Arvind Swammy is a promising actor of the South Indian film industry who suffered from tragic accident and made a come back dgtl
Arvind Swamy
তিলে তিলে গড়ে তোলা কেরিয়ার নিমেষে লন্ডভন্ড! পঙ্গুত্বের সঙ্গে লড়াই করে পর্দায় ফেরেন অরবিন্দ
অন্ধকার পেরিয়ে যাঁরা আবার আলোয় ফিরতে পারেন, ইতিহাস তো তাঁদেরকেই মনে রেখে দেয়। সিনে দুনিয়ায় অরবিন্দ স্বামী তেমনই একটা নাম। দুর্ঘটনার আঁধার যাঁকে হারাতে দেয়নি। ফিরে এসেছেন নতুন আলোয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ ১৬:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
দক্ষিণী বিনোদন জগতে পরিচিত নাম অরবিন্দ স্বামী। নব্বইয়ের দশকে একের পর এক সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে সহজেই দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন অরবিন্দ।
০২২১
কিন্তু দক্ষিণে যে সময় অরবিন্দের কেরিয়ার একেবারে মধ্যগগনে, ঠিক সেই সময় আচমকা থমকে যায় তাঁর উত্থান। লাইট, ক্যামেরা অ্যাকশনের বিপরীতে বছরের পর বছর তাঁকে কাটাতে হয় অন্ধকারে।
০৩২১
অন্ধকার অনেকের জীবনেই নামে। কিন্তু তা পেরিয়ে যাঁরা আবার আলোয় ফিরতে পারেন, ইতিহাস তাঁদেরকেই মনে রেখে দেয়। সিনে দুনিয়ায় অরবিন্দ স্বামী তেমনই একটা নাম।
০৪২১
১৯৭০ সালের ১৮ জুন চেন্নাইয়ের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম অরবিন্দের। তাঁর বাবা শহরের স্বনামধন্য শিল্পপতি। মা ছিলেন নৃত্যশিল্পী। কিন্তু অরবিন্দের পরিবারের সঙ্গে অভিনয় জগতের কোনও যোগ ছিল না কোনও কালেই।
০৫২১
কলেজে পড়াকালীন বাড়তি হাতখরচের জন্য টুকটাক মডেলিং করতেন অরবিন্দ। থিয়েটারের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েছিলেন। তবে সুঅভিনেতা হিসাবে তাঁর খ্যাতি ছিল না। বরং অরবিন্দ অভিনয় জানেন না বলেই একটি ধারণা প্রচলিত ছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে। একাধিক বার বাদও পড়েছেন থিয়েটার থেকে।
০৬২১
শোনা যায়, একটি বিজ্ঞাপনে অরবিন্দকে দেখে চোখ আটকে গিয়েছিল দক্ষিণের বিখ্যাত পরিচালক মণিরত্নমের। তিনি অরবিন্দকে ডেকে পাঠান। মণিরত্নমের হাত ধরেই বিনোদনের জগতে পা রাখেন অরবিন্দ।
০৭২১
১৯৯১ সালে মণিরত্নমের পরিচালনায় ‘থলপতি’ সিনেমায় স্বয়ং রজনীকান্তের সঙ্গে প্রথম অভিনয় করেন ‘অভিনয়ের অ আ ক খ না জানা’ অরবিন্দ। তার পর নায়ক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন ১৯৯২-এর ‘রোজা’ ছবিতে। ছবিটি বক্স অফিসে সাড়া ফেলে দিয়েছিল।
০৮২১
‘রোজা’র পরে বিদেশে পড়তে চলে যান অরবিন্দ। উত্তর ক্যারোলিনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করে আবার ফিরে আসেন দেশে। আবার অভিনয়ে মনোনিবেশ করেন।
০৯২১
১৯৯৫ সালে মনীষা কৈরালার বিপরীতে ‘বম্বে’ ছবিতেও প্রধান চরিত্রে সুযোগ পান অরবিন্দ। ‘রোজা’ এবং ‘বম্বে’ তাঁর কেরিয়ারের মাইলস্টোন। দু’টি ছবিই রাজ্য এবং জাতীয় স্তরে পুরস্কৃত হয়। অরবিন্দের অভিনয় মুগ্ধ হয়েছিল দর্শক।
১০২১
দক্ষিণের যে অভিনেতারা অল্প সময়ের মধ্যে সর্বভারতীয় অভিনয়ের জগতে নিজেদের স্থান পাকা করে নিতে পেরেছেন, অরবিন্দ তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তামিল, তেলুগু, মালয়ালম, হিন্দি, সব ভাষাতেই তাঁর অবাধ আনাগোনা।
