All you need to know about bollywood actress Geeta Basra, wife of Indian cricketer Harbhajan Singh dgtl
Geeta Basra
ক্রিকেটার স্বামীর জন্য কেরিয়ার নষ্ট! দু’বার মিসক্যারেজ হওয়া নায়িকা এখন বলিপাড়া থেকে দূরে
লন্ডনেই বেড়ে ওঠা, লন্ডনেই পড়াশোনা। কিন্তু শৈশবের স্বপ্ন সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিল গীতা বসরার।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩ ০৮:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
ছোট থেকে একটি মাত্র স্বপ্ন দেখেছেন গীতা বসরা। অভিনেত্রী হওয়ার। হিন্দি ফিল্মজগতের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের তালিকায় থাকবেন তিনি— শৈশবের এই ইচ্ছাপূরণ করতেই লন্ডনে নিজের পরিবার ছেড়ে টিনসেল নগরীতে পা রেখেছিলেন গীতা। কিন্তু তাঁর কাজের চেয়েও বেশি চর্চিত হতেন ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে। প্রেম করছেন বলেই যেন শিরোনামে বেশি আসতেন গীতা। ধীরে ধীরে আশা ছেড়ে দিয়ে বলিপাড়া থেকে সরে আসেন তিনি।
০২২১
১৯৮৪ সালের ১৩ মার্চ ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথ এলাকায় এক পঞ্জাবি পরিবারে জন্ম গীতার। লন্ডনেই তাঁর বেড়ে ওঠা, লন্ডনের স্কুলের গণ্ডি পার করেছেন তিনি। কিন্তু শৈশবের স্বপ্ন তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিল। গীতা বরাবর অভিনেত্রী হতে চাইতেন। কিন্তু হলিউডে নয়, তিনি কাজ করতে চাইতেন হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে।
০৩২১
বাবা-মাকে নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলেন গীতা। কন্যার ইচ্ছার দামও দিয়েছিলেন তাঁরা। ১৯ বছর বয়সে বাবা-মাকে ছেড়ে লন্ডন থেকে মুম্বইয়ে চলে যান গীতা। অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন চোখে বোনা থাকলেও ইন্ডাস্ট্রির মারপ্যাঁচ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না তিনি। একের পর এক অডিশন দিয়েছেন। বহু ছবি নির্মাতারা তাঁকে ফিরিয়েও দিয়েছিলেন।
০৪২১
লন্ডনে বড় হয়েছেন বলে হিন্দি ভাষায় খুব একটা সড়গড় ছিলেন না গীতা। তাই হিন্দি ভাষা শেখার প্রতি জোর দিয়েছিলেন তিনি। মুম্বইয়ের নামকরা প্রতিষ্ঠান থেকে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন গীতা।
০৫২১
২০০৬ সালে বড় পর্দায় অভিনয় করার সুযোগ পান গীতা। আদিত্য দত্তের পরিচালনায় ‘দিল দিয়া হ্যায়’ ছবিতে কাজ করেন তিনি। ইমরান হাশমি, মিঠুন চক্রবর্তীর মতো তারকাদের সঙ্গে প্রথম অভিনয় করেছিলেন গীতা। কিন্তু সেই ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।
০৬২১
কেরিয়ারের প্রথম ছবি ফ্লপ হলেও বলিপাড়ায় গীতার নাম মুখে মুখে ফিরত অন্য ভাবে। প্রথম সিনেমাতেই ইমরানের সঙ্গে কাজ করেছিলেন বলে সকলে ধারণা ছিল, গীতা ‘বোল্ড’ অভিনেত্রী হিসাবেই কাজ করবেন।
০৭২১
‘দিল দিয়া হ্যায়’ মুক্তির এক বছর পর গীতার কেরিয়ারের দ্বিতীয় ছবি ‘দ্য ট্রেন’ মুক্তি পায়। এই ছবিতেও ইমরানের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। তত দিনে ইন্ডাস্ট্রিতে ইমরান ‘সিরিয়াল কিসার’ নামে পরিচিত হয়ে গিয়েছেন। দ্বিতীয় ছবিতেও ইমরানের সঙ্গে কাজ করছেন দেখে বলিপাড়ার গুটিকয়েক বলিনির্মাতা অনুমান করে নিয়েছিলেন যে, গীতা লম্বা রেসের ঘোড়া নন।
০৮২১
‘দ্য ট্রেন’ ছবিটি ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়ার পর হিট হয়। অনেকের দাবি, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে ঘিরে চিত্রনাট্যের বুনন হওয়ায় এই ছবিটি হিট হয়েছে। কিন্তু তা ছাড়াও ছবির গানগুলি আলাদা ভাবে জনপ্রিয় হয়। গীতার অভিনয় দর্শকের মনে ধরে।
০৯২১
দ্বিতীয় ছবি হিট হওয়ার পর রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন গীতা। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অভিনেত্রীর পোস্টারও লাগানো হয়। কেরিয়ারের সিঁড়িতে পা রাখার প্রথম ধাপেই গীতার জীবনে আসে নতুন চরিত্র। ক্রিকেটার হরভজন সিংহ।
১০২১
শহরের বিভিন্ন জায়গায় গীতার মুখ দেখার পর তাঁকে প্রথম নজরেই ভাল লেগে যায় হরভজনের। কিন্তু গীতার পরিচয় জানতেন না তিনি। পরে ‘দ্য ট্রেন’ ছবির একটি গানের দৃশ্যে গীতাকে অভিনয় করতে দেখেন হরভজন। তিনি জানতেন যে, বলিপাড়ার খবরাখবর যুবরাজ সিংহের কাছে পাওয়া যাবে। তাই কোনও উপায় না পেয়ে যুবরাজের শরণাপন্ন হন হরভজন।
