All you need to know about Kansai International Airport which is built on water, is now sinking dgtl
Kansai International Airport
ডুবে যাচ্ছে ১৩ লক্ষ কোটি ব্যয়ে সমুদ্রের মাঝে কৃত্রিম দ্বীপে তৈরি বিমানবন্দর, চিন্তায় জাপান
জাপানের ওসাকা স্টেশন থেকে ৩৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ওসাকা বের ঠিক মাঝখানে দু’টি কৃত্রিম দ্বীপের উপর তৈরি হয়েছে কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৪ ১১:১৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
২৯ বছর আগে ১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সাধারণের জন্য দরজা খোলে জাপানের কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। জাপানের ওসাকা, কিয়োটো এবং কোবের মতো ব্যস্ত শহর থেকে নিকটতম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এটি।
০২১৮
জাপানের ওসাকা স্টেশন থেকে ৩৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ওসাকা বের ঠিক মাঝখানে দু’টি কৃত্রিম দ্বীপের উপর তৈরি হয়েছে কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
০৩১৮
কিন্তু যে দু’টি কৃত্রিম দ্বীপের উপর বিমানবন্দর তৈরি করা হয়েছে তা ক্রমশ সমুদ্রের তলায় ডুবে যাচ্ছে। এমনকি, মূল ভূখণ্ড থেকেও ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে এই বিমানবন্দর।
০৪১৮
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ইতিমধ্যেই কৃত্রিম দ্বীপের ৩৮ ফুটেরও বেশি ডুবে গিয়েছে। ২০৫৬ সালের মধ্যে আরও ১৩ ফুট সমুদ্রের তলায় ডুবে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞেরা।
০৫১৮
দু’টি কৃত্রিম দ্বীপের উপর বিমানবন্দর তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। কৃত্রিম দ্বীপ দু’টি নির্মাণ করতে প্রথমে সমুদ্রপৃষ্ঠের উপর পাঁচ ফুট উচ্চতার মাটি দেওয়া হয়। তার উপর ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ২২ লক্ষ পাইপ গেঁথে দেওয়া হয়।
০৬১৮
জমির ভিত শক্ত করতে পাইপের উপর মাটির সঙ্গে কাদা এবং বালি মেশানো হয়। ওসাকা বের উপর তৈরি দু’টি কৃত্রিম দ্বীপের জমি ভেজা স্পঞ্জের মতো ছিল। সেই জমি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে তার পর বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
০৭১৮
ষাটের দশকে টোকিয়ো শহরের সঙ্গে কানসাই এলাকার বাণিজ্যের কথা চিন্তা করে কোবে এবং ওসাকা শহরের কাছাকাছি একটি বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা করে জাপান সরকার।
০৮১৮
প্রথমে ভাবা হয়েছিল ইটামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুনর্নির্মাণ করে আরও বর্ধিত করা হবে। কিন্তু ইটামি এবং টোয়োনাকা শহরের কাছে এত উঁচু আবাসন রয়েছে যে বিমানবন্দর তৈরির জন্য ফাঁকা জমি পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে। এমনকি সেখানকার বাসিন্দারাও আপত্তি জানাতে শুরু করেন। বিমানবন্দর তৈরি হলে শব্দদূষণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি জানান তাঁরা। তাই সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।
০৯১৮
কোবে শহরে নতুন বিমানবন্দর তৈরির চিন্তাভাবনা করা হলেও কোবে প্রশাসনের তরফে সেই প্রস্তাব খারিজ করা দেওয়া হয়। তাই সমুদ্রপৃষ্ঠের উপর দু’টি কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় জাপান সরকার।
১০১৮
১৯৮৭ সাল থেকে দ্বীপ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২৬০০ একর জমির উপর কৃত্রিম উপায়ে দু’টি দ্বীপ তৈরি করে তার উপর তৈরি হয় কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
১১১৮
কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দু’টি অংশ রয়েছে। একটি অংশ ১২৬০ একর জমির উপর তৈরি। দ্বিতীয় অংশটি ১৩৪০ একর জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে।
১২১৮
১৯৯০ সালে কৃত্রিম দ্বীপ দু’টি তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর মাধ্যমে যুক্ত করা হয়। সেতু নির্মাণের চার বছর পর কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সম্পূর্ণ ভাবে কার্যকর হয়।
১৩১৮
১৯৯৫ সালের ১৭ জানুয়ারি ভূমিকম্প হয় জাপানে। ভূমিকম্পের ফলে জাপানের হোনসু দ্বীপে ৬,৪৩৪ জন মারা যান। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতিও হয়। কিন্তু কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গায়ে একটিও আঁচড় পড়েনি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ওই বিমানবন্দরের একটি কাচেও ফাটল পর্যন্ত ধরেনি।
১৪১৮
১৯৯৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উপর ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে। কিন্তু ঘণ্টায় ২১৬ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াও ক্ষতি করতে পারেনি বিমানবন্দরের।
১৫১৮
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ফের ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে পড়ে কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ঘূর্ণিঝড়ের সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, কয়েকটি বিমানের ইঞ্জিনের ভিতর জল ঢুকে যায়। বিমানবন্দরের ভিতর বহু যাত্রী আটকেও পড়েন।
১৬১৮
যে সেতুর মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে বিমানবন্দরের যোগাযোগ ছিল সেই সেতুর উপর একটি ট্যাঙ্কার আছড়ে পড়ে সেতুর কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। দু’দিন কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। শুধুমাত্র কিছু ঘরোয়া বিমানের উড়ানের অনুমতি দেয় জাপান সরকার।
১৭১৮
ঘূর্ণিঝড়ের এক মাস পর কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সম্পূর্ণ ভাবে চালু হয়। ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিলের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হয়।
১৮১৮
২০১৬ সালের গণনা অনুযায়ী কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোট ২ কোটি ৬০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেছেন। সেই সময় জাপানের তৃতীয় ব্যস্ততম এবং এশিয়ার ত্রিশতম ব্যস্ত বিমানবন্দর হিসাবে নাম লেখায় কানসাই বিমানবন্দর। তবে কৃত্রিম দ্বীপের প্রতিনিয়ত ডুবে যাওয়ার ঘটনা চিন্তায় ফেলেছে জাপান সরকারকে। তা হলে কি এই বিমানবন্দরটি কয়েক দশকের মধ্যে সমুদ্রের তলায় চলে যাবে? না কি এর বিকল্প হিসাবে অন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে?