All about China’s monster ship, world’s largest coastguard vessel dgtl
China Monster Ship
ভয় দেখাচ্ছে ‘মনস্টার’! দক্ষিণ চিন সাগরে বিশ্বের বৃহত্তম উপকূলরক্ষা জাহাজ নামিয়ে যুদ্ধ চাইছে বেজিং?
ফিলিপিন্সের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নোঙর করেছিল চিনের উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ সিসিজি ৫৯০১। সেই জাহাজটিকে খুঁজে বার করে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে ফিলিপিন্সের উপকূলরক্ষী বাহিনী।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৪ ০৮:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
ফিলিপিন্সের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নোঙর করেছিল চিনের উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ সিসিজি ৫৯০১। সেই জাহাজটিকে খুঁজে বার করে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে ফিলিপিন্সের উপকূলরক্ষী বাহিনী।
০২১৮
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনা জাহাজটি স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের সাবিনা শোলের কাছে নোঙর করেছিল। এর পরেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় নানা জল্পনা।
০৩১৮
প্রতিটি দেশের হাতেই নিজস্ব নৌবাহিনী এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ থাকে। উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজগুলি সাধারণত নৌবাহিনীর জাহাজগুলির থেকে আয়তনে ছোট হয়।
০৪১৮
কিন্তু সিসিজি ৫৯০১ তেমনটা নয়। চিনের উপকূলরক্ষী বাহিনীর ব্যাতিক্রমী ওই জাহাজ ‘মনস্টার’ বা দানব নামে পরিচিত। কেন এমন নাম?
০৫১৮
আকারে-আয়তনে চিনা উপকূলরক্ষী বাহিনীর ওই জাহাজ আর পাঁচটা দেশের সাধারণ উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজের মতো একেবারেই নয়। সিসিজি ৫৯০১ বিশ্বের বৃহত্তম উপকূলরক্ষা জাহাজ।
০৬১৮
আমেরিকাতেও সিসিজি ৫৯০১-র মতো উপকূলরক্ষী বাহিনীর এত বড় জাহাজ নেই। এমনকি, আমেরিকার অনেক নৌবাহিনীর জাহাজও এই চিনা জাহাজটির থেকে ছোট।
০৭১৮
সিসিজি ৫৯০১ একটি ৫৪১ ফুট লম্বা জাহাজ, যার স্থানচ্যুতি প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ কেজি। আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনীর সাধারণ জাহাজগুলির তুলনায় সেটি কমপক্ষে তিন গুণ বড়।
০৮১৮
আমেরিকার কয়েকটি নৌবাহিনীর জাহাজের তুলনায়ও বড় সিসিজি ৫৯০১। আমেরিকার নৌবাহিনীর আর্লেই বার্ক শ্রেণির জাহাজগুলির স্থানচ্যূতি ৯৭ লক্ষ কেজি। যা লম্বায় সিসিজি ৫৯০১-এর চেয়ে প্রায় ৩৫ ফুট ছোট।
০৯১৮
উল্লেখ্য, সিসিজি ৫৯০১ আক্রমণের ক্ষমতাও অন্য দেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী জাহাজের তুলনায় বেশি। এটিতে দু’টি ৭৬.২ মিলিমিটারের বন্দুক বসানো রয়েছে। অন্য দিকে, সমুদ্রে হামলার মুখে পড়লে, তা প্রতিরোধের জন্য আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনী জাহাজে মাত্র একটি ৫৭ মিলিমিটারের বন্দুক থাকে।
১০১৮
সেই ‘মনস্টার’ই ঢুকে পড়েছে ফিলিপিন্সের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আসলে কী?
১১১৮
এ ক্ষেত্রে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বলতে একটি দেশের সামুদ্রিক অঞ্চলের সেই অংশ বোঝায়, যেখানে জলের নীচে থাকা জীবিত এবং জড় সম্পদের উপর একচেটিয়া অধিকার থাকে ওই দেশের। তবে, অস্ত্র বহন করছে না এমন অন্য দেশের জাহাজের ওই অংশ দিয়ে অবাধে যাতায়াতের অনুমতি থাকে।
১২১৮
কিন্তু কেন দক্ষিণ চিন সাগরে ঘোরাফেরা করছে ‘মনস্টার’? দক্ষিণ চিন সাগরের অনেকখানি অংশকে নিজেদের সামুদ্রিক অঞ্চল বলে দাবি করে বেজিং। আবার ফিলিপিন্সের দাবি, ওই নির্দিষ্ট অংশ তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। আর তা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে বিতর্ক বহু দিনের।
১৩১৮
দক্ষিণ চিন সাগরের ওই অংশে ক্রমাগত চিনা আস্ফালনের মুখে পড়তে হয় ফিলিপিন্সকে। ফিলিপিন্সের মৎস্যজীবীদেরও ওই অঞ্চলে বিভিন্ন অর্থনীতি সংক্রান্ত কাজ করা থেকে বিরত রেখেছে চিন।
১৪১৮
অন্য দিকে, ফিলিপিন্সের তরফে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বলে দাবি করা ওই অংশে চিনা জাহাজ নোঙর করাকে চিনের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের একাংশ। অনেকে এটি চিনের চোখরাঙানি এবং আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইন লঙ্ঘন হিসাবেও দেখছেন।
১৫১৮
গত ১৭ জুনও দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত সেকেন্ড থমাস শোলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ফিলিপিন্স এবং চিনের নৌবাহিনী। ফিলিপিন্সের নৌবাহিনীর বেশ কয়েক জন সেনা আহত হন। চিনের উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ ক্রমাগত ফিলিপিন্সের উপকূলরক্ষী বাহিনীর বোটগুলিকে অন্য এক জাহাজে খাদ্য, আগ্নেয়াস্ত্র এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা থেকে বিরত রাখে । সেই ছবিও প্রকাশ্যে আসে। যদিও সেগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
১৬১৮
আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের একাংশের বিশ্বাস, আয়তনে ছোট প্রতিবেশীদের ভয় দেখিয়ে অনেক দিন ধরেই সেই দেশগুলির উপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে চিন। আর সে কারণেই, দক্ষিণ চিন সাগরের ওই অংশে মনস্টার নোঙর করেছিল বেজিং। অন্য একাংশের আবার অনুমান, সামরিক ক্ষমতার আস্ফালন দেখিয়ে দক্ষিণ চিন সাগরে যুদ্ধ বাধিয়ে ফেলতে পারে শি জিনপিংয়ের দেশ।
১৭১৮
বেজিং যে যখন-তখন যুদ্ধ বাধিয়ে ফেলতে পারে, তার ইঙ্গিত মিলেছে খোদ চিনের বিত্তবানদের থেকেই। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত কয়েক মাস ধরে চিনের অনেক বিত্তশালী ব্যবসায়ী সে দেশ ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিচ্ছেন। ধীরে ধীরে নিজেদের সম্পত্তি এবং ব্যবসাও নাকি চিন থেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা।
১৮১৮
আসন্ন যুদ্ধের কথা ভেবেই চিনের বিত্তশালীদের অনেকে এই পদক্ষেপ করছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।