মাত্র ৩৬ বছর বয়সে চাঁদে পা রেখেছিলেন চার্লস। তিনিই ছিলেন চাঁদে পা দেওয়া কনিষ্ঠতম মহাকাশচারী। স্ত্রী ডরোথি মেড ক্লাইবোর্ন এবং দুই পুত্রকে পৃথিবীতে রেখে মহাকাশযাত্রা করেছিলেন চার্লস।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৩ ১৬:১৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
১৯৬৯ সালের ১৬ জুলাই। ঈগল ল্যান্ডার থেকে বিস্মিত চোখে নেমে আসার পর চাঁদে পা দেন নীল আর্মস্ট্রং। চাঁদের মাটিতে পা দেওয়া প্রথম মহাকাশচারী হিসাবে ইতিহাস তৈরি করেন। তাঁকে অনুসরণ করে চাঁদে নেমেছিলেন সহযাত্রী এডউইন অলড্রিনও। চন্দ্রপৃষ্ঠের একাধিক ছবি তোলেন আর্মস্ট্রং এবং অলড্রিন।
০২১৯
এর পর আমেরিকা আরও পাঁচ বার চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছে। চাঁদের বুকে পা পড়েছে মোট ১২ জন মহাকাশচারীর। তার মধ্যে অন্যতম অ্যাপোলো-১৬ অভিযানের মহাকাশচারী চার্লস ডিউক।
০৩১৯
চার্লস ১৯৭২ সালে চাঁদে গিয়েছিলেন তিনি। কাটিয়েছিলেন প্রায় ৭১ ঘণ্টা।
০৪১৯
১৯৬৬ সালের এপ্রিলে নাসার পঞ্চম চন্দ্র অভিযানের জন্য ১৯ জন পুরুষকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন চার্লস।
০৫১৯
১৯৬৯ সালেও অ্যাপোলো-১০ অভিযানে যাওয়া মহাকাশচারীদের সহায়তাকারী সদস্যদের দলে ছিলেন তিনি। অ্যাপোলো-১১ এর অভিযানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
০৬১৯
চন্দ্রপৃষ্ঠে পৌঁছনোর পর অ্যাপোলো-১১ অভিযানের তিন সদস্যকে বার্তা দিয়েছিলেন চার্লস। চার্লসের কথায় মুগ্ধ আর্মস্ট্রং পৃথিবীতে ফেরার পর চার্লসকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘তোমরা চাঁদে পৌঁছৈ গিয়েছ। শীঘ্রই যুদ্ধে জিতে ফিরে এসো। তোমাদের সঙ্গে কথা বলে স্বস্তি ফিরল। তোমাদের অনেক ধন্যবাদ।’’
০৭১৯
অ্যাপোলো-১৩ অভিযানের সঙ্গেও যুক্ত থাকার কথা ছিল চার্লসেরও। কিন্তু অভিযানের আগে তিনি ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
০৮১৯
তবে অ্যাপোলো-১৬ অভিযানের সময় নিজে চাঁদে পা দিয়েছিলেন চার্লস। সেই অভিযানে নাসার তরফে চাঁদে পাঠানো তিন মহাকাশচারীর মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি।
০৯১৯
মাত্র ৩৬ বছর বয়সে চাঁদে পা রেখেছিলেন তিনি। চার্লসই ছিলেন চাঁদে পা দেওয়া কনিষ্ঠতম মহাকাশচারী। স্ত্রী ডরোথি মেড ক্লাইবোর্ন এবং দুই পুত্রকে পৃথিবীতে রেখে মহাকাশযাত্রা করেছিলেন চার্লস।
১০১৯
চাঁদে যাওয়ার সময় নিজের পরিবারের একটি ছবি সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন চার্লস। স্ত্রী এবং দুই পুত্রকে নিয়ে সেই ছবি পৃথিবীতেই তুলেছিলেন চার্লস। এই ছবিটি তাঁর কাছে অমূল্য ছিল বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।
