দীর্ঘ দিন ধরে জেলবন্দি রয়েছেন বিশ্নোই। গুজরাতের সাবরমতি জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। তার আগে দীর্ঘ সময় তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে জেল থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লরেন্স? কী ভাবেই বা বিদেশের মাটিতে বসে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ফোন করে টাকা চাইছেন তাঁর দলের সদস্যেরা?
কিন্তু কী এই ডাব্বা কলিং? প্রতিবেদন অনুযায়ী, লরেন্সের মতো গ্যাংস্টারেরা প্রথমে ঠিক করে যে কোন বিত্তশালীর থেকে টাকা চাওয়া হবে। এর পর টাকা তুলতে দেশে থাকা তাদের দালালদের কাজে লাগায় ওই অপরাধীরা। গ্যাংস্টারের স্থানীয় সহযোগীরা প্রথমে মোবাইলের ইন্টারনেট ব্যবহার করে ‘টার্গেট’কে ফোন করেন। এর পর অন্য একটি মোবাইল থেকে ফোন করা হয় বিদেশে বা জেলে বসে থাকা বস্কে।
তদন্তকারীরা যখন অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামেন তখনই পুরো বিষয়টি নিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের। যে হেতু গ্যাংস্টারের মোবাইল থেকে সরাসরি ফোন আসে না, তাই তদন্তকারীদের হাতেও প্রমাণ থাকে না। তদন্তকারীদের এ ভাবে সমস্যায় ফেলে ঘটিয়ে ফেলা অপরাধের নামই ‘ডাব্বা কলিং’। দু’টি আলাদা মোবাইল ব্যবহার করে বিশেষ পদ্ধতিতে এই হুমকি ফোনগুলি করা হয় বলেই এ রকম নাম।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যখন এই হুমকি ফোনগুলি করা হয় তখন গ্যাংস্টার এবং তার সহযোগীরা আলাদা আলাদা জায়গায় থাকেন। ‘টার্গেট’ এবং গ্যাংস্টারের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করেন সহযোগীরা। বিভিন্ন দেশ থেকে ‘ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি)’, অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ওই ফোন করে টাকা চায় কুখ্যাত অপরাধীরা।
তদন্তকারীরা যখন গ্যাংস্টারের অবস্থান জানতে সংশ্লিষ্ট অ্যাপ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাপের তরফে গ্রাহকের নিরাপত্তার কারণে সেই তথ্য দেওয়া হয় না। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে কখনও পুলিশ যদি অভিযুক্ত গ্যাংস্টারের ডেরার খোঁজ পেয়েও যায়, তা হলেও তত দিনে ওই গ্যাংস্টার অন্য কোথাও পালিয়ে গিয়েছেন। যদি কোনও ভারতীয় আইপি ব্যবহার করে ফোন করাও হয়, তা হলে পরে জানা যায় যে, সিমটি জাল নথি দিয়ে কেনা হয়েছে।
২০১৮ সালে সম্পথ নেহরা নামের এক সুপারি কিলারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ব্যক্তি সলমনকে খুনের জন্য তাঁর বাড়ি রেকি করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিশ্নোইয়ের নির্দেশেই নেহরা ওখানে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তদন্তকারীরা। ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল সলমনের বান্দ্রার বাড়ির সামনে বাইকে করে এসে গুলি চালায় দুই দুষ্কৃতী। তবে তাতে অবশ্য অভিনেতার কোনও ক্ষতি হয়নি। ওই ঘটনার সঙ্গেও বিশ্নোই গ্যাং জড়িত ছিল বলে সন্দেহ পুলিশের।
এই ঘটনায় বিশ্নোই সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত লাগে। কারণ কৃষ্ণসার হরিণকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করেন তাঁরা। ২০১৮ সালে গ্রেফতারির পর আদালতে দাঁড়িয়ে লরেন্স বিশ্নোই হুমকির সুরে বলেছিলেন, ‘‘জোধপুরে আমরা সলমন খানকে হত্যা করব। আমরা ব্যবস্থা নিলেই সবাই জানতে পারবে। আমি এখনও পর্যন্ত কিছুই করিনি। ওরা বিনা কারণে আমার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ এনেছে।’’
উল্লেখ্য, গ্যাংস্টার বিশ্নোই এবং গোল্ডি ব্রারের যুগলবন্দিকে ইতিমধ্যেই ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণের মাস্টারমাইন্ড দাউদ ইব্রাহিম কাসকরের তৈরি ‘ডি কোম্পানি’-র সঙ্গে তুলনা করেছেন এনআইএর গোয়েন্দারা। গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে যাঁদের নামে কাঁপত গোটা মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রের ফিল্মি দুনিয়া থেকে নামী শিল্পপতিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy