনও স্বার্থ বা লোভ নেই। অনেক টাকা দেখেছি জীবনে। আমার এক সন্তান প্রতিবন্ধী। আর এক জন পড়াশোনা শেষ করে সদ্য আমেরিকা থেকে ফিরেছে। ওদের নিয়েই সময় কেটে যায়। আমি যেটাই করি, সেটার শিখরে পৌঁছনোর চেষ্টা করি। ক্রিকেট খেলার সময়েও তার শিখরে পৌঁছে গিয়েছিলাম। আম্পায়ারিংয়ের সময়েও তাই। এখন দোকানদার হিসেবেও সবার উপরে পৌঁছতে চাই।’’
১৭১৭
বুধবার রাতে লাহৌরে নিজের বাড়িতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এত বিতর্কের নেপথ্যনায়ক রউফের। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩। এত বিতর্ক থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানের আম্পায়ার হিসেবে কয়েক জন আন্তর্জাতিক মঞ্চে খ্যাতি পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে রউফ ছিলেন অন্যতম।