All need to know about Mysterious signal generated from Dickson Fjord that was heard across the planet dgtl
Mysterious signal
টানা ন’দিন ধরে কেঁপেছিল সুমেরু থেকে কুমেরু, ধরা পড়ে বিশেষ তরঙ্গ! নেপথ্যে লুকিয়ে কোন রহস্য
প্রথমে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা প্রাথমিক ভাবে এটিকে ‘ইউএসও (আনআইডেন্টিফায়েড সিসমিক অবজেক্ট)’ বা ভূমিকম্প ঘটাতে পারে এমন এক অজ্ঞাত বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর। টানা ন’দিন ধরে গ্রহ জুড়ে শোনা গিয়েছিল এক রহস্যময় সঙ্কেত। যা অবাক করেছিল তাবড় বিজ্ঞানীদেরও।
০২১৬
বিশ্ব জুড়ে ভূমিকম্পের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণকারী বিজ্ঞানীদের যন্ত্রে ওই রহস্যময় সঙ্কেতটি ধরা পড়েছিল। সুমেরু থেকে শুরু করে কুমেরু পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল সেই সঙ্কেত।
০৩১৬
তবে বিজ্ঞানীরা চমকে গিয়েছিলেন, কারণ পৃথিবীর ইতিহাসে এমন সঙ্কেত এর আগে আর কখনও শোনা যায়নি।
০৪১৬
বিজ্ঞানীরা দেখেন, ওই সঙ্কেতের চরিত্র স্বাভাবিক ভূমিকম্পনের চরিত্রের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। টানা ন’দিন ধরে একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কে শোনা গিয়েছিল সেই নিরবিচ্ছিন্ন সঙ্কেত।
০৫১৬
প্রথমে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা প্রাথমিক ভাবে এটিকে ‘ইউএসও (আনআইডেন্টিফায়েড সিসমিক অবজেক্ট)’ বা ভূমিকম্প ঘটাতে পারে এমন এক অজ্ঞাত বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করেন।
০৬১৬
অবশেষে ওই সঙ্কেতের উৎসের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। দেখা যায়, গ্রিনল্যান্ডের ডিকসন ফিয়র্ডে একটি বিশাল ভূমিধসের কারণে উৎপন্ন হয়েছে ওই সঙ্কেত। উল্লেখ্য, ফিয়র্ড হল একটি দীর্ঘ, সরু এবং গভীর জলরাশি, যার উভয় দিকে খাড়া পাহাড় থাকে।
০৭১৬
বিজ্ঞানীরা দেখেন, ডিকসন ফিয়র্ডে হিমবাহ গলে ধসে পড়েছে প্রচুর পরিমাণ পাথর এবং বরফের চাঁই, যা অলিম্পিক্সের ১০ হাজার সুইমিং পুল ভরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
০৮১৬
ডিকসন ফিয়র্ডের ওই ধসে ২০০ মিটার উঁচু তরঙ্গযুক্ত একটি সুনামির সৃষ্টি করেছিল। যার ঢেউ উঠেছিল লন্ডনের বিগ বেনের চেয়ে দ্বিগুণ উচ্চতায়।
০৯১৬
বিজ্ঞানীরা এ-ও পর্যবেক্ষণ করেন, ভূমিধসের ফলে ডিকসন ফিয়র্ডের আংশিক আবদ্ধ জলে একটি স্থায়ী তরঙ্গের সৃষ্টি হয়েছিল যা টানা ন’দিন ধরে জলরাশির সামনে এবং পিছনে ঢেউয়ের সৃষ্টি করেছিল।
১০১৬
কিন্তু কেন এমনটা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রথমে ধন্দে পড়েন বিজ্ঞানীরা। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে হিমবাহ পাতলা হয়ে ওই শক্তিশালী ভূমিধস হয়েছিল। কাঁপিয়ে দিয়েছিল উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু।
১১১৬
এক নতুন গবেষণায় অনুসন্ধানকারী বিজ্ঞানীদের দল জানিয়েছেন, ভূমিধসের কারণেই ডিকসন ফিয়র্ডের স্থায়ী তরঙ্গ ওই রহস্যময় সঙ্কেতের জন্ম দেয়।
১২১৬
ওই গবেষণাপত্রে লেখা, ‘‘আমাদের পরীক্ষায় উঠে এসেছে যে জলবায়ু পরিবর্তন কী ভাবে ক্রায়োস্ফিয়ার, হাইড্রোস্ফিয়ার এবং লিথোস্ফিয়ারের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে।’’
১৩১৬
উল্লেখ্য, এর আগে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, বিগত কয়েক দশক ধরে ডিকসন ফিয়র্ডের হিমবাহ ১০ মিটার পর্যন্ত পাতলা হয়ে গিয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে পর্বতের গা থেকে বরফ এবং পাথরের চাঁই খসে প়ড়ার পর সেগুলি কম্পন সৃষ্টি করে এবং ভূমিকম্পের তরঙ্গ বিশ্বব্যাপী অনুভূত হয়েছিল।
১৪১৬
এই ঘটনাকে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান কুপ্রভাব বলেও উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
১৫১৬
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, উষ্ণায়নের কারণে হিমবাহ পাতলা হয়ে যাওয়া এবং তা ধসে পড়ার কারণে মেরু অঞ্চলে ভূমিধস এবং সুনামি হওয়ার ঘটনা আরও সাধারণ হয়ে উঠতে পারে।
১৬১৬
ডিকসন ফিয়র্ডের ভূমিধস এ-ও প্রমাণ করেছে, কী ভাবে জলবায়ু পরিবর্তন হয় এবং সমুদ্রের স্তরকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি পৃথিবীর ভূত্বকের স্থিতিশীলতাকেও প্রভাবিত করছে।