Aindrila Sharma Death: Love Story of Assam couple Bitupan Tamuli and Prathana Bora will make everyone cry dgtl
Aindrila Sharma Death
সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার মতো প্রেম! প্রেমিকার মৃত্যুর পর সিঁদুর পরিয়ে কখনও বিয়ে না করার শপথ
রবিবার মৃত্যু হয়েছে টলি পাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার। আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাঁকে আটকে রাখতে পারলেন না প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী। একই ঘটনার সাক্ষী থাকল অসমও।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২২ ১৬:২৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
রবিবার মৃত্যু হয়েছে টলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার। আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাঁকে আটকে রাখতে পারলেন না প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী। মারণরোগের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন লড়াই করে রবিবার দুপুরে অজানার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। থেকে গিয়েছেন সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলার বাবা-মার মতো সব্যসাচীও শেষ পর্যন্ত তাঁর পাশে ছিলেন। ২৪ বছর বয়সি অভিনেত্রীর মৃত্যুতে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সেলেব মহল, এমনকি সাধারণ মানুষও গভীর ভাবে ব্যথিত। ঐন্দ্রিলার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে এবং সব্যসাচীকে ভাল থাকার পরামর্শ দিয়ে অনেকেই প্রার্থনা করেছেন। এই আবহেই প্রকাশ্যে এসেছে অন্য এক ভালবাসার গল্প। সব্যসাচীর মতো প্রেমিকাকে হারিয়েছেন আরও এক প্রেমিক। সেই কাহিনিও কম হৃদয়বিদারক নয়।
০২১৯
অসমের গুয়াহাটির বাসিন্দা বিটুপন তামুলী। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর প্রেম প্রার্থনা বোরার সঙ্গে।
০৩১৯
২৭ বছর বয়সি বিটুপনের বাড়ি অসমের মরিগাঁওয়ে। প্রার্থনার বয়স হয়েছিল ২৫। তিনি চাপারমুখের কসুয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
০৪১৯
সম্প্রতি প্রার্থনাকে হারিয়েছেন বিটুপন। তাঁকে ছেড়ে চিরতরে চলে গিয়েছেন প্রার্থনা।
০৫১৯
প্রার্থনা বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ হয়ে অসমের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
০৬১৯
অনেক দিন ধরেই প্রার্থনার চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসকদের কথা শুনে মেয়ের পরিণতি সম্পর্কে অবগত ছিলেন বাবা-মা। অবগত ছিলেন বিটুপনও।
০৭১৯
কিন্তু প্রার্থনার বাবা-মার মতোই এক মুহূর্তের জন্যও তাঁর পাশ ছেড়ে যাননি বিটুপন।
০৮১৯
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শুক্রবার অসুস্থতার কারণে হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে প্রার্থনার। সব্যসাচীর মতো পরিণতি পায়নি বিটুপনের ভালবাসাও।
০৯১৯
কিন্তু প্রার্থনার মৃত্যুর পর অসম শহর যা দেখল তাতে চোখ ফেটে জল বেরিয়ে এসেছে অনেকেরই।
১০১৯
প্রার্থনার মৃত্যুর পর তাঁর দেহের সামনে বসে হাউ হাউ করে কাঁদতে শুরু করেন বিটুপন। একটু সামলিয়ে দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে যান তিনি। কিছু ক্ষণ পরে ফিরে আসেন বিয়ের সরঞ্জাম নিয়ে।
১১১৯
সিঁদুর-মালা হাতে প্রার্থনার দেহের সামনে বসে পড়েন বিটুপন। কান্না থামিয়ে দৃঢ় মুখে প্রার্থনার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন তিনি। এর পর গালে সিঁদুর লাগিয়ে প্রার্থনার গলায় মালাও পরিয়ে দেন।
১২১৯
প্রার্থনার হাতে ছুঁইয়ে নিজেও একটা মালা পরে নেন বিটুপন। বিয়ের প্রাথমিক আচার -অনুষ্ঠান শেষ করে স্পষ্ট ভাষায় জোরে জোরে চিৎকার করে বলেন, ‘‘আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এই জন্মে আমি আর কাউকে বিয়ে করব না।’’
১৩১৯
এই কথা শুনে উপস্থিত সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিটুপন-প্রার্থনার এই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
১৪১৯
দুই পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে বিটুপন এবং প্রার্থনা দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করতেন। শীঘ্রই বিয়ের পরিকল্পনাও করেছিলেন তাঁরা।
১৫১৯
এই প্রসঙ্গে প্রার্থনার ভাই সুভন বোরা বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে প্রার্থনা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওকে গুয়াহাটির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। আমাদের সব রকম চেষ্টা করা সত্ত্বেও ওকে বাঁচাতে পারিনি। শুক্রবার রাতে ও মারা যায়।’’
১৬১৯
সুভন আরও বলেন, ‘‘প্রার্থনার মৃত্যুর পর বিটুপন জানায় যে, ও প্রার্থনাকেই বিয়ে করতে চায়। এই কথা শুনে আমরা বাক্রুদ্ধ হয়ে পড়ি। কারণ ও যেটা বলেছিল, তা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল। আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি যে, কেউ আমার বোনকে এত গভীর ভাবে ভালবাসতে পারে। আমরা ওকে থামানোর কথাও ভাবিনি।’’
১৭১৯
সুভন আরও জানান যে, প্রার্থনা মনেপ্রাণে বিটুপনকে বিয়ে করতে চাইত। বিটুপন তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণ করেন। যেমন এক সঙ্গে থাকতে চাইতেন ঐন্দ্রিলা এবং সব্যসাচীও। কিন্তু নিয়তির কারণে আজ তাঁরা দু’জনেই একা। কিন্তু দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, ভালবাসার মানুষ না থাকলেও সেই ভালবাসাকে তাঁরা বাঁচিয়ে রাখবেনই।
১৮১৯
ঐন্দ্রিলার ক্ষেত্রে অবিকল এই ঘটনা না ঘটলেও আবেগে ভেসে গিয়েছিলেন সব্যসাচী। দেহ চুল্লিতে ঢোকানোর আগে দেখা যায়, ঐন্দ্রিলার কপালে নিজহাতে চন্দন পরিয়ে দিচ্ছেন তাঁর লড়াইয়ের সব সময়ের সঙ্গী সব্যসাচী।
১৯১৯
সেই ভিডিয়ো মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, শায়িত রয়েছে ঐন্দ্রিলার দেহ। পাশে ঠায় বসে রয়েছেন সব্যসাচী। তার পর নিজে হাতে প্রিয়জনের কপালে চন্দন পরালেন অভিনেতা। ঐন্দ্রিলার দু’পা ছুঁয়ে চুম্বনও করতে দেখা গেল সব্যসাচীকে।