হিটলারের নাৎসি বাহিনীর জোসেফ মেঙ্গেল থেকে শুরু করে জোসেফ গোয়েবলস পর্যন্ত, অ্যাডলফ হিটলার বাহিনীর যে অত্যাচারী সেনানায়কদের কথা ইতিহাসে উঠে এসেছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইরমা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৫৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
ইরমা গ্রেস ওরফে ‘দ্য বিউটিফুল বিস্ট’ ওরফে ‘দ্য হায়না অফ আউশভিটজ়’। মনে করা হয় নাৎসিদের কুখ্যাত আউশভিটজ় ঘাঁটিতে বন্দি ইহুদিদের উপর পুরুষ নাৎসি বাহিনী যে অত্যাচার চালিয়েছিল, তার থেকে অনেক বেশি অত্যাচার চালিয়েছিলেন এই নাৎসি মহিলা।
ছবি: সংগৃহীত।
০২২০
হিটলারের নাৎসি বাহিনীর ডক্টর জোসেফ মেঙ্গেল থেকে শুরু করে জোসেফ গোয়েবলস পর্যন্ত, অ্যাডলফ হিটলার বাহিনীর যে অত্যাচারী সেনানায়কদের কথা ইতিহাসে উঠে এসেছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইরমা।
ছবি: সংগৃহীত।
০৩২০
ইরমার জন্ম ১৯২৩ সালের ৭ অক্টোবর। ইরমা ছাড়াও তাঁর বাবা-মার আরও চার জন সন্তান ছিল।
ছবি: সংগৃহীত।
০৪২০
বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রেসের জন্মের ১৩ বছর পরে তাঁর মা আত্মহত্যা করেছিলেন। স্বামী স্থানীয় পানশালার মালিকের মেয়ের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন জানতে পাওয়ার পরই আত্মঘাতী হন ইরমার মা।
ছবি: সংগৃহীত।
০৫২০
শৈশব থেকেই বিভিন্ন ধরনের মানসিক নির্যাতন সহ্য করে বড় হতে হয়েছিল ইরমাকে। যার মধ্যে বেশির ভাগটাই তাঁর স্কুল থেকে পাওয়া।
ছবি: সংগৃহীত।
০৬২০
ইরমার বোন হেলেন এক বার জানিয়েছিলেন যে, স্কুলে ইরমার উপর অকথ্য অত্যাচার করত উঁচু শ্রেণির পড়ুয়ারা। ভয়ে কোনও দিন প্রতিবাদ করতে পারেননি ইরমা। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ইরমা খুব কম বয়সেই স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭২০
অর্থ উপার্জনের জন্য ইরমা প্রথমে একটি পশুখামারে এবং পরে একটি দোকানে কাজ শুরু করেন। জার্মানির অনেক বাসিন্দার মতো তিনিও হিটলারের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এবং মাত্র ১৯ বছর বয়সে, মহিলা বন্দিদের জন্য র্যাভেনসব্রুক কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের প্রহরী হিসাবে নিযুক্ত হন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৮২০
এক বছর পরে, অর্থাৎ, ১৯৪৩ সালে ইরমাকে নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে কুখ্যাত আউশভিটজ়ে পাঠানো হয়। অনুগত, নিবেদিতপ্রাণ, এবং বাধ্য নাৎসি সদস্য ইরমার খুব দ্রুত পদোন্নতি হয়। প্রহরী থেকে তাঁকে এসএস সুপারভাইজার পদে উন্নীত করা হয়। এটি ছিল নাৎসি বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯২০
ইরমার হাতে এত বেশি ক্ষমতা এসে গিয়েছিল যে, তিনি ইহুদি বন্দিদের উপর অকথ্য অত্যাচার শুরু করেন। বন্দিদের মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি যৌন নির্যাতনও চালাতে শুরু করেন ইরমা। মূলত পুরুষ ইহুদিদের উপরই যৌন অত্যাচার চলত বেশি। মহিলা ইহুদি বন্দিরা একেবারেই না-পসন্দ ছিল ইরমার। শোনা যায়, প্রতিদিনই এক জন না এক জন মহিলা বন্দিকে তিনি নিজের হাতে খুন করতেন।
ছবি: সংগৃহীত।
১০২০
তবে পুরুষদের জন্য ছিল অন্য ব্যবস্থা। পছন্দের পুরুষ ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে পাঠানোর আগে না কি তাঁদের সঙ্গে উদ্দাম যৌনতায় মাততেন ইরমা। এর পর তাঁদের বিষাক্ত গ্যাস চেম্বারে পাঠিয়ে দেওয়া হত।
ছবি: সংগৃহীত।
১১২০
ইরমা ডাকসাইটে সুন্দরী ছিলেন। তাই তাঁর রূপের আগুনে মন পুড়ত অনেক নাৎসি অফিসারের। আর সেই সুযোগই নিতেন ইরমা। উদ্দাম যৌনতায় মাততেন সেনাকর্তাদের সঙ্গে। শোনা যায়, কখনও কখনও একই সময়ে একাধিক পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতায় মাততেন ইরমা।
ছবি: সংগৃহীত।
১২২০
ইরমার অত্যাচার করার ভয়াবহতা দেখে তাঁর নাম দেওয়া হয় ‘দ্য হায়না অফ আউশভিটজ়’।
ছবি: সংগৃহীত।
১৩২০
আউশভিটজ় থেকে বেঁচে ফিরে আসা ইহুদি বন্দি ওলগা লেঙ্গেল ‘ফাইভ চিমনিস’ বইয়ে লিখেছেন, জোসেফ মেঙ্গেল-সহ অন্য নাৎসি অফিসারদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ইরমার।
ছবি: সংগৃহীত।
১৪২০
লেঙ্গেল নিজের বইয়ে আরও উল্লেখ করেছেন যে, সুন্দরী ইহুদি মহিলারা ছিলেন ইরমার দু’চক্ষের বিষ। আর সেই কারণে বেছে বেছে রূপসী ইহুদি বন্দিদের গ্যাস চেম্বারে পাঠাতেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত।
১৫২০
অধ্যাপক ওয়েন্ডি এ. সার্টির গবেষণা অনুসারে, বন্দি ইহুদি মহিলাদের স্তনে আঘাত করাও ইরমার অভ্যাসে পরিণত হয়। পুরুষ বন্দিদের উপর যৌন নির্যাতন চালানোর সময় তিনি নাকি মহিলা বন্দিদের তা দেখতে বাধ্য করতেন।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬২০
সার্টির গবেষণাতে আরও উল্লেখ রয়েছে যে, নিজের পোষা কুকুরকেও মাঝেমধ্যে বন্দিদের উপর লেলিয়ে দিতেন তিনি। পেরেকযুক্ত জুতো দিয়ে বন্দিদের ক্রমাগত লাথিও মারা হত।
ছবি: সংগৃহীত।
১৭২০
ইহুদি ভার্চুয়াল লাইব্রেরি অনুযায়ী, ইরমার অত্যাচারের মাত্রা ছাড়িয়ে এই পর্যায়ে গিয়েছিল যে, তিন জন মৃত বন্দির চামড়া দিয়ে তিনি একটি ল্যাম্পশেড তৈরি করিয়েছিলেন।
ছবি: সংগৃহীত।
১৮২০
ইরমার পরিণতিও হয়েছিল করুণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশরা ইরমাকে গ্রেফতার করে এবং ইরমা-সহ ৪৫ জন নাৎসি অফিসারকে যুদ্ধাপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে।
ছবি: সংগৃহীত।
১৯২০
ইরমার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া মানুষদের বয়ানের উপর ভিত্তি করে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। ১৯৪৫-এর ১৩ ডিসেম্বর ইরমাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর।
ছবি: সংগৃহীত।
২০২০
ইরমাই ছিলেন বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটেনে ফাঁসি হওয়া সর্বকনিষ্ঠ মহিলা।