All need to know about Israel attack on Lebanon dgtl
Israel
সদ্যনির্বাচিত হামাস প্রধানকেও মেরে ফেলল ইজ়রায়েল! গাজ়া থেকে মুখ ঘোরাতেই কি হামলা লেবাননে?
বিগত ১৮ বছরের মধ্যে এটিই লেবাননের উপর সবচেয়ে বড় হামলা বলে মনে করছেন সমর বিশেষজ্ঞেরা। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ দক্ষিণ লেবানন ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:০১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
লেবাননের দক্ষিণে সোমবার সকাল থেকে লাগাতার বোমা ফেলছে ইজ়রায়েল। কেঁপে উঠছে জনপদ। ভেঙে গুঁড়ো হচ্ছে ঘরবাড়ি। ইজ়রায়েলের সোমবারের হামলায় লেবাননে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫০০ জনের। আহত হয়েছেন হাজারখানেক। নিহতদের মধ্যে রয়েছে শিশু এবং মহিলাও।
০২১৯
লেবাননে বহু এলাকায় বোমা ফেলেছে ইজ়রায়েল। তার আগে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, লেবাননের যে সব বাড়িতে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লা জঙ্গিরা অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে, সেখান থেকে যেন বেরিয়ে আসেন সাধারণ মানুষ। এর পর সোমবার বায়ুপথে হামলা চালানো হয় ইজ়রায়েলের তরফ থেকে।
০৩১৯
বিগত ১৮ বছরের মধ্যে এটিই লেবাননের উপর সবচেয়ে বড় হামলা বলে মনে করছেন সমর বিশেষজ্ঞেরা। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ দক্ষিণ লেবানন ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
০৪১৯
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র বাহিনী হামাসের মধ্যে সংঘাত শুরুর পর সেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাও।
০৫১৯
হামাসের পাশে এসে দাঁড়ানোর পর গত ১১ মাস ধরে হিজবুল্লার সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে ইজ়রায়েলের। ফল ভুগছেন সাধারণ মানুষ। গত কয়েক মাস ধরে এই সংঘর্ষ চলাকালীন একে অপরকে লাগাতার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে লেবানন এবং ইজ়রায়েল।
০৬১৯
হিজবুল্লার হুঁশিয়ারি, যে ভাবে ইজ়রায়েল তাদের উপর হামলা চালাচ্ছে, তার পরিণতি ভুগতে হবে। ইজ়রায়েলের দাবি, হিজবুল্লাকে তারা নির্মূল করবেই। নতুন করে দু’পক্ষের সংঘর্ষের জেরে ইজ়রায়েল-লেবানন সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
০৭১৯
কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে, গাজ়া এবং হামাসের দিক থেকে নজর ফিরিয়ে হঠাৎ কেন লেবানন এবং হিজবুল্লার দিকে নজর ঘোরাল ইজ়রায়েল? তা হলে কি হামাসের দিকে বিশেষ কোনও সাফল্য এসেছে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারের?
০৮১৯
এই পরিস্থিতিতেই জল্পনা তৈরি হয়েছে যে, গাজ়া শহরের একটি স্কুলে রকেট হামলার পর মৃত্যু হয়েছে হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের। বিষয়টি নিশ্চিত করতে তদন্তও শুরু হয়েছে।
০৯১৯
ইজ়রায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলাটি হামাসের একটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে করা হয়েছিল। তাতে ২২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সিনওয়ার ছিলেন বলেও জল্পনা তৈরি হয়েছে।
১০১৯
গত ৩১ জুলাই ইরানের রাজধানী তেহরানে খুন হন স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাসের সর্বেসর্বা ইসমাইল হানিয়া।
১১১৯
দাবি ওঠে, হানিয়াকে খুন করা হয়েছে রিমোট কন্ট্রোল বোমার সাহায্যে। তাঁকে খুন করতে নাকি দু’মাস আগে ইরানের রাজধানী তেহরানের সেই গেস্ট হাউসে দূরনিয়ন্ত্রক বোমা বসিয়েছিল ইজ়রায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ।
১২১৯
হানিয়ার পদে বসানো হয় সিনওয়ারকে। পদে বসার দু’মাসের মধ্যে তাঁরও মৃত্যু হয়েছে বলে জল্পনা। ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক কর্তাকে উদ্ধৃত করে ‘টাইমস অফ ইজ়রায়েল’-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “সিনওয়ার আর বেঁচে নেই এমন সম্ভাবনা নিয়ে তদন্ত করছে ইজ়রায়েল। যদিও এর কোনও পোক্ত প্রমাণ আমাদের হাতে আসেনি।’’
১৩১৯
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিনওয়ার মারা গিয়েছেন কি না, তা নিয়ে ইজ়রায়েলের তরফে এত পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালানোটাই স্বাভাবিক। কারণ, ভোল বদলে গা-ঢাকা দেওয়ায় নাকি সিনওয়ারের জুড়ি মেলা ভার। এর আগেও তাঁর মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল। তাই যত ক্ষণ না পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, তত ক্ষণ সিনওয়ারের মৃত্যু হয়েছে বলে বিশ্বাস করতে রাজি নয় ইজ়রায়েল।
১৪১৯
সিনওয়ারের জন্ম ১৯৬২ সালে। ৬১ বছরের নেতা গাজ়ার খান ইউনিসের একটি শরণার্থী শিবিরে জন্ম নেন। ১৯৮৭ সালে হামাসে যোগ দেন তিনি। হামাসের একেবারে গোড়ার দিকের সদস্যদের মধ্যে একজন ছিলেন সিনওয়ার।
১৫১৯
আশির দশকের শেষের দিকে ইজ়রায়েল হাতে বন্দি হন সিনওয়ার। পরে বেরিয়ে যান। ২০০৮ সালে তিনি মস্তিষ্কের ক্যানসার থেকে সেরে ওঠেন।
১৬১৯
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অগস্ট ইজ়রায়েলে হামাসের হামলার নেপথ্যে সিনওয়ারেরই মাথা ছিল বলে মনে করা হয়। হানিয়ার মৃত্যুর পর হামাসের প্রধান হন তিনি। তাই অনেক দিন ধরেই সিনওয়ারকে নিকেশের ছক কষছিল ইজ়রায়েল।
১৭১৯
এর পর সম্প্রতি গাজ়ার একটি স্কুলে ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর সিনওয়ারের মৃত্যুর জল্পনা তৈরি হয়েছে। সিনওয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি যেমন ইজ়রায়েল নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে, তেমনই লেবাননের দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছে ইজ়রায়েল।
১৮১৯
বিশেষজ্ঞদের মতে, হামাস এবং হিজবুল্লা— একই সঙ্গে শত্রু দুই গোষ্ঠীকেই ঠান্ডা করে দিতে চাইছে ইজ়রায়েল। আর তার জন্য এই সময়কেই আদর্শ বলে ধরে নিয়েছে নেতানিয়াহুর দেশ।
১৯১৯
আর সেই কারণেই ইজ়রায়েল সোমবার থেকে লেবাননে হামলা শুরু করেছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।