১১২১
গীতার সম্পর্কে যুবরাজকে খোঁজ নিতে বলেন হরভজন। অভিনেত্রীর সঙ্গে হরভজনের যোগাযোগ করিয়ে দেন যুবরাজ। তার পর গীতার সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন তিনি। কিন্তু হরভজনের এমন ব্যবহারে অভিনেত্রী বিরক্তবোধ করতেন। টানা ১০ মাস কথা না বলে হরভজনকে এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
১২২১
তবুও প্রয়োজনের সময় গীতাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন হরভজন। আইপিএল খেলা দেখার জন্য দুটো টিকিট প্রয়োজন ছিল গীতার। কিন্তু তিনি কোনও ভাবেই টিকিটের খোঁজ পাচ্ছিলেন না। অগত্যা হরভজনের কাছেই সাহায্য চান তিনি। গীতাকে সঙ্গে সঙ্গে দু’টি টিকিট পাঠিয়ে দিয়েছিলেন হরভজন।
১৩২১
হরভজন ভেবেছিলেন যে, গীতা তাঁর কোনও বন্ধুকে নিয়ে আইপিএল দেখতে আসবেন। কিন্তু পরে তিনি জানতে পারেন যে, গীতা তাঁর গাড়িচালকের জন্য টিকিট চেয়েছিলেন। ওই টিকিটে গাড়ির চালক তাঁর এক আত্মীয়কে নিয়ে খেলা দেখে এসেছিলেন। তবে টিকিটের সূত্রে হরভজনের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেন গীতা।
১৪২১
এই বার্তালাপ শুধু ফোনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। গীতা এবং হরভজন কফিশপেও দেখা করা শুরু করলেন। ধীরে ধীরে তাঁদের বন্ধুত্ব প্রেমে পরিণত হয়। ডেট করতেও শুরু করেছিলেন তাঁরা। দু’জনেই চেয়েছিলেন যে, তাঁদের সম্পর্ক সকলের আড়ালে থাকুক। কিন্তু ক্যামেরার লেন্সকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। পাপারাৎজিদের ক্যামেরায় মাঝেমধ্যেই হরভজন এবং গীতা একসঙ্গে ধরা দিতেন।
১৫২১
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে গীতা বলেছিলেন, ‘‘আমার জীবনে এক সময় এমন এসেছিল যে, তখন আমার কাজ নিয়ে আলোচনা হত না। চর্চার বিষয় ছিল হরভজনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। আমরা কোথায় দেখা করতে গিয়েছিলাম, আমরা কবে বিয়ে করব তা নিয়েই বেশি চর্চা হত।’’
১৬২১
হরভজনের সঙ্গে গীতার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় ছবি নির্মাতারাও গীতাকে আর কাজ দিতে চাননি। তাঁরা ভেবেছিলেন যে, ইন্ডাস্ট্রির নবাগতা এই অভিনেত্রী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন মানে খুব তাড়াতাড়ি বিয়েও করে ফেলবেন। পরে আর অভিনয় করবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন ছবি নির্মাতারা।
১৭২১
গীতা জানিয়েছেন যে, হরভজনের সঙ্গে সম্পর্কে আসার পর ৪টি বড় ছবির কাজ হারিয়েছিলেন তিনি। তার পরেও কয়েকটি হিন্দি ছবি এবং একটি মিউজিক ভিডিয়োতে অভিনয় করেছিলেন গীতা। কিন্তু কোনও ভাবেই আর ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করতে পারেননি গীতা।
১৮২১
২০১৫ সালে হরভজনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন গীতা। বিয়ের পর একটি হিন্দি এমনকি একটি পঞ্জাবি ছবিতেও কাজ করেছিলেন তিনি। একটি ছবিও ব্যবসা করতে পারেনি। অবশেষে, ফিল্মপাড়া থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন গীতা।
১৯২১
বলিপাড়া থেকে সরে এলেও আলোর রোশনাই পিছন ছাড়েনি গীতার। হরভজনের স্ত্রী হিসাবেই এখন তাঁর পরিচয়। সেই কারণে ক্যামেরার লেন্সও তাঁর দিকে তাক করা থাকে। ইনস্টাগ্রামেও ২০ লক্ষ অনুরাগী রয়েছে তাঁর।
২০২১
বিয়ের পর সংসার নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন গীতা। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই তাঁর কোল আলো করে কন্যাসন্তান আসে। কন্যার জন্মের প্রায় পাঁচ বছর পর পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। অভিনেত্রী জানান যে, পুত্রসন্তান জন্মানোর আগে পর পর দু’বার মিসক্যারেজ হয়েছিল তাঁর।
২১২১
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে, দীর্ঘ বিরতির পর আবার বড় পর্দায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গীতা। পবন ওয়াদেওয়ারের পরিচালনায় ‘নোটারি’ নামের ড্রামা ঘরানার ছবিতে দেখা যাবে গীতাকে। বাঙালি অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যাবে তাঁকে।