All needs to know about current political turmoil of Indonesia dgtl
Indonesian Political Turmoil
ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া দ্বীপরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বদলে ফেললেন জোড়া আইন! পথে নামল বিক্ষুব্ধ জনতা
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের পদে জোকো বসেন ২০১৪ সালে। সে দেশের সংবিধান অনুযায়ী কোনও রাষ্ট্রনেতা ১০ বছরের বেশি প্রেসিডেন্টের পদে থাকতে পারেন না। তাই নিয়ম অনুযায়ী, জোকোকে এ বার গদি ছাড়তেই হবে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৪ ১০:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
গত কয়েক দিন ধরেই আগুন জ্বলছে ইন্দোনেশিয়ায়। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমেছেন সে দেশের হাজারো মানুষ। জোকো ইউদোদো, যাঁকে বিশ্ব চেনে ‘জোট সরকারের গুরু’ হিসাবে, তিনি কিন্তু নিরুত্তাপ।
০২১৮
কিন্তু কেন হঠাৎ এ রকম ভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ইন্দোনেশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি?
০৩১৮
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের পদে জোকো বসেন ২০১৪ সালে। সে দেশের সংবিধান অনুযায়ী কোনও রাষ্ট্রনেতা ১০ বছরের বেশি প্রেসিডেন্টের পদে থাকতে পারেন না। তাই নিয়ম অনুযায়ী, জোকোকে এ বার গদি ছাড়তেই হবে।
০৪১৮
কিন্তু অভিযোগ, কিছুতেই নাকি গদি ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না জোকো। গদি বাঁচাতে আইনি আটঘাট বাঁধতেও তৈরি হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তাঁর দলই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।
০৫১৮
এর পর শেষমেশ পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সেনাকর্তা প্রবোও সুবিয়ান্টোর নাম মনোনীত করেন জোকো। গত ফেব্রুয়ারির ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হন প্রবোও। অক্টোবরে জোকো পদ ছাড়ার পরেই তিনি বসবেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের পদে।
০৬১৮
অভিযোগ, নিজে আর প্রেসিডেন্টের পদে থাকতে না পারলেও দুই পুত্রই যাতে দেশের রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকেন তার জন্য ঘুঁটি সাজিয়েছেন জোকো।
০৭১৮
জোকোর কনিষ্ঠ পুত্র কাইসাং পাঙ্গরেপ ইন্দোনেশিয়ার এক জন জনপ্রিয় ভ্লগার। জোকো চান জাকার্তার গভর্নরের পদে বসুন ২৯ বছরের পাঙ্গরেপ। কিন্তু সে দেশের আইন এত দিন বলত ৩০ বছর বয়স না হলে গভর্নরের আসনে বসা যায় না।
০৮১৮
অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে জোকো এমন আইন এনেছেন যা বলছে গর্ভনর পদপ্রার্থী কেউ ৩০-এর কম বয়সেও মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। তবে শপথগ্রহণের সময়ে তাঁর বয়স ৩০ হতেই হবে।
০৯১৮
ফলত, বয়সের নিরিখে অনায়াসেই গর্ভনর পদের জন্য যোগ্য বলে প্রমাণিত হয়েছেন পাঙ্গরেপ। হিসাব কষে দেখা গিয়েছে, নভেম্বরে ভোটের সময় ৩০ বছর না হলেও পাঙ্গরেপ যদি জাকার্তার গভর্নর হন, তা হলে শপথগ্রহণের সময় তাঁর বয়স ৩০ বছর হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই জাকার্তার গর্ভনর হওয়ার জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন পাঙ্গরেপ।
ইন্দোনেশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট হতে ন্যূনতম ৪০ বছর বয়স হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু জিবরানের বয়স বর্তমানে ৩৬। অভিযোগ, বড় ছেলের বয়সের বাধা কাটাতে সে দেশের শীর্ষ আদালত থেকে অর্ডার পাশ করিয়েছেন জোকো। যাঁর ফলে অনায়াসে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে লড়েছেন জিবরান।
১২১৮
ইন্দোনেশিয়ার সুপ্রিম কোর্টের যে বিচারপতি এই রায় দিয়েছেন, তিনি আবার সম্পর্কে জোকোর শ্যালক। জিবরানের বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতি একাধিক অভিযোগ। সেই ছেলেকেই ভাইস প্রেসিডেন্টর পদে বসাচ্ছেন জোকো।
১৩১৮
গত ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রচুর ভোটে জিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়া পাকা করে ফেলেছেন জিবরান। পদে বসা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
১৪১৮
অভিযোগ উঠেছে, ইন্দোনেশিয়ায় নিজের প্রভাব ধরে রাখতে চালাকি করে প্রবোহকে প্রেসিডেন্ট এবং পুত্রকে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদে বসাচ্ছেন জোকো।
১৫১৮
তবে এ নিয়ে নিজের সরকারেরই বিরোধিতা করে বসেছেন জোকো। জোকোর পরে সরকারের ক্ষমতায় আসা নিয়ে আশাবাদী ছিলেন তাঁরই দল পিডিপি-আই নেত্রী তথা প্রাক্তন প্রেসিডন্ট সুকর্ণের কন্যা মেঘাবতী সুকর্ণপুত্রী।
১৬১৮
কিন্তু বুদ্ধি দিয়ে মাত করেছেন জোকো। কাছের লোকেদেরই সরকারে রাখার ব্যবস্থা প্রায় পাকা করে ফেলেছেন।
১৭১৮
ইন্দোনেশিয়ার রাজনীতিতে জোকোর রাজনৈতিক বুদ্ধি এবং প্রভাব পরিচিত ‘জোকোই ইফেক্ট’ নামে। ২০২৪ সালের ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বন্ধু প্রবোহ এবং পুত্র জিবরানের জয়ের নেপথ্যেও তা রয়েছে বলেই কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
১৮১৮
তবে দেশের বাসিন্দাদের একাংশ আবার জোকোর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ এবং কর্তৃত্ববাদের অভিযোগ তুলে রাস্তায় নেমেছেন। আর তার জেরেই অশান্ত ইন্দোনেশিয়া। যদিও জোকোর বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদের নেপথ্যে মেঘাবতী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠেরা রয়েছেন বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।