All you need to know about late actor of bollywood Faraaz Khan dgtl
Faraaz Khan
সলমনের কেরিয়ার তৈরির নেপথ্যে অন্য খান! অল্প বয়সে মৃত্যু হয় এই অভিনেতার
বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অভিনয়ে নামতে চান ফারাজ় খান। কেরিয়ারের শুরুতে মডেলিংও করেছিলেন তিনি।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৩ ১০:২৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে হিন্দি ফিল্মজগতে পা রেখেছিলেন ফারাজ় খান। কিন্তু নিজের কেরিয়ার তৈরির বদলে সলমন খানের কেরিয়ারে মাইলফলক তৈরি করে ফেলেন তিনি। ন’বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে মাত্র সাতটি ছবিতে অভিনয় করেছেন ফারাজ়। হাজার চেষ্টা করেও বলিপাড়ায় নিজের জায়গা তৈরি করতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫০ বছর বয়সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফারাজ়।
০২২০
১৯৭০ সালের ২৭ মে মুম্বইয়ে জন্ম ফারাজ়ের। তাঁর বাবা ইউসুফ খান মিশরে থাকতেন। কিন্তু অভিনয় শিখবেন বলে সাত সমুদ্র তেরো নদী পার করে মুম্বইয়ে আসেন ইউসুফ। মুম্বইয়েই বেড়ে ওঠা ফারাজ়ের।
০৩২০
ইউসুফের মৃত্যুর পর ফারাজ় তাঁর বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অভিনয়ে নামতে চান। কেরিয়ারের শুরুতে মডেলিংও করেছিলেন তিনি। ফারাজ় বড় পর্দায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতে চাইতেন। তাই বার বার নায়কের চরিত্রের জন্য অডিশন দিতে থাকেন ফারাজ়। সেই সুযোগও পেয়ে যান তিনি।
০৪২০
বলি পরিচালক সুরজ বরজাতিয়া একটি কম বাজেটের ছবি বানানোর প্রচেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু টাকা কম থাকার কারণে বলিপাড়ার বড় মাপের তারকাদের সঙ্গে কাজ করতে চাইছিলেন না। সুরজ নতুন মুখের সন্ধানে ছিলেন।
০৫২০
অডিশনে ফারাজ়ের অভিনয় পছন্দ হয়ে যায় সুরজের। ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবির জন্য ফারাজ় এবং ভাগ্যশ্রীর সঙ্গে কাজ শুরুও করে দিয়েছিলেন সুরজ। কিন্তু শুটিং শুরু হওয়ার কিছু দিন পর অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারাজ়।
০৬২০
জন্ডিসে আক্রান্ত হন ফারাজ়। শুটিংয়ের কাজ বেশি দিন বন্ধ রাখতেও পারছিলেন না সুরজ। ফারাজ় কবে সুস্থ হয়ে সেটে ফিরবেন, তার কোনও নিশ্চয়তা ছিল না। তাই নিরুপায় হয়ে তাঁকে বাদ দিয়ে দেন সুরজ।
০৭২০
ফারাজ়ের পরিবর্তে সলমনকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন সুরজ। সলমনও তখন দর্শকের কাছে নতুন মুখ। ১৯৮৯ সালে ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ মুক্তি পাওয়ার পর কেরিয়ারের গোড়াতেই সাফল্যের স্বাদ পেয়ে যান সলমন।
০৮২০
‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবির সাফল্যের খবর পেয়ে আফসোস করেছিলেন ফারাজ়। তবে তিনি হার মানেননি। নায়ক হতে চাইতেন তিনি। তাই শুধুমাত্র নায়কের চরিত্রে কাজ করার জন্যই অডিশন দিতে থাকেন তিনি।
০৯২০
বলিপাড়ার ফিরোজ় খান এবং সঞ্জয় খানের মতো ছবি নির্মাতারা ফারাজ়কে তাঁদের সহকারী হিসাবে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করবেন বলে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ফারাজ়।
১০২০