১১১৯
চাঁদ থেকে ফেরার সময় সেই ছবিটি তিনি আর নিয়ে ফেরেননি। স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে রেখে এসেছিলেন চাঁদের বুকেই। ছবিটি রেখে এসে সেই ছবিরও ছবি তুলেছিলেন চার্লস।
১২১৯
তবে চাঁদ থেকে ফেরার সময় শুধু ছবি নয়, ‘স্মৃতিচিহ্ন’ হিসাবে আরও অনেক কিছু ফেলে এসেছিলেন তিনি। সে কথা তিনি স্বীকারও করেছিলেন।
১৩১৯
চাঁদ থেকে ফেরার বহু বছর পর চার্লস নিশ্চিত করেন, তিনি এবং তাঁর সহযাত্রীরা চাঁদের মাটিতে বর্জ্য পদার্থ ফেলে এসেছিলেন।
১৪১৯
চার্লস বলেন, ‘‘আমরা একটি ট্যাঙ্কে প্রস্রাব সংগ্রহ করেছিলাম। বেশ কয়েকটি ব্যাগে মলত্যাগও করেছিলাম। আমাদের কাছে কয়েক ব্যাগ আবর্জনা ছিল। এগুলি আমরা চন্দ্রপৃষ্ঠে রেখে এসেছিলাম।’’
১৫১৯
সেই মলভর্তি ব্যাগ ফেলে আসার অনেক কারণও ছিল। অন্যতম প্রধান কারণ ছিল, পৃথিবীতে ফেরার সময় অপ্রয়োজনীয় এবং অতিরিক্ত জিনিসপত্র চাঁদে ফেলে আসা। নাসা হিস্ট্রি অফিসের মতে, চাঁদে মানব বর্জ্য ভর্তি ব্যাগ এখনও রয়েছে। মনে করা হয়, মহাকাশচারীদের মলভর্তি প্রায় ৯৬টি ব্যাগ চাঁদের মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।
১৬১৯
মোট ছ’বার চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছে আমেরিকা। চাঁদের মাটিতে পা পড়েছে একাধিক মহাকাশচারীর। চাঁদে যাওয়ার সময় অনেক দিন মহাশূন্যে কাটাতে হয় মহাকাশচারীদের। সেই সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়াও দিতে হয় তাঁদের।
১৭১৯
চাঁদে যাওয়ার সময়, মহাকাশচারীদের মলত্যাগের জন্য বিশেষ প্লাস্টিকের থলির উপর নির্ভর করতে হয়। মহাকাশচারীদের পোশাকে নিতম্বের ঠিক কাছে ওই প্লাস্টিকের ব্যাগ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। মলত্যাগের এই প্রক্রিয়া ‘অত্যন্ত জঘন্য’ বলে জানিয়েছিলেন চার্লস।
১৮১৯
মহাকাশযানে এমন ব্যবস্থা করা ছিল যাতে মহাকাশচারীরা মলমূত্র ত্যাগ করলে তা বিশেষ ব্যাগে জমা পড়ে। চাঁদ থেকে পৃথিবীতে ফেরার সময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই সব বর্জ্য পদার্থে ভরা ব্যাগ চাঁদেই ফেলে এসেছেন মহাকাশচারীরা। আর এ ভাবেই সেখানে জমা হয়েছে ৯৬টি ব্যাগ।
১৯১৯
বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরের পর বছর ধরে চাঁদে থাকার পর সেই মলে কী ধরনের রাসায়নিক পরিবর্তন হয়েছে, তা পরীক্ষা করার জন্যই নাকি সেই ব্যাগগুলি আবার ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা চলছে। পাশাপাশি, চাঁদে প্রাণের বীজ বপণ করা যেতে পারে কি না, তা-ও বর্জ্য বিশ্লেষণ করে খুঁজে বার করার চেষ্টা করবেন বিজ্ঞানীরা।