All need to know about Almon Brown Strowger and how he invented Strowger switch to revolutionized telephone technology dgtl
Almon Brown Strowger
স্ত্রীর সাহায্যে ব্যবসার ক্ষতি করেন প্রতিদ্বন্দ্বী, রেগে যন্ত্র বানিয়ে টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব আনেন ‘ডোম’
পেশায় অ্যালমন ছিলেন এক জন বিদেশি ডোম। আমেরিকার পেনিফিল্ডে ১৮৩৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্ম। তবে বাংলায় ডোম বলতে মানুষ যা বোঝেন, অ্যালমনের কাজ ঠিক তেমনটা ছিল না।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
প্রয়োজন থেকে মানুষ কত কিছু না করে থাকে। এমনকি, অনেক কিছু আবিষ্কারও করে ফেলে। যেমনটা করেছিলেন অ্যালমন ব্রাউন স্ট্রোগার।
০২১৮
মানসিক শক্তির উদাহরণ দিতে গিয়ে অনেকেই এখনও আমেরিকার ওই আবিষ্কারক তথা ডোমের কথা উল্লেখ করেন। কারণ, রুজিরুটি বাঁচাতে টেলিজগতে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন তিনি।
০৩১৮
পেশায় অ্যালমন ছিলেন এক জন ডোম। আমেরিকার পেনিফিল্ডে ১৮৩৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্ম। তবে বাংলায় ডোম বলতে মানুষ যা বোঝেন, অ্যালমনের কাজ ঠিক তেমনটা ছিল না।
০৪১৮
বিদেশে ডোমেরা মূলত পরিচিত ‘আন্ডারটেকার’ নামে। ‘আন্ডারটেকার’ বলতে বোঝায় এমন এক জন ব্যক্তি যিনি মৃতদেহ সৎকার থেকে শেষকৃত্য— সব কিছুরই ব্যবস্থা করেন। আক্ষরিক অর্থে মৃতদেহ নিয়েই তাঁদের কারবার।
০৫১৮
১৯ শতকের শেষের দিকে আমেরিকার কানসাস শহরে ‘আন্ডারটেকার’ হিসাবে নাম কুড়িয়েছিলেন অ্যালমন। ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাসকারী সেই শহরে ‘আন্ডারটেকার’ ছিলেন মাত্র দু’জন।
০৬১৮
তাঁদের মধ্যে আবার অ্যালমনের খ্যাতি ছিল বেশি। ফলে সহজেই শহরের বুকে রমরমিয়ে ব্যবসা চালাতেন তিনি।
০৭১৮
কিন্তু অ্যালমনের সেই জমানো ব্যবসায় বাদ সাধেন শহরের দ্বিতীয় আন্ডারটেকার। যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে শহরের টেলিফোন এক্সচেঞ্জে তাঁর স্ত্রীর কাজ জুটিয়ে দেন তিনি।
০৮১৮
সেই সময় টেলিফোন সংযোগ অত উন্নত ছিল না। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে হলে ভরসা করতে হত টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসের উপর। আর তারই সুযোগ নিতে শুরু করেন শহরের দ্বিতীয় ‘আন্ডারটেকার’ এবং তাঁর স্ত্রী।
০৯১৮
শহরের কোনও বাসিন্দা যখনই টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসে ফোন করে অ্যালমনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইতেন, তখনই দ্বিতীয় আন্ডারটেকারের স্ত্রী অ্যালমনের বদলে নিজের স্বামীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করাতেন।
১০১৮
ফলে অ্যালমনের ব্যবসায় মারাত্মক প্রভাব পড়ে। অন্য দিকে, দ্বিতীয় ব্যবসায়ীর ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠতে শুরু করে।
১১১৮
তবে কেন তাঁর ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে, তা বুঝতে বেশি দেরি হয়নি অ্যালমনের। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, নিজেই সমস্যার সমাধান করবেন।
১২১৮
এর পরেই টেলিফোন নিয়ে গবেষণা শুরু করে দেন অ্যালমন। হ্যাট পিন এবং তড়িচ্চুম্বক ব্যবহার করে একটি স্বয়ংক্রিয় ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ প্রযুক্তি আবিষ্কার করে ফেলেন তিনি। নিজের পদবি দিয়ে আবিষ্কারের নাম রাখেন ‘স্ট্রগার সুইচ’।
১৩১৮
১৮৯১ সালে ‘স্ট্রগার সুইচ’-এর পেটেন্ট করান অ্যালমন। পরের বছর ইন্ডিয়ানার লা পোর্তেতে এটি আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্যবহার শুরু হয়।
১৪১৮
সেই প্রযুক্তি এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছিল যে, টেলিফোনে থাকা মৌলিক নকশার সাহায্যে একটি টেলিফোন থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ৯৯ জন গ্রাহককে ফোন করা যাবে। ওই ৯৯ জনকে ফোন করতে টেলিফোন এক্সচেঞ্জের উপর ভরসা করতে হবে না।
১৫১৮
তবে ওই আবিষ্কার করেই থেমে থাকেননি অ্যালমন। প্রক্রিয়াটিকে সহজতর করার জন্য টেলিফোনের ‘রোটারি ডায়াল’ বা বৃত্তাকার ডায়ালেরও আবিষ্কার করেন তিনি। এর ফলে গ্রাহকেরা ডায়ালটিকে নির্দিষ্ট দূরত্বে ঘুরিয়ে সহজেই একটি ফোন নম্বর নির্বাচন করতে পারতেন।
১৬১৮
টেলিফোন এক্সচেঞ্জের উপর গ্রাহকদের নির্ভরতা আরও খানিকটা কমে। প্রতারণার আশঙ্কাও কমে। কারণ, অ্যালমনের নতুন সেই আবিষ্কারের ফলে গ্রাহকেরা সহজেই যে কোনও ব্যক্তিকে সরাসরি ফোন করতে পারতেন।
১৭১৮
এর পরে অ্যালমনের ব্যবসার আবার শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। আবিষ্কার নিয়ে অ্যালমনের গর্বও কম ছিল না। বড়াই করে নিজের আবিষ্কারের কথা বলে বেড়াতেন তিনি।
১৮১৮
১৯০২ সালে ফ্লোরিডার সেন্ট পিটারস্বার্গে মারা যান অ্যালমন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩। ওয়াশিংটনের বেলিংহামের ‘স্পার্ক মিউজ়িয়াম অফ ইলেকট্রিক্যাল ইনভেনশন’-এ ঘুরতে গেলে এখনও অ্যালমনের আবিষ্কার করা প্রথম দিকের ১১ সংখ্যার ডায়াল ফোন দেখতে পাওয়া যাবে।