All about the Dharavi Slum area of Mumbai that will be redeveloped by Adani group dgtl
Dharavi
একাধিক দেশের চেয়ে বেশি আয়! দেশের ‘শিক্ষিততম’ বস্তি ধারাভিতে প্রতি দেড় হাজার জনে একটি শৌচাগার
ধারাভি বস্তির উন্নয়নের বরাত পেয়েছে আদানি গোষ্ঠী। এশিয়ার বৃহত্তম এই বস্তি এলাকায় প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের বাস। ৫ হাজার ৬৯ কোটি টাকায় এই প্রকল্পের বরাত জিতে নিয়েছেন আদানিরা।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তির উন্নয়নের বরাত পেয়েছে গৌতম আদানির সংস্থা। ৫ হাজার ৬৯ কোটি টাকায় এই প্রকল্পের বরাত জিতে নিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। প্রকল্পের কাজ শুরুর তোড়জোড় চলছে।
ছবি: সংগৃহীত।
০২২১
ধারাভি বস্তির উন্নয়নের জন্য সম্প্রতি টেন্ডার ডেকেছিল মহারাষ্ট্র সরকার। মোট ৩টি সংস্থা তাতে আগ্রহ প্রকাশ করে। আদানি গোষ্ঠী ছাড়াও ছিল ডিএলএফ এবং নমন গ্রুপ।
ছবি: সংগৃহীত।
০৩২১
প্রযুক্তিগত কারণে নমন গ্রুপ পিছু হঠতে বাধ্য হয়। আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে ডিএলএফের লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন গৌতম। তাঁর সংস্থা ৫ হাজার ৬৯ কোটি টাকায় বরাত জিতে নিয়েছে। ডিএলএফ ধারাভির জন্য ২ হাজার ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করতে রাজি ছিল।
ছবি: সংগৃহীত।
০৪২১
গত ১৫ বছর ধরে ধারাভির উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে। এই ১৫ বছরে অন্তত ৪ বার মহারাষ্ট্র সরকার ধারাভি বস্তির উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার ডেকেছে। কিন্তু নানা কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। বার বার ধাক্কা খেয়েছে ধারাভির উন্নয়ন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৫২১
আদানিদের হাত ধরে সেই উন্নয়ন শুরু হবে বলে আশাবাদী অনেকে। মঙ্গলবার আদানি গোষ্ঠী প্রকল্পের বরাত পাওয়ার পর ধারাভি উন্নয়ন প্রকল্পের সিইও এসভিআর শ্রীনিবাস বলেন, ‘‘আমরা এ বার রাজ্য সরকারের অনুমোদন নিয়ে ধারাভির জন্য একটি স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসপিএস) গঠন করব।’’
ছবি: সংগৃহীত।
০৬২১
এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি এই ধারাভি। এমনকি একে পৃথিবীর বৃহত্তম বস্তিগুলির মধ্যে অন্যতম হিসাবে গণ্য করা হয়। এই বস্তিতে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের বাস।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭২১
মধ্য মুম্বইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ধারাভি বস্তি। মোট ৫২০ একর জমি ধারাভির আওতায় রয়েছে। এই বস্তির জনঘনত্বও বিপুল।
ছবি: সংগৃহীত।
০৮২১
১৮৮৪ সালে ব্রিটিশ শাসনকালে মুম্বইয়ে ধারাভি বস্তি গড়ে ওঠে। মূলত নগরকেন্দ্রিক শিল্প, কর্মসংস্থানের বাড়বাড়ন্তে গ্রাম ছেড়ে দলে দলে শহরে এসে পড়েছিলেন মানুষ। মুম্বইয়ে কাজ খুঁজতে এসে ধারাভি বস্তি এলাকায় আশ্রয় পান তাঁরা। সেখান থেকেই এই বস্তির পত্তন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯২১
ধারাভিতে বহু ভাষা, ধর্ম এবং জাতির মানুষের বাস। বস্তির বাসিন্দাদের অধিকাংশ বিভিন্ন কারখানায় কাজ করেন। এই বস্তির একটি অঘোষিত অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি রয়েছে। তারই শরিক সকলে। মূলত চামড়া, বস্ত্র এবং মৃৎশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ধারাভিবাসী। বস্তির মধ্যেই মাটির জিনিস তৈরির কাজ হয়। চামড়া এবং বস্ত্রশিল্পের মাধ্যমে দ্রব্য উৎপাদনের কাজও চলে ধারাভিতে। এখানে উৎপাদিত দ্রব্য দেশে-বিদেশে বিক্রি হয়।
ছবি: সংগৃহীত।
১০২১
বস্তি হলেও ধারাভির অর্থনীতি টেক্কা দেয় একাধিক ছোটখাটো দেশকেও। টোঙ্গো, কিরিবাতি কিংবা টুভালু দেশের চেয়ে বেশি এই ধারাভির অর্থনীতি। যার মূল্য প্রায় ৬৫ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৫ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা)।
ছবি: সংগৃহীত।
১১২১
এই বস্তি এলাকায় প্রতি ১৪৫০ জনের জন্য বরাদ্দ একটি করে শৌচাগার। ধারাভি বস্তির অন্দরমহল অপরিচ্ছন্ন, অস্বাস্থ্যকর। নানা সময়ে নানা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে এই ধারাভিতে। ১৮৯৬-এর প্লেগ থেকে শুরু করে ২০২০-র করোনা, বার বার বিপর্যস্ত হয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি। ৯৬-এর প্লেগে ধারাভি-সহ গোটা মুম্বইয়ের অর্ধেক মানুষ মারা গিয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়।
ছবি: সংগৃহীত।
১২২১
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় যে কোনও মহামারিতেই ধারাভি তুলনামূলক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সংক্রামক ব্যধিতে এখানে রোগীর ছোঁয়া বাঁচিয়ে চলা কঠিন। প্রশাসনের তরফে বস্তির পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করতে দেখা যায় না বলেও অভিযোগ করেন কেউ কেউ।
ছবি: সংগৃহীত।
১৩২১
করাচির ওরাঙ্গি বস্তির সঙ্গে মুম্বইয়ের ধারাভির তুলনা করেন অনেকে। ওরাঙ্গির জনসংখ্যা ধারাভির প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু করাচির ওই বস্তি আকারেও ধারাভির চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ ছোট। ওরাঙ্গির বিস্তৃতি মাত্র ৬০ বর্গকিলোমিটার।
ছবি: সংগৃহীত।
১৪২১
অষ্টাদশ শতকে ধারাভির এত বিস্তৃতি ছিল না। এক সময় সমুদ্রঘেঁষা এই বস্তি এলাকায় ছিল ঘন ম্যানগ্রোভ জঙ্গল। ধারাভি ছিল ছোট্ট কোলিওয়াড়া গ্রাম। সেখানে মূলত জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করতেন।
ছবি: সংগৃহীত।
১৫২১
ব্রিটিশ আমলে ধারাভি বড় হতে শুরু করে। গ্রাম থেকে দলে দলে লোক এই এলাকায় কাজের সন্ধানে চলে আসেন। ম্যানগ্রোভের জঙ্গল বদলে যায় ঘনবসতিপূর্ণ বস্তিতে। তার পর ক্রমে আজকের রূপ পেয়েছে ধারাভি বস্তি।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬২১
মুম্বইয়ের মূল দুই রেললাইন পশ্চিম এবং মধ্য রেলওয়ের মাঝে অবস্থিত ধারাভি বস্তি। মুম্বই বিমানবন্দর থেকেও এর দূরত্ব খুব বেশি নয়। এমনকি বাণিজ্যনগরীর সবচেয়ে আলোচিত, বর্ণময় বান্দ্রা অঞ্চলও রয়েছে ধারাভি থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে।
ছবি: সংগৃহীত।
১৭২১
ধারাভির কাছেই রয়েছে মিঠি নদী। অবস্থানের কারণেই ধারাভির নিকাশি ব্যবস্থা বেশ দুর্বল। তাই ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার সময় এই বস্তি এলাকায় চরম দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় বাসিন্দাদের।
ছবি: সংগৃহীত।
১৮২১
ধারাভি বস্তিতে অধিকাংশ বাড়ি ছোট ছোট। একে অপরের গায়ে ঘেঁষে মাথা তুলেছে বাড়িগুলি। ফলে রাস্তাঘাটও বেশ সরু। ঘিঞ্জি এলাকায় ঘেঁষাঘেঁষি করে কোনও রকমে মাথা গুঁজে থাকেন বাসিন্দারা।
ছবি: সংগৃহীত।
১৯২১
অথচ এই বস্তি এলাকায় যাঁরা থাকেন, তাঁরা বেশ শিক্ষিত। ধারাভির সাক্ষরতার হার ৬৯ শতাংশ। যা ভারতের অন্য অনেক বস্তির চেয়ে বেশি। যে কারণে ধারাভিকে দেশের শিক্ষিততম বস্তি বলেও মনে করেন কেউ কেউ।
ছবি: সংগৃহীত।
২০২১
বি-টাউনের গা ঘেঁষা এই বস্তি এলাকায় রুপোলি পর্দার আলো এসে পড়েছে বার বার। বলিউডের একাধিক ছবির শুটিং হয়েছে ধারাভিতে। ২০০৮ সালের জনপ্রিয় এবং পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি ‘স্লামডগ মিলিওনিয়ার’-এ এই বস্তির ছবিই তুলে ধরা হয়েছিল। এ ছাড়া, ‘দিওয়ার’ (১৯৭৫), ‘সালাম বম্বে’ (১৯৮৮), ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ (২০০৪)-র মতো একাধিক ছবিতে এই বস্তি দেখা গিয়েছে। ২০১৯ সালে রণবীর সিংহ অভিনীত ‘গাল্লি বয়’ ছবির শুটিংও হয় এই ধারাভিতেই।
ছবি: সংগৃহীত।
২১২১
রুপোলি আলোর আড়ালে ধারাভি কিন্তু থেকে গিয়েছে অন্ধকারেই। ধারাভির নোংরা বস্তির এঁদোগলিতে বাসা বেঁধে আছে অজস্র রোগজীবাণু আর অপরাধের আঁধার। দেশের ধনীতম শিল্পপতি গৌতম আদানির হাত ধরে রূপবদলের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ধারাভি।