All you need to know about British-American computer programmer and businessman John McAfee dgtl
John McAfee
থাকতেন ‘হারেমে’, বিয়ে করেন যৌনকর্মীকে, জেলেই নিজেকে শেষ করেন বিশ্বের অন্যতম বিতর্কিত ব্যবসায়ী
ম্যাকাফির জন্ম ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশায়ারের সিন্ডারফোর্ডে। পরবর্তী কালে আমেরিকায় চলে যান তিনি। যখন ম্যাকাফির ১৫ বছর বয়স সেই সময় তাঁর বাবা আত্মহত্যা করেন। সেই মৃত্যু তাঁর মনে গভীর ছাপ ফেলে।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫ ১০:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
কোটি কোটি টাকার মালিক, ক্রিপ্টো মুদ্রার মুকুটহীন সম্রাট, বর্ণময় চরিত্র। অথচ জীবন শেষ হয় কারাগারের কালো কুঠুরিতে। আত্মহত্যা করে শেষ করেন নিজেকে। কথা হচ্ছে অ্যান্টিভাইরাস সফ্টঅয়্যার সংস্থা ‘ম্যাকাফি’র প্রতিষ্ঠাতা জন ডেভিড ম্যাকাফিকে নিয়ে।
০২২১
২০২১ সালের জুনে স্পেনের বার্সেলোনার একটি কারাগারে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ম্যাকাফিকে। পুলিশ জানিয়েছিল, আত্মহত্যা করেছেন তিনি। বর্ণময় চরিত্রের ম্যাকাফি কেন আত্মহত্যা করলেন তা আজও রহস্য।
০৩২১
পুলিশের দাবি ছিল, স্পেনের জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ম্যাকাফি। আর সে কারণেই নাকি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।
০৪২১
ম্যাকাফির বর্ণময় জীবনে ছিল ঘটনার ঘনঘটা। জীবিত অবস্থায় বিতর্কের জেরে বহু বার সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসেন তিনি।
০৫২১
ম্যাকাফির জন্ম ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশায়ারের সিন্ডারফোর্ডে। পরবর্তী কালে আমেরিকায় চলে যান তিনি। যখন ম্যাকাফির ১৫ বছর বয়স, সেই সময় তাঁর বাবা আত্মহত্যা করেন। সেই মৃত্যু তাঁর মনে গভীর ছাপ ফেলে।
০৬২১
কম্পিউটার প্রোগ্রামার এবং ব্যবসায়ী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন ম্যাকাফি। আমেরিকার লিবার্টারিয়ান পার্টির সক্রিয় সদস্যও ছিলেন তিনি।
০৭২১
অ্যান্টিভাইরাস সফ্টঅয়্যার তৈরি করে প্রযুক্তিক্ষেত্রে ঝড় তুলেছিলেন ম্যাকাফি। তবে যে সংস্থার জেরে এত নামযশ হয়েছিল, পরবর্তী কালে সেই সংস্থাকে ১০ কোটি ডলারে বিক্রি করে দেন। পরে বিনিয়োগ শুরু করেন আবাসন শিল্পে। কিন্তু ২০০৮ সালে এই শিল্প মুখ থুবড়ে পড়লে তিনি বড়সড় ধাক্কা খান।
০৯২১
পরবর্তী কালে বিটকয়েনেও বিনিয়োগ করেছিলেন ম্যাকাফি। বিস্তর আয়ও করেন ক্রিপ্টো মুদ্রা থেকে।
১০২১
২০০৯ সালে ম্যাকাফির বিরুদ্ধে এক প্রতিবেশীকে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই সময় ম্যাকাফি বেলিজ়ে থাকতেন। তাঁর দু’টি কুকুরের চিৎকার নিয়ে প্রতিবেশী গ্রেগরি ফাউলের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। পরে গ্রেগরিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথায় দু’টি গুলির চিহ্ন ছিল। অভিযোগ ওঠে ম্যাকাফির বিরুদ্ধেই।
১১২১
বেলিজ়ে থাকাকালীন ম্যাকাফির বিরুদ্ধে মাদক রাখা এবং বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত থাকারও অভিযোগ ওঠে। মনে করা হয়, বেলিজ়ে নিজস্ব একটি ‘হারেম’ ছিল ম্যাকাফির। সেখানে তিনি একাধিক মহিলার সঙ্গে থাকতেন। যৌবন ধরে রাখতে প্রতি সপ্তাহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ইঞ্জেকশনও নিতেন।
