All needs to know about Pakistan Internet controversy dgtl
Pakistan Internet
পাকিস্তানে আচমকা বিপর্যস্ত ইন্টারনেট, নেপথ্যে সেনার ‘ফায়ারওয়াল’? না কি নয়াদিল্লির ‘কারসাজি’?
বিগত কয়েক দিন ধরে পাকিস্তানে ইন্টারনেটের দশা বেহাল। ধুঁকে ধুঁকে চলছে কম্পিউটার এবং মোবাইলের ইন্টারনেট পরিষেবা। আর তা নিয়েই হইচই পড়েছে সে দেশে। তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৪ ০৮:২৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
আবার বিপাকে পাকিস্তান। গত কয়েক দিন ইন্টারনেটের বিপুল গোলমালের জেরে নাজেহাল ভারতের প্রতিবেশী দেশ। পাকিস্তানে ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা জন্ম দিয়েছে। এই নিয়ে সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুলও তুলছে পাক জনগণ। এমনকি আঙুল তোলা হয়েছে ভারতের দিকেও।
০২১৯
কিন্তু কী নিয়ে এত বিতর্ক? কেন এত হইচই? বিগত কয়েক দিন ধরে পাকিস্তানে ইন্টারনেটের দশা বেহাল। ধুঁকতে ধুঁকতে চলছে কম্পিউটার এবং মোবাইলের ইন্টারনেট পরিষেবা। সাধারণ ওয়েবসাইট খুলতেই অনেক সময় চলে যাচ্ছে। ভারী ওয়েবসাইট হলে তো কথাই নেই।
০৩১৯
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা দাবি করেছেন, হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে ছবি বা ভয়েস নোট পাঠাতে এবং ডাউনলোড করতে গিয়েও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা।
০৪১৯
ইন্টারনেট বিঘ্নিত হওয়ার কারণে পাকিস্তানের ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতির মুখ দেখছে। আরও চাপে পড়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। পাক টেলিকম সেক্টর ইতিমধ্যেই কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখ দেখে ফেলেছে।
০৫১৯
পুরো বিষয়টি নিয়ে দিকে দিকে ক্ষোভপ্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে পাকিস্তানের সাধারণ জনগণকে। পাক জনগণের একাংশের দাবি, ইন্টারনেট ব্যবহারে নজরদারি চালাতেই কোনও বিশেষ ‘ফায়ারওয়াল’ ইনস্টল করেছে পাক সরকার। আবার অনেকের মত, এই ‘ফায়ারওয়াল’ লাগিয়েছে পাক সেনা।
০৬১৯
আর সেই কারণেই নাকি বিঘ্নিত হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীরাও একই অভিযোগ এনেছে সরকারের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, এ ভাবে চলতে থাকলে কয়েকশো কোটির ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
০৭১৯
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর অভিযোগ, তাদের কন্ঠরোধ করতে এবং সরকারের সমালোচনা রুখতে ইন্টারনেট পরিষেবায় কারচুপি করেছে শাহবাজ শরিফ সরকার।
০৮১৯
এই জল্পনাও উঠেছে যে, প্রতিবেশী বাংলাদেশের বিক্ষোভ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের ইন্টারনেটের গতি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক সরকার।
০৯১৯
সম্প্রতি বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে থাকা কোটা ব্যবস্থায় সংস্কারের দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সে দেশ। সরকার বিরোধী আন্দোলনে নামেন দেশের হাজার হাজার মানুষ। অনেকের মৃত্যু হয়। লাগাতার বিক্ষোভের জেরে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। আর তাতেই নাকি সিঁদুরে মেঘ দেখেছে পাকিস্তান।
১০১৯
পাকিস্তানের অর্থনীতির হাল অনেক দিন ধরেই বেহাল। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটাতে নাভিশ্বাস উঠছে মানুষের। ইমরানের জেলবন্দি থাকা নিয়েও নাকি দেশের অন্দরে ক্ষোভ জমছে।
১১১৯
আর তাই যাতে পাকিস্তানেও বাংলাদেশের মতো সরকার বিরোধী আন্দোলনের আগুন না জ্বলে ওঠে এবং তাতে যেন সমাজমাধ্যমের হাওয়া না লাগে, সেই কারণেই নাকি পদক্ষেপ করে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দিয়েছে পাক সরকার।
১২১৯
যদিও ‘ফায়ারওয়াল’ ইনস্টল করার বা বিরোধীদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের সরকার। পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথরিটি (পিটিএ)-র চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সমুদ্রের তলায় ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য যে অপটিক্যাল ফাইবার বা সাবমেরিন তার রয়েছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেই গতি কমেছে ইন্টারনেটের।
১৩১৯
হাফিজুরকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘সাবমেরিন তারে ত্রুটি দেখা দেওয়ার কারণেই ইন্টারনেট পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। ২৮ অগস্টের মধ্যে এই তার মেরামত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’’
১৪১৯
সরকার এ-ও জানিয়েছে, ‘ওয়েব ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এর প্রয়োজনীয় আপগ্রেডের জন্যও ইন্টারনেট পরিষেবায় গন্ডগোল দেখা দিয়েছে।
১৫১৯
ইন্টারনেটের বিঘ্নিত পরিষেবা নিয়ে হস্তক্ষেপ করেছে আদালত। পিটিএ-র জমা দেওয়া রিপোর্টের পরে সরকারের কাছ থেকে আরও বিস্তারিত এবং তথ্যভিত্তিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে লাহোর হাই কোর্ট।
১৬১৯
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিটিএ-র জমা দেওয়া রিপোর্ট পাকিস্তান জুড়ে ইন্টারনেটের গতি হ্রাস পাওয়ার জন্য চারটি প্রাথমিক কারণের উল্লেখ রয়েছে। যদিও, আদালত সেই কারণগুলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
১৭১৯
পাকিস্তানের সাবমেরিন কেবলের সমস্যা ছাড়াও রিপোর্টে পাকিস্তানের একটি প্রধান ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার ভুল কনফিগারেশনের উল্লেখ করা হয়েছে। এই ত্রুটির কারণে দেশব্যাপী ইন্টারনেটের গতি ৭০ শতাংশ কমেছে বলে দাবি।
১৮১৯
পিটিএ-র রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)-এর ব্যবহার বৃদ্ধির কারণেও গতি হারিয়েছে ইন্টারনেট। প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে ভিপিএনের এনক্রিপশন, টানেলিং এবং ডেটা রাউটিংয়ের কারণে স্বাভাবিক ভাবেই ইন্টারনেটের গতি কম হয়।
১৯১৯
আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে পিটিএ এ-ও দাবি করেছে, ১৫ অগস্ট ইন্টারনেট নিয়ে ভারতীয় সক্রিয়তা বেড়ে যায়। ওই দিন ভারতের তরফে পাকিস্তানের বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং ইন্টারনেট পরিষেবা ব্লক করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ পিটিএ-র। যদিও এই অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ খোলেনি ভারত।