An earthquake hits in Turkey, several dead, injured many dgtl
Earthquake in Turkey and Syria
লাশের পর লাশ, কাঁদারও লোক নেই কোনও কোনও পরিবারে! ভূমিকম্পে ধ্বস্ত তুরস্ক, সিরিয়ার ছবি
সোমবার ভোর। ঘড়ির কাঁটা স্থানীয় সময় অনুসারে যখন ৪টের ঘরে পৌঁছেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়ার অধিকাংশ এলাকা। ১৯৩৯ সালের পর তুরস্ক এমন ভয়াবহ ভূকম্প দেখেনি।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৪৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
সোমবার ভোর। ঘড়ির কাঁটা স্থানীয় সময় অনুসারে যখন ৪টের ঘরে পৌঁছেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়ার অধিকাংশ এলাকা। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ৭.৮।
০২২২
কম্পনের উৎসস্থল দক্ষিণ তুরস্কে। গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ১৮ কিলোমিটার গভীরে।
০৩২২
প্রথম কম্পনের ১১ থেকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয় বার কেঁপে ওঠে লেবানন, সিরিয়া এবং সাইপ্রাসের বিভিন্ন অংশ। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস)-র মতে, এই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৭।
০৪২২
১৯৩৯ সালের পর তুরস্ক এমন ভয়াবহ ভূকম্প দেখেনি। ভূমিকম্পের ফলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তুরস্ক এবং সিরিয়া। উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক মৃতদেহ। কোনও কোনও পরিবারে সকল সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। শোকপালন করবেন বলেও আত্মীয়-পরিজন নেই অনেকের।
০৫২২
ভেঙে পড়েছে বহু বাড়িঘর। ভারতীয় সময় রাত ৯টে পর্যন্ত জানা গিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের তলায় এখনও বহু মানুষ আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা।
০৬২২
ভূকম্পের পরে বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার কর্মী এবং দমকল কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছন। স্থানীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা সূত্রে খবর, ভূমিকম্পের ফলে তুরস্কে অন্তত ২, ৩৭৯ জন মারা গিয়েছেন। গুরুতর আহত বহু মানুষ।
০৭২২
সিরিয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও উল্লেখযোগ্য। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ১,১৩৬ জন।
০৮২২
আলেপ্পো, লাটাকিয়া, হামা এবং টার্টাসের বিভিন্ন জায়গায় মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মৃতের সঠিক পরিসংখ্যান জানা যায়নি।
০৯২২
এই ঘটনা তুরস্কবাসীদের ১৯৩৯ সালের ভূমিকম্পের স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে। সেই ভূকম্পের ফলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন।
১০২২
গত ২৫ বছরে তুরস্কে মোট সাত বার ভূমিকম্প হয়েছে, রিখটার স্কেলে যার কম্পনের মাত্রা ৭ বা তার বেশি ছিল। কিন্তু সোমবার মাঝরাতের এই কম্পন স্থানীয়দের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে।
১১২২
বিপর্যয়ের মুহূর্তের বেশ কিছু ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক এবং টুইটারে। এই ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, তীব্র কম্পনের ফলে বাড়িঘর ভেঙে পড়ছে। প্রাণ বাঁচানোর আশায় স্থানীয়দের ছোটাছুটি করতেও দেখা যাচ্ছে। দমকলকর্মীরা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন।
১২২২
গাজিয়ানতেপ প্রদেশের গভর্নর দাভুট গুল টুইটারে শোকপ্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘আমাদের শহরে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আপনারা শান্ত থাকুন। বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করুন। এই পরিস্থিতিতে গাড়ি চালাবেন না। দয়া করে রাস্তায় ভিড় করবেন না।’’
১৩২২
ইস্তানবুলের গভর্নর আলি ইয়েরলিকায়া জানিয়েছেন, উদ্ধারকার্যের জন্য এখনও পর্যন্ত এক হাজার কর্মীকে কাজে লাগানো হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁদের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
১৪২২
আপৎকালীন বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার তরফে ৮০ জন আধিকারিক, ৪টি কে ৯ প্রজাতির কুকুর এবং দু’টি ট্রাকের আয়োজন করা হয়েছে বলে টুইট করে জানিয়েছেন আলি।
১৫২২
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়িপ এর্ডোগান এই ঘটনায় টুইটারে শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘ভূমিকম্পের ফলে আমাদের দেশের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমি আমার দেশবাসীদের প্রতি সহানুভূতি জানাই। বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার কর্মীরা সকলে সতর্ক রয়েছেন। উদ্ধারকাজে কোনও ত্রুটি নেই।’’
১৬২২
তুরস্কের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সুলেমান সয়োলু জানিয়েছেন যে, বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালাচ্ছে। তবুও আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এগিয়ে আসবে বলে অনুমান করা যায়। তাদের এমার্জেন্সি রেসপন্স কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (ইআরসিসি)-এর কাছে সাহায্য চেয়েছেন সুলেমান।
১৭২২
কারেন ম্যাগিনিস নামের এক আবহবিদ ভূমিকম্পের এই ঘটনা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘যে এলাকায় ভূমিকম্প হয়েছে, সেখানে ধনী লোকজন বাস করলেও তার সংখ্যা সামান্য। বেশির ভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে রয়েছেন। এই বিপর্যয়ের দিনে তাঁদের অবস্থা আরও সঙ্কটজনক।’’
১৮২২
তুরস্কের আবহাওয়া নিয়েও সরব হয়েছেন কারেন। তিনি বলেন, ‘‘একেই ঠান্ডা আবহাওয়া। তার উপর মাঝেমধ্যে বৃষ্টি পড়ছে। চাষবাসের ক্ষয়ক্ষতি তো হচ্ছেই। এই পরিস্থিতিতে শহরের লোকেরা কী ভাবে দিনযাপন করবেন, তা ভাবলেই চিন্তা হচ্ছে।’’
১৯২২
গ্রিসের মতো তুরস্কের অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকেও দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক এবং সিরিয়ার উত্তরাংশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
২০২২
তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ভূমিকম্পের এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তুরস্ক এবং সিরিয়ার দেশবাসীদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন তিনি।
২১২২
নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শোকপ্রকাশ করে মোদী লিখেছেন, ‘‘তুরস্কে ভূমিকম্পের ফলে বহু মানুষ তাঁদের প্রাণ হারিয়েছেন। শোকপ্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সহানুভূতি রইল। আশা রাখি, আহতরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।’’
২২২২
ভারত যে তুরস্কের পাশে রয়েছেন, তার-ও আশ্বাস দিয়েছেন মোদী। টুইট করে তিনি জানিয়েছেন যে, এই কঠিন পরিস্থিতিতে তুরস্কের কোনও রকম সহায়তার প্রয়োজন হলে ভারত তাদের সাহায্য করবে।