১২২১
বন্দুকের শখ ছিল ম্যাকাফির। বিভিন্ন ধরনের বন্দুকের মালিকও ছিলেন। প্রায়শই সেই সব বন্দুক নিয়ে ছবি তুলতে দেখা যেত তাঁকে।
১৩২১
বলা হয়, ম্যাকাফিকে পঞ্চাশেরও বেশি বার খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যেক বারই তিনি প্রাণে বাঁচেন। পাশাপাশি অবৈধ কার্যকলাপের জন্য তিন দেশের পুলিশ নাকি তাঁকে খুঁজছিল।
১৪২১
ম্যাকাফির ব্যক্তিগত জীবনও ছিল রঙিন। তিনটে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তাঁর তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন যৌনকর্মী। অবৈধ ভাবে অনুপ্রবেশের জন্য ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ম্যাকাফিকে গ্রেফতার করে গুয়াতেমালা সরকার। গুয়াতেমালা থেকে নির্বাসিত হওয়ার পর ম্যাকাফিকে আমেরিকায় ফেরত পাঠানো হয়।
১৫২১
আমেরিকা পৌঁছে ফ্লরিডার মিয়ামি বিচে তাঁর থেকে ৩০ বছরের ছোট যৌনকর্মী জ্যানিস ডাইসনের সঙ্গে আলাপ হয় ম্যাকাফির। একসঙ্গে রাত্রিযাপন করেন তাঁরা। সেই থেকে তাঁদের সম্পর্কের শুরু। ২০১৩ সালে বিয়েও করেন তাঁরা। বিয়ের পর ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে চলে আসেন দম্পতি।
১৬২১
ম্যাকাফির বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে একাধিক মামলা চলছিল। একটি মামলায় আমেরিকা তাঁর প্রত্যর্পণ চায়। স্পেনের একটি আদালত তার অনুমতি দেয়।
১৭২১
সেই রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ম্যাকাফির মৃত্যু হয়। পুলিশের দাবি জেলে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। স্পেনের একটি সংবাদমাধ্যম সেই সময় দাবি করেছিল, রায় শুনে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন ব্যবসায়ী। জেলের চিকিৎসকেরা তাঁকে গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। রায় শোনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি আত্মহত্যা করেন।
১৮২১
কর ফাঁকি থেকে শুরু করে খুন, একাধিক অভিযোগ ছিল ম্যাকাফির বিরুদ্ধে। বিপুল কর ফাঁকির অভিযোগ এড়াতে ২০২০ সালে তিনি আমেরিকা থেকে স্পেনে পালিয়ে যান। কিন্তু বার্সেলোনা বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
১৯২১
জেলে থাকাকালীন টুইটও করেন ম্যাকাফি। সেই টুইটে লিখেছিলেন, ‘‘আমি এখানে সন্তুষ্ট। আমার বন্ধু আছে। খাবার ভাল। সব ঠিক আছে।’’ ওই টুইটে আরও লিখেছিলেন, ‘‘জেনে রেখো, আমি যদি নিজেকে ফাঁসিতে ঝোলাই, সেটা আমার কোনও দোষ নয়।’’ তাঁর এই টুইটকে কেন্দ্র করে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল।
২০২১
অনেকের দাবি, তাঁর ওই টুইটের অন্য অর্থ ছিল। সফ্টঅয়্যার সংস্থার প্রাক্তন কর্তা নাকি বোঝাতে চেয়েছিলেন, খুন করে তাঁকে ঝুলিয়ে দেওয়া হতে পারে।
২১২১
ম্যাকাফের আইনজীবীরও দাবি ছিল, ম্যাকাফিকে কখনওই মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত মনে হয়নি তাঁর। তাঁর সঙ্গে যে সমস্ত সংবাদিক জেলে দেখা করতে যেতেন, তাঁদেরও একাংশ একই দাবি করেন। তাই তাঁর মৃত্যু নিয়ে রহস্য থেকে গিয়েছে আজও।