All you need to know about Wachtell, Adani’s new legal firm against Hindenburg dgtl
Wachtell
টুইটার, টেসলার হয়ে লড়েছে! হিন্ডেনবার্গের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেই ওয়াচটেলের ভরসায় আদানিরা
ওয়াচেল সংস্থার আদানিদের হয়ে আইনি লড়াই করার খবর প্রকাশ্যে আসতেই সেই সংস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহল বেড়েছে। কেনই বা এই সংস্থাকেই বেছে নিল আদানি গোষ্ঠী, সেই প্রশ্নও উঠে এসেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৫৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
ওয়াচটেল, লিপটন, রোজ়েন অ্যান্ড কাটজ়। হিন্ডেনবার্গের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে আমেরিকার অন্যতম ব্যয়বহুল এই আইনি সংস্থাকে নিয়োগ করেছেন আদানি গোষ্ঠীর কর্ণাধার গৌতম আদানি।
০২২১
সংবাদমাধ্যম ‘ফিনান্সিয়াল টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদানি গোষ্ঠীর আইনি সংস্থা ‘সিরিল অমরচাঁদ মঙ্গলদাস’-এর আইনজীবীদের তরফে ওয়াচটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। ‘সিরিল অমরচাঁদ মঙ্গলদাস’ আইনি সংস্থার প্রধান সিরিল শ্রফের মেয়ে গৌতম আদানির পূত্রবধূ।
০৩২১
ওয়াচেল সংস্থার আদানিদের হয়ে আইনি লড়াই করার খবর প্রকাশ্যে আসতেই সেই সংস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহল বেড়েছে। কেনই বা এই সংস্থাকে বেছে নিল আদানি গোষ্ঠী, সেই প্রশ্নও উঠে এসেছে।
০৪২১
১৯৬৫ সালে নিউইয়র্কের কয়েক জন আইনজীবী মিলে একটি আইনি সংস্থা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। নাম দেন ওয়াচটেল লিপটন।
০৫২১
এই আইনজীবীরা হলেন, হার্ব ওয়াচটেল, মার্টিন লিপটন, লিওনার্ড রোজ়েন এবং জর্জ কাটজ়। তাঁরা চার জনেই নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন। তাঁদের পদবি অনুযায়ীই এই সংস্থার নাম দেওয়া হয় ‘ওয়াচটেল, লিপটন, রোজ়েন অ্যান্ড কাটজ়’।
০৬২১
একাধিক কর্পোরেট সংস্থার জটিল আইনি সমস্যা মেটানোর জন্য ওয়াচটেল খুব কম সময়েই আমেরিকার বাজারে নাম করে নেয়। এর পর আমেরিকার বাইরেরও নামীদামি বহু কর্পোরেট সংস্থা আইনি সমস্যা নিয়ে দ্বারস্থ হতে শুরু করে ওয়াচটেলের। হয়ে ওঠে আমেরিকার অন্যতম ব্যয়বহুল আইনি সংস্থা।
০৭২১
ওয়াচটেলের দাবি, একত্রীকরণ এবং অধিগ্রহণ (মার্জারস এবং অ্যাকিউজ়িশন), কৌশলগত বিনিয়োগ (স্ট্র্যাটেজ়িক ইনভেস্টমেন্ট), দখল এবং দখল থেকে প্রতিরক্ষা (টেকওভার এবং টেকওভার ডিফেন্স), ভাগীদারী সংক্রান্ত সমস্যা, কর্পোরেট আইন এবং কর্পোরেট পরিচালনা সংক্রান্ত সমস্যার আইনি লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের৷
০৮২১
বেশ কয়েকটি ‘যুগান্তকারী’ আইনি সমস্যা সমাধান করেছে বলেও দাবি করে ওয়াচটেল।
০৯২১
পেশাদারদের সমাজমাধ্যম ‘লিঙ্কডইন’-এ থাকা তথ্য অনুযায়ী, ওয়াচটেলে ৫০০ থেকে ১০০০ জন কর্মী কাজ করেন।
১০২১
আদানিদের আগে টুইটারের হয়েও মামলা লড়েছিল ওয়াচটেল। তখনও ইলন মাস্কের মালিকানায় যায়নি টুইটার। ইলন তখন টুইটার কিনবেন কিনবেন করছিলেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিয়েও বিভিন্ন অছিলায় চুক্তি সই পিছিয়ে দিচ্ছিলেন বার বার। মাস্ককে আইনের প্যাঁচ শেখাতে সেই সময় টুইটার নিয়োগ করেছিল ওয়াচটেলকে।
১১২১
আবার শেয়ার হোল্ডারদের সঙ্গে বিবাদ চলাকালীন টেসলা এবং মাস্ককে আইনি জটিলতা থেকে বাঁচিয়েছিল এই ‘ওয়াচটেল’ই। সব ঠিক থাকলে খুব শীঘ্রই আদানি গোষ্ঠীর হয়ে আমেরিকার আদালতে হিন্ডেনবার্গের উদ্দেশ্য নিয়ে সওয়াল করতে দেখা যাবে এই সংস্থাকে।
১২২১
ওয়াচটেলের ওয়েবসাইট বলেছে ৯/১১-এর মর্মান্তিক ঘটনা এবং সেই সঙ্গে আমেরিকার আর্থিক সঙ্কট সংক্রান্ত বহু মামলায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে তারা।
১৩২১
১৯৮০-এর দশকে ‘রেভলন’ এবং ‘হাউসহোল্ড’-এর মতো সংস্থার জন্য দখলদারী এবং সংস্থার একত্রীকরণ নিয়ে মামলা লড়েছিলেন।
১৪২১
সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা লিপটন ‘বিষের বড়ি (পয়সন পিল)’ তত্ত্বের স্রষ্টা। যেটি একটি একটি সংস্থাকে সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে তার পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মাধ্যমে দখলদারীর হাত থেকে বাঁচানোর এক ধরনের আইনি প্রতিরক্ষামূলক কৌশল।
১৫২১
সংস্থাটি বিখ্যাত মরিসন মামলায় ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। লেম্যান ব্রাদার্সের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার মামলায় জেপি মরগ্যান চেজ়ের হয়ে মামলা লড়েছিল ওয়াচটেল।
১৬২১
ওয়াচটেল আইনি পরামর্শদাতা সংস্থা হিসাবে যেমন খ্যাতনামী, পরিষেবা দিতে তারা তেমনই দাম ধার্য করে। তাদের নিয়োগ করতে খরচ করতে হয় কোটি কোটি টাকা। আমেরিকায় ওয়াচটেলের আইনি পরামর্শের ‘দাম’ই সবচেয়ে বেশি।
১৭২১
বহু ক্ষেত্রে অবদান এবং বহু জটিল কেসের নিষ্পত্তি করার জন্য বহু পুরষ্কারও পেয়েছে ওয়াচটেল।
১৮২১
আমেরিকার শেয়ার সংক্রান্ত সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই নড়ে গিয়েছে আদানি গোষ্ঠীর ভিত। সেই রিপোর্টে আদানিদের বিরুদ্ধে শেয়ারের দরে কারচুপির অভিযোগ আনা হয়েছে।
১৯২১
আদানিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে আর্থিক জালিয়াতিরও। এর পর থেকেই পড়তে শুরু করে আদানিদের শেয়ারদর। শুরু হয় আদানিদের নাম নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া। এই নিয়ে সংসদের দুই কক্ষকেও উত্তাল হতে দেখা গিয়েছে।
২০২১
তবে আদানিদের তরফে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে করা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর দাবি, এই রিপোর্টের মাধ্যমে ভারতের উপর ‘পরিকল্পিত হামলা’ করা হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে ভারতীয় সংস্থার বদনাম করাই হিন্ডেনবার্গের মূল উদ্দেশ্য। হিন্ডেনবার্গের ৩২ হাজার শব্দের রিপোর্টের পাল্টা ৪১৩ পাতার জবাবও দেন আদানিরা।
২১২১
আদানি গোষ্ঠীর তরফে জানানো হয়, আমেরিকার সংস্থার অভিযোগ মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন। হিন্ডেনবার্গ যে ৮৮টি প্রশ্ন করেছিল, তার মধ্যে ৬৮টি প্রশ্নের উত্তর বিভিন্ন সংস্থার বার্ষিক রিপোর্টে আগেই প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে এই প্রশ্নগুলি জনগণের নজর অন্য দিকে ঘোরানোর জন্য করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছে আদানি গোষ্ঠী। তার পরই আমেরিকার ওই শেয়ার সংস্থার বিরুদ্ধে আটঘাট বেধে এবং ওয়াচটেলের কাঁধে ভর দিয়ে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন আদানিরা।