Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
Jadavpur University Student Death

যাদবপুরের মেন হস্টেলে আনন্দবাজার অনলাইন, সেই ‘অভিশপ্ত’ বারান্দা ছাড়াও আর কী কী দেখা গেল

সোমবার দুপুরে হস্টেলে গিয়ে পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল ছাত্রমৃত্যুর রাতের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে। সঙ্গে ছিল একটি পুতুল। পুলিশ চলে গেলে হস্টেলের তিন তলায় পৌঁছে গিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৩ ১৭:৪৬
Share: Save:
০১ ১৭
Jadavpur University main hostel.

প্রশস্ত বারান্দা। তার এক পাশে সারে সারে ঘর। ২, ৩, ৪... ২৭, ২৮, ২৯— প্রতি ঘরের দরজার উপরে স্পষ্ট হরফে লেখা ঘরের নম্বর। মাঝে সিঁড়ি দিয়ে এক তলা, দোতলা পেরিয়ে সোজা উঠে যাওয়া যায় তিন তলায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের যে ঘরে নদিয়া থেকে আসা বাংলা বিভাগের ছাত্রটি ঠাঁই পেয়েছিল, তিন তলাতেই রয়েছে সেই ঘর। নম্বর ৬৮।

—নিজস্ব চিত্র।

০২ ১৭
Jadavpur University main hostel.

সোমবার দুপুরে হস্টেলে গিয়ে পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল ছাত্রমৃত্যুর রাতের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে। তারা ওই ছাত্রের আকার এবং ওজনের একটি পুতুল সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল। পুতুলটিকে তিন তলা থেকে নীচে ফেলে ঘটনার পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করা হয়। পুলিশ চলে গেলে হস্টেলের তিন তলায় পৌঁছে গিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন।

—নিজস্ব চিত্র।

০৩ ১৭
Jadavpur University main hostel.

তিন তলায় ওঠার মুখেই সিঁড়ির পাশের দেওয়ালে চোখে পড়ল বড় আকারের একটি মৌমাছির গ্রাফিতি। কালো রঙে দেওয়াল জুড়ে কেউ শিল্পীসত্তা ফুটিয়ে তুলেছেন। নীচে ইংরাজিতে লিখেছেন, ‘হ্যাপি’ (খুশি)। এই ছবির অর্থ, ‘‘বি (মৌমাছি) হ্যাপি’’ অর্থাৎ, ‘‘খুশি থাকো।’’ কিন্তু হস্টেলে কাটানো তিনটি রাত কি খুশিতে থাকতে দিয়েছিল নদিয়ার ছাত্রকে?

—নিজস্ব চিত্র।

০৪ ১৭
Jadavpur University main hostel.

তিন তলার বারান্দা ধরে ৫৯ থেকে ৮৭ নম্বর পর্যন্ত পর পর ঘর রয়েছে। বারান্দার মাঝে এবং একদম শেষে আছে দু’টি সিঁড়ি। এই তলায় ৬৬ নম্বর ঘরের পাশে রয়েছে হস্টেলের শৌচাগার। নিজের ঘরের চেয়ে মাত্র দু’টি ঘর দূরে এই শৌচাগারেই সে দিন রাতে বার বার যাচ্ছিল ছাত্রটি। তেমনটাই জানিয়েছেন আবাসিকেরা।

—নিজস্ব চিত্র।

০৫ ১৭
Jadavpur University main hostel.

তিন তলার বারান্দার রেলিং বেশ সরু। উপরের তলার চেয়ে অপেক্ষাকৃত নিচুও বটে। বারান্দার শেষ প্রান্তে রয়েছে ৫৯ নম্বর ঘর। তার ঠিক পাশের রেলিং টপকেই নীচে পড়ে যায় ওই ছাত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

০৬ ১৭
Jadavpur University main hostel.

৬৮ নম্বর ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। তবে দরজায় তালা দেওয়া ছিল না। ওই ঘরের সামনে হস্টেলের বেশ কয়েক জন ছাত্রকে জটলা করতে দেখা গেল। এই সব ঘরের দেওয়াল এবং দরজায় নানা রকম আঁকিবুঁকি কাটা। অনেক কিছু লেখাও চোখে পড়ল।

—নিজস্ব চিত্র।

০৭ ১৭
Jadavpur University main hostel.

একটি তালাবন্ধ ঘরের দরজায় ইংরাজিতে লেখা, ‘‘এখানে রাত ১২টার পরেই ঢোকা যায়।’’ ৬৫ নম্বর ঘরের দেওয়ালের উপরের লেখাটিও তাৎপর্যপূর্ণ। বড় হরফে কালো রঙে সেখানে কেউ লিখেছেন, ‘‘দাদা আসবো’’। ওই ঘরে প্রবেশের জন্য কি এ ভাবেই ‘দাদা’দের অনুমতি নিতে হয়? প্রশ্ন উঠছে।

—নিজস্ব চিত্র।

০৮ ১৭
Jadavpur University main hostel.

তিন তলা থেকে চার তলায় ওঠার সিঁড়ির দেওয়ালে লাল হরফে লেখা ‘হস্টেল’। তার এক পাশে কেউ একটি ভয়ার্ত বিড়ালের ছবি এঁকেছেন। অন্য পাশে রয়েছে দাপুটে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। ঘটনার রাতে এই সিঁড়ি দিয়ে চার তলার ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ছাত্রকে।

—নিজস্ব চিত্র।

০৯ ১৭
Jadavpur University main hostel.

চার তলায় ৮৮ নম্বর থেকে ঘর শুরু। দাবি, ১০৪ নম্বর ঘরে লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। এই ঘরটিতেই সে রাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নদিয়ার ছাত্রকে। সেখানেই লেখানো হয়েছিল চিঠি। ১০৪ নম্বর ঘরে গিয়ে তদন্তকারীরা তল্লাশি চালিয়েছেন।

—নিজস্ব চিত্র।

১০ ১৭
Jadavpur University main hostel.

১০৪ নম্বর ঘরের সামনে পৌঁছনোর সময় দেওয়ালে চোখ আটকে যেতে বাধ্য। কালো আর লাল রঙে দেওয়ালে বড় হরফে লেখা, ‘‘বন্ধু তোমার লাল টুকটুকে স্বপ্ন বেচো না।’’ হস্টেলের থমথমে পরিস্থিতিতে কতই না বার্তা বইছে এই লাইন। এই হস্টেলের গায়েই গত ৯ অগস্ট রাতে স্বপ্নের ‘অপমৃত্যু’ হয়ে গিয়েছে।

—নিজস্ব চিত্র।

১১ ১৭
Jadavpur University main hostel.

এই ঘরে মোট চারটি খাট রয়েছে। এক দিকে পর পর তিনটি এবং অন্য দিকে আলাদা করে একটি খাট রয়েছে। পাশে একটি টেবিল এবং চেয়ারও সাজানো আছে। ঘরে টাঙানো তারগুলির উপর এলোমেলো ভাবে অনেক জামাকাপড় মেলা। কোথাও ছেঁড়া চপ্পল, কোথাও খালি জলের বোতল— ঘরের চারদিকে অগোছালো ভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অনেক কিছু। এই ঘরে সাংবাদিকেরা প্রবেশ করলে হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীরাও সামনে এসে দাঁড়ান।

—নিজস্ব চিত্র।

১২ ১৭
Jadavpur University main hostel.

১০৪ নম্বর ঘরের কিছুটা দূরেই রয়েছে ১০৮ নম্বর ঘর। যে ঘরে থাকতেন মনোতোষ ঘোষ। তিনি ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাগিংয়ের অন্যতম অভিযুক্ত। ঘটনার পর পরই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ওই ঘরের দেওয়ালে বড় বড় করে লেখা, ‘‘ফাটিয়ে পড়তে হবে...।’’

—নিজস্ব চিত্র।

১৩ ১৭
Jadavpur University main hostel.

হস্টেলের এই চার তলার বারান্দার রেলিং অপেক্ষাকৃত চওড়া। উচ্চতাও তুলনামূলক বেশি। বারান্দার দড়িতে অনেকে জামাকাপড় মেলে রেখেছেন। জীবন চলছে চেনা ছন্দেই। তবু কোথাও যেন লুকিয়ে আছে রহস্যের চাপা উত্তেজনা।

—নিজস্ব চিত্র।

১৪ ১৭
Jadavpur University main hostel.

ছাত্রেরা জটলা করে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন বটে, তবে সাংবাদিকদের দেখলেই সকলের মুখে কুলুপ। কেউ কিছুই দেখেননি। যাঁকেই সে রাতের কথা জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, তিনিই জানাচ্ছেন, ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেন না। হয় ঘরে পড়াশোনা করছিলেন, নয়তো হস্টেলের জেনারেল বডির বৈঠকে গিয়েছিলেন। ছাত্র পড়ে যাওয়ার কথা শুনে বাইরে বেরিয়ে আসেন।

—নিজস্ব চিত্র।

১৫ ১৭
Jadavpur University main hostel.

হস্টেলের নীচে যেখানে নদিয়ার ছাত্র পড়েছিলেন, সেই জায়গাটা আপাতত ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ছাত্রের দেহের আকৃতি অনুযায়ী সাদা চক দিয়ে চিহ্নিত করা আছে জায়গাটি। তার কাছে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

—নিজস্ব চিত্র।

১৬ ১৭
Jadavpur University main hostel.

সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে চোখে পড়ল দোতলা থেকে নীচে নামার সিঁড়ির দেওয়ালে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আনাচেকানাচে কান পাতলে মাঝেমাঝেই গিটারের তারে যে গানের সুর ভেসে আসে, সেই পরিচিত গানের লাইন লাল হরফে বড় বড় করে কেউ লিখে রেখেছেন, ‘‘এই যাদবপুরের গায়ে, কত বয়স মিশে যায়।’’

—নিজস্ব চিত্র।

১৭ ১৭
Jadavpur University main hostel.

ছাত্রমৃত্যুর রহস্যের কিনারা কবে হবে, জানা নেই। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হস্টেলের ছাত্রদের মধ্যেও হয়তো সেই আতঙ্ক কাজ করছে। সেই কারণেই তাঁরা মুখ খুলতে চাইছেন না। ছাত্রেরা এখন বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে দিন কাটাচ্ছেন। আর যাদবপুরের হস্টেল রয়েছে ছন্দে ফেরার অপেক্ষায়।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy