All you need to know about Dhanadhanyo Auditorium in Alipore, inaugurated by CM Mamata Banerjee dgtl
Dhanadhanyo Auditorium
স্বপ্ন, মায়া না বিভ্রম! দিনে শ্বেতশুভ্র শঙ্খ, রাতে বাহারি আলোর কেরামতি, আর কী কী রয়েছে ‘ধন ধান্যে’
‘ধন ধান্য’ প্রেক্ষাগৃহের দৈর্ঘ্য ৫১০ ফুট এবং প্রস্থ ২১০ ফুট। উচ্চতা ৬০০ ফুট। বিশাল এই প্রেক্ষাগৃহে রয়েছে দু’টি সভাঘর, ৩টি থিয়েটার, ২টি বোর্ড রুম, ৬টি অতিথি নিবাস এবং ২টি ডরমেটরি।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ১২:৩৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
আলিপুরের বুকে তৈরি হয়েছে শ্বেতশুভ্র এক বিশাল ইমারত। শাঁখের আদলে তৈরি এই প্রেক্ষাগৃহের নাম ‘ধন ধান্য’। পয়লা বৈশাখের আগেই কলকাতা তথা বাংলার মানুষকে এই নতুন উপহার দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ধন ধান্য’ নামটি তাঁরই দেওয়া। শাঁখের আদলে তৈরির ভাবনাও তাঁরই। বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি এই প্রেক্ষাগৃহের উদ্বোধন করেন।
০২১৭
মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও এই প্রেক্ষাগৃহের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী, আমলা এবং বিশিষ্টজনেরা। বৃহস্পতিবার বিকালে শিল্পী-তারকা-নেতা-মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে গমগম করছিল ওই প্রেক্ষাগৃহ। ‘ধন ধান্য’ প্রাঙ্গণ যেন চাঁদের হাট হয়ে উঠেছিল।
০৩১৭
আন্তর্জাতিক মানের ছ’তলা এই প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হয়েছে ৬ হাজার মেট্রিক টন ইস্পাত দিয়ে। তার উপর রয়েছে নকশা করা দস্তার মোড়ক। যে দস্তা এসেছে ফ্রান্স থেকে।
০৪১৭
‘ধন ধান্য’ প্রেক্ষাগৃহের দৈর্ঘ্য ৫১০ ফুট এবং প্রস্থ ২১০ ফুট। উচ্চতা ৬০০ ফুট। বিশাল এই প্রেক্ষাগৃহের মধ্যে রয়েছে দু’টি সভাঘর, ৩টি থিয়েটার হল, ২টি বোর্ড রুম, ৬টি অতিথি নিবাস এবং ২টি ডরমেটরি।
০৫১৭
এ ছাড়াও যে কোনও অনুষ্ঠানের জন্য ব্যাঙ্কোয়েট, কাফেটেরিয়া, ফুড কোর্টও রয়েছে এই অত্যাধুনিক প্রেক্ষাগৃহে।
০৬১৭
প্রেক্ষাগৃহের দু’টি সভাঘরের মধ্যে রয়েছে দু’হাজার আসনের একটি সভাঘর। অন্য সভাঘরের আসনসংখ্যা ৫৪০। রয়েছে একটি স্ট্রিট থিয়েটারও। যেখানে ৩৫০ দর্শক একসঙ্গে বসে রঙ্গমঞ্চ উপভোগ করতে পারবেন।
০৭১৭
‘ধন ধান্যে’র একেবারে নীচের তলায় রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। দু’ভাগে কমপক্ষে ২৫০টি গাড়ি একসঙ্গে রাখা যাবে সেখানে। পরবর্তী কালে এমন ব্যবস্থা করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী, যেখানে গাড়ি ঢোকাতে এবং বার করতে সময় লাগবে খুব কম।
০৮১৭
এই শ্বেতশুভ্র শাঁখের আসল কেরামতি বোঝা যাবে রাতের অন্ধকারে। রাতের বেলা এই ইমারত আর সাদা থাকে না। রং বদলে একেবারে অন্য রূপে সেজে ওঠে ‘ধন ধান্যের’ বাইরের অংশ।
০৯১৭
অন্ধকারে দূর থেকে ‘ধন ধান্য’ দেখতে লাগে চকচকে বাদামি বর্ণের। তার উপর থেকে বার হয় চোখধাঁধানো বাহারি আলোর ছটা। যে আলো আনা হয়েছে আয়ারল্যান্ড থেকে। আয়ারল্যান্ড থেকে ৭০০০ আলো এনে ঢেলে সাজানো হয়েছে ‘ধন ধান্যে’র বাইরের অংশ।
১০১৭
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘ধন ধান্য’ তৈরি হয়েছে চার একর জমির উপর। খরচ হয়েছে মোট ৪৪০ কোটি টাকা। পূর্ত দফতর এই প্রেক্ষাগৃহ তৈরির দায়িত্বে ছিল। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হিডকো-কে।
১১১৭
২০১৮ সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘ধন ধান্য’ তৈরির কাজ শুরু হয়। মাঝে কোভিডের কারণে কাজ কিছু দিন আটকে থাকলেও পরে আবার জোরকদমে শুরু হয়ে যায় নির্মাণকাজ।
১২১৭
বৃহস্পতিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই ‘ধন ধান্য’ তৈরির কৃতিত্ব দিয়েছেন মমতাকে। অত্যাধুনিক প্রেক্ষাগৃহ তৈরির ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।
১৩১৭
রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানিয়েছেন, অনেক প্রকৌশলীই শাঁখের আদলে প্রেক্ষাগৃহ তৈরির ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নাছোড়বান্দা ছিলেন যে, যদি প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হয়, তা হবে শাঁখের আদলেই।
১৪১৭
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের একটাই বক্তব্য, বাংলার মধ্যে এমন এক আন্তর্জাতিক মানের প্রেক্ষাগৃহ স্বপ্নাতীত। গায়ক প্রতুল মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি ‘ধন ধান্য’ দেখে ‘থ’ হয়ে গিয়েছেন।
১৫১৭
‘ধন ধান্য’ দেখে ‘থ’ হয়ে যাওয়ার কথা বলেন পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়িও। কালিদাসের লেখা উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘‘এই প্রেক্ষাগৃহ আমার কাছে ‘স্বপ্নো নু মায়া নু মতিভ্রমো নু।’ আমি কী পাগল হয়ে যাচ্ছি!’’ (অর্থাৎ এই প্রেক্ষাগৃহ স্বপ্ন, মায়া না বিভ্রম তা তিনি বুঝতে পারছেন না।)
১৬১৭
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী জানান, তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠান করে এসেছেন। তাঁর একটাই আক্ষেপ ছিল বাংলাতে এ রকম কোনও প্রেক্ষাগৃহ নেই। তবে ‘ধন ধান্য’ তাঁর সেই আক্ষেপে ইতি টেনেছে বলেও জানান তিনি। কবি সুবোধ সরকার বলেন, ‘‘এই প্রেক্ষাগৃহ নিজের চোখে দেখে একটাই কথা বলব, আজ এই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা গোটা ভারতবর্ষকে হারিয়ে দিলেন।’’
১৭১৭
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন ‘ধন ধান্য’-এর উপর অধিকার শিল্পীদের। বাংলার শিল্পীরা যেন আন্তর্জাতিক স্তরে টেক্কা দিতে পারে তাই এই সৃষ্টি।