All you need to know about Political strategist Sunil Kanugolu who helped Congress to win Karnataka assembly election 2023 dgtl
Sunil Kanugolu
কর্নাটকে কংগ্রেসের চাণক্য কি তিনিই? পিকের একদা ছায়াসঙ্গী সুনীল এখন নিজেই ‘বস্’
কংগ্রেস সূত্রে খবর, কর্নাটকে জয়ের নেপথ্যে আরও এক জনকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন কংগ্রেসের উপর মহলের নেতারা। তিনি ভোটকুশলী সুনীল কানুগোলু। যদিও রাজনৈতিক মহলে তিনি বেশি পরিচিত এসকে নামেই।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৩ ১৮:৩৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
কর্নাটকে জয় সুনিশ্চিত করল কংগ্রেস। বিজেপির হাত থেকে এক প্রকার ছোঁ মেরে কেড়ে নিল সে রাজ্যের ক্ষমতা। ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে কর্নাটক জয় উদ্যাপন করতে শুরু করেছেন কংগ্রেস কর্মীরা। দলীয় পতাকা কাঁধে ঢোল-তাসা-আবির নিয়ে উল্লাস করতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের।
০২২২
কংগ্রেসের কর্নাটক জয়ের নেপথ্যে মূলত যে তিন কারণকে বড় করে দেখা হচ্ছে সেগুলি হল— বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতিকে প্রত্যাখান করা, কর্নাটকের দুই শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতা সিদ্ধারামাইয়া এবং ডিকে শিবকুমারের মধ্যে সম্পর্কের বুনোট শক্ত হওয়া (অতীতে তাঁদের ‘সুসম্পর্কের’ জেরে কর্নাটক কংগ্রেসে অনেক মতবিরোধ দেখা গিয়েছিল) এবং সর্বোপরি কর্নাটকে ১০ দিন ব্যাপী রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’।
০৩২২
তবে দলীয় সূত্রে খবর, কর্নাটকে জয়ের নেপথ্যে আরও এক জনকে কৃতিত্ব দিচ্ছে কংগ্রেসের উপর মহল। তিনি ভোটকুশলী সুনীল কানুগোলু। যদিও রাজনৈতিক মহলে তিনি বেশি পরিচিত এসকে নামেই। কংগ্রেস সূত্রে খবর, কর্নাটক জয়ে কংগ্রেসের ‘তুরুপের তাস’ সুনীলই।
০৪২২
কংগ্রেস সূত্রে খবর, সিদ্ধারামাইয়া এবং শিবকুমারের মধ্যে নৈকট্য তৈরির নেপথ্যে হাত ছিল সুনীলের। বিধানসভা নির্বাচনী কৌশল রচনার পাশাপাশি রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রার পুরো পরিকল্পনাও তাঁর কাঁধেই ছিল।
০৫২২
সুনীল পরিচিত ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের ‘ছাত্র’ হিসাবে। ২০২২ সালে প্রশান্তকে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের জন্য রণকৌশল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি।
০৬২২
তখনই পিকের বদলে তাঁরই পুরনো সতীর্থ এসকে-কে এনে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল তৈরির দায়িত্ব দেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী।
০৭২২
সেই মর্মে কংগ্রেসের ‘টাস্ক ফোর্স-২০২৪’ গঠন করেন সনিয়া। আট জনের এই কমিটিতে পি চিদম্বরম এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার পাশে জায়গা পান সুনীলও।
০৮২২
যদিও তার আগে থেকেই কর্নাটক এবং তেলঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনে জেতা নিশ্চিত করতে সুনীলকে প্রচার সামলানোর দায়িত্ব দিয়েছিল কংগ্রেস।
০৯২২
আমজনতার কাছে নতুন মুখ হলেও রাজনীতির ময়দানে ভোটকুশলী হিসাবে সুনীল পুরনো চাল। ২০১৪ সালে পিকের পাশাপাশি সুনীলও নরেন্দ্র মোদীর হয়ে রণকৌশল তৈরির কাজ করেছিলেন।
১০২২
প্রায় এক দশক ধরে ভোটকুশলী হিসাবে কাজ করছেন সুনীল। কাজ করেছেন তামিলনাড়ুতে ডিএমকে এবং এআইএডিএমকের হয়েও।