শেষ পর্যন্ত অভিনয়ের সুযোগও পান ফারাজ়। ১৯৯৬ সালে বিক্রম ভট্টের পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘ফারেব’। সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ঘরানার এই ছবিতে ফারাজ়ের পাশাপাশি অভিনয় করেছিলেন সুমন রঙ্গনাথন এবং মিলিন্দ গুনাজি।
১১২০
‘ফারেব’ ছবিতে অভিনয়ের পর সুমন এবং মিলিন্দ প্রশংসা কুড়োলেও ফারাজ় থেকে যান পর্দার আড়ালে। এক বছর পর সুনীল শেট্টি, শিল্পা শেট্টি, শক্তি কপূরের মতো তারকাদের সঙ্গে ‘পৃথ্বী’ ছবিতে অভিনয় করেন ফারাজ়। কিন্তু এই ছবি মুক্তি পাওয়ার পর সুনীলকে নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়ে যায়। ফারাজ়ের নাম আবার আড়ালে চলে যায়।
১২২০
১৯৯৮ সালে হামিদ আলি খানের পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘মেহন্দি’ ছবিটি। রানি মুখোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করার সুযোগ পান ফারাজ়। কিন্তু দর্শক শুধুমাত্র রানির অভিনয়ের প্রশংসা করেন।
১৩২০
১৯৮২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির জনপ্রিয়তার পর পরিচালক বব্বর সুভাষ সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি আবার নতুন মুখ নিয়ে কাজ করবেন। দর্শককে আরও একটি সুপারহিট ছবি উপহার দিতে চাইছিলেন তিনি।
১৪২০
তাই ‘দুলহন বনু ম্যায় তেরি’ ছবিতে নতুন মুখ নিয়ে কাজ শুরু করেন সুভাষ। এই ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন ফারাজ় এবং দীপ্তি ভাটনগর। ১৯৯৯ সালে ছবিটি মুক্তি পায়। কিন্তু সেই সময় সমস্যার মুখে পড়েন পরিচালক।
১৫২০
বব্বরের ছবি কোনও ডিস্ট্রিবিউটর নিতে আগ্রহী ছিলেন না। তাই নিজের পকেটের টাকা খরচ করে মাত্র দু’টি প্রেক্ষাগৃহে ‘দুলহন বনু ম্যায় তেরি’ ছবিটি দেখানোর ব্যবস্থা করেন বব্বর। স্বাভাবিক ভাবেই বক্স অফিসে ব্যর্থ হয় ছবিটি।
১৬২০
বার বার কেরিয়ারে মুখ থুবড়ে পড়ায় মুষড়ে পড়েন ফারাজ়। সিদ্ধান্ত নেন, এর পর খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করবেন তিনি। দু’তিনটি হিন্দি সিনেমার পাশাপাশি হিন্দি ধারাবাহিকেও অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয় না।
১৭২০
অভিনয় করবেন না বলে মুম্বই ছেড়ে বেঙ্গালুরুতে চলে যান ফারাজ়। সেখানে গিয়ে গানবাজনায় মন দেন তিনি। নিজের একটি ব্যান্ডও খুলে ফেলেন। গান নিয়ে কেরিয়ারে এগিয়ে যাবেন বলে আবার মুম্বইয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ফারাজ়।
১৮২০
কিন্তু ফারাজ়ের জীবনে আবার অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। ঘন ঘন সর্দিকাশিতে আক্রান্ত হতেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে চিকিৎসকেরা জানান যে, তাঁর মস্তিষ্ক সংক্রমণ হয়েছে এবং তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে।
১৯২০
২০২০ সালের অক্টোবর মাসে বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয় ফারাজ়কে। চিকিৎসার জন্য অর্থও ছিল না তাঁর কাছে। বলি অভিনেত্রী পূজা ভট্ট তখন সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন।
২০২০
ফারাজ়ের চিকিৎসার জন্য মোট ২৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন বলে জানান পূজা। তিনি এবং সলমন খান দু’জনেই চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ দেন। কিন্তু শত চেষ্টা করেও ফারাজ়কে বাঁচানো যায়নি। ৪ নভেম্বর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।