১১২১
অরবিন্দের উল্লেখযোগ্য ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে, ‘ইন্দিরা’, ‘মিনসারা কানাভু’, ‘পুধায়াল’ ‘সাত রং কে স্বপ্নে’ এবং ‘রাজা কো রানি সে পেয়ার হো গ্যায়া’। একের পর এক ছবিতে চমক নিয়ে এসেছিলেন অরবিন্দ।
১২২১
২০০০ সালের পর অভিনয় জগত থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ান অরবিন্দ। ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন। পারিবারিক ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। অনেকে বলেন, অভিনয় করতে কোনও দিনই চাননি অরবিন্দ। তারকাসুলভ খ্যাতি তাঁর ভাল লাগছিল না। সাধারণ জীবন যাপনে স্বচ্ছন্দ ছিলেন।
১৩২১
অরবিন্দ যখন পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরে আবার বিনোদনে ফিরবেন কি না ভাবছেন, সেই সময় ২০০৫ সালে হঠাৎ বড়সড় এক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। তাঁর মেরদণ্ডে চোট লাগে। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে পায়ের একাংশ।
১৪২১
টানা এক বছর শয্যাশায়ী ছিলেন অরবিন্দ। নিজের পায়ে আবার দাঁড়াতে সময় লেগে যায় আরও দুই থেকে তিন বছর। দুর্ঘটনার আঁধার কাটিয়ে আবার যে অরবিন্দ প্রকাশ্যে আসেন, তাঁকে তারকা হিসাবে চেনাই দুষ্কর ছিল। তাঁর ওজন হয়ে পড়েছিল ১১০ কিলোগ্রাম।
১৫২১
ব্যবসা আঁকড়ে নতুন করে জীবনের রাস্তায় চলতে শুরু করছিলেন অরবিন্দ। এই সময় আবার পরিচালক মণিরত্নম তাঁকে ফোন করেন। আসে নতুন ছবিতে নতুন করে অভিনয়ের সুযোগ।
১৬২১
২০১৩ সালে ‘কাডাল’ ছবির হাত ধরে বিনোদন দুনিয়ায় বহু বছর পর প্রত্যাবর্তন করেন অরবিন্দ। তার পর ‘থানি ওরুভাল’ (২০১৫) ছবিতে নেতিবাচক চরিত্রে কাজ করে ফিরে পান হারানো জনপ্রিয়তা।
১৭২১
‘ধ্রুব’, ‘ডিয়ার ড্যাড’, ‘বোগান’, ‘মাম্মুথী’র মতো একাধিক ছবিতে একচেটিয়া অভিনয় করেন অরবিন্দ। তাঁর কেরিয়ারের এই দ্বিতীয় ইনিংস যেন দর্শককে আরও বেশি করে হলমুখী করে তুলেছিল। ২০২১ সালে কঙ্গনা রানাউতের বিপরীতে ‘থালাইভি’ ছবিতেও কাজ করেন অরবিন্দ।
১৮২১
অরবিন্দের জীবনে প্রেম এসেছে বার বার। বিচ্ছেদের কাঁটাও প্রেমের পথে মাথা তুলেছে। ১৯৯৪ সালে গায়ত্রী রামামূর্তীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের দুই সন্তান আধিরা এবং রুদ্র। দীর্ঘ দিন আলাদা থাকার পর ২০১০ সালে গায়ত্রীর সঙ্গে অরবিন্দের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
১৯২১
বিচ্ছেদের পর সন্তানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অরবিন্দকেই। ২০১২ সালে তিনি আবার বিয়ে করেন। ছোটবেলার বন্ধু অপর্ণা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন দক্ষিণী তারকা। জীবনের নানা উত্থান পতনে অপর্ণাকে পাশে পেয়েছেন অরবিন্দ।
২০২১
২০২৩ সালে আরও একগুচ্ছ তামিল ছবিতে কাজ করছেন অরবিন্দ। তাঁর অভিনীত ‘নরগসূরন’, ‘কাল্লাপার্ট’, ‘সতুরঙ্গ ভেট্টাই’ এবং ‘ভানঙ্গমুড়ি’ মুক্তির অপেক্ষায়।
২১২১
একসময় অভিনয়ের অ আ ক খ না জানা অরবিন্দ অভিনয়েই মাতিয়েছেন দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রি। দক্ষিণের গণ্ডি পেরিয়ে তাঁকে কুর্নিশ করেছে বলিউডও। তাঁর জীবন অন্য অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা স্বরূপ।