১১২২
২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপির হয়ে কাজ করেন তিনি। এক সময় বিজেপির ভোটকুশলী সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্রিলিয়ান্ট মাইন্ডস (এবিএম)’-এর প্রধান ছিলেন সুনীল।
১২২২
২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির হয়ে প্রচারের দায়িত্ব সামলাতে আসে পিকের আগের সংস্থা ‘সিটিজেনস ফর অ্যাকাউন্টেবল গভর্ন্যান্স (সিএজি)’। কিন্তু তারও আগে থেকে সুনীল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করছিলেন।
১৩২২
এর পর প্রায় তিন বছর প্রচারের বাইরে ছিলেন সুনীল। আবার ২০১৬ সালে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরে আসেন ডিএমকে প্রধান তথা বর্তমান তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনের দলের দায়িত্ব নিয়ে।
১৪২২
যদিও ২০১৬-এর তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচনে ডিএমকে-কে শাসকদল বানাতে ব্যর্থ হন সুনীল। তবে সেই বছরই অক্টোবরে সুনীলকে নতুন ভোটকুশলী সংস্থা তৈরির দায়িত্ব দেয় বিজেপি। কারণ নতুন সংস্থা আইপ্যাক তৈরি করে তখন বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়েছেন পিকে। তাই পিকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে সুনীলকে দাঁড় করানোই ছিল বিজেপির মূল লক্ষ্য। সেই মতো ‘রামরাজ্যে’ গেরুয়া ঝড় তোলার দায়িত্ব এসে পড়ে সুনীলের কাঁধে।
১৫২২
তবে উত্তরপ্রদেশে সুনীলকে তামিলনাড়ুর মতো ব্যর্থতার মুখ দেখতে হয়নি। ২০১৭-এর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টিকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হন যোগী আদিত্যনাথ। নাম হয় সুনীলের।
১৬২২
অতঃপর ভোটকুশলী সতীর্থ হিমাংশু সিংহ এবং গুজরাতের ব্যবসায়ী দীপক পটেলের সঙ্গে যৌথ ভাবে ভোটকুশলী সংস্থা এবিএম শুরু করেন। ২০১৮ সালে এবিএম থেকে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুনীল।
১৭২২
০১৯ সালে আবার ডিএমকের সঙ্গে হাত মেলান সুনীল। তাঁর রণকৌশলে ৩৯টির মধ্যে ৩৮টি লোকসভা আসন ইউপিএ জোটের দখলে আসে।
১৮২২
২০২১-এর তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে জিততেও পিকের হাত ধরেন ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিন। এর পরই ডিএমকে-মোহ ভেঙে বেরিয়ে আসেন সুনীল।
১৯২২
এখনও পর্যন্ত বিজেপি, কংগ্রেস, ডিএমকে, অকালি দল, এআইএডিএমকের জন্য নির্বাচনী কৌশল তৈরি করেছেন ৪০ বছর বয়সি সুনীল।
২০২২
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের নিরিখেও পিকের থেকে বেশ খানিকটা আলাদা সুনীল। অনেকটাই প্রচারবিমুখ। পিকে নেটমাধ্যমে ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতামত নিয়ে বেশ সোচ্চার। অন্য দিকে সুনীল কোনও নেটমাধ্যমেই নেই।
২১২২
ইন্টারনেট হাতড়ে গুটিকয়েক ছবি ছাড়া বিশেষ কোনও ছবিও চোখে পড়বে না সুনীলের। পিকে বহু বার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেও সুনীল সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে থাকতেই বেশি স্বচ্ছন্দ।
২২২২
কর্নাটক নির্বাচনে জেতার পর থেকেই কংগ্রেসের রণকুশলী হিসাবে সুনীল নিজের দক্ষতা প্রমাণ করলেন। কর্নাটক জয়ের পর ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে খেলা ঘোরাতেও সুনীলেই ভরসা রাখতে শুরু করেছে কংগ্